
রোজভ্যালি থেকে স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতি- সব ইস্যু তৃণমূল পরিচালিত সরকারের আমলেই হয়েছে। একথা মনে করিয়ে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর প্রশাসনকে আক্রমণ করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিভিন্ন দুর্নীতিতে তৃণমূলের যে যে নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তাঁদের নাম ধরে ধরে আক্রমণ তোপ দাগলেন তিনি।
তিনি বলেন, রোজভ্যালি চিটফান্ড, এসএসসি নিয়োগ, পুরসভায় নিয়োগ, গোরুপাচার, কয়লা কেলেঙ্কারি, পিএম আবাস-সব ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়েছে। আর তা এই সরকারের আমলেই। তারপরই অমিত শাহর প্রশ্ন, 'এই সরকারের আমলে এত দুর্নীতি হয়েছে যে সেই সবের কথা বলতে গেলে গোটা প্রেস কনফারেন্স শেষ হয়ে যাবে। আপনার মন্ত্রীর কাছ থেকে ২৭ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। সবাই জানে সেটা। এত বেশি টাকা উদ্ধার হয়েছে যে টাকা গোনার মেশিনই খারাপ হয়ে গেল।'
এরপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অমিত শাহর প্রশ্ন, 'বাংলার মতো গরিব রাজ্য়ে ২৭ কোটি, ২০ কোটি, ১৫ কোটি টাকা উদ্ধার হচ্ছে। এর দায়িত্ব নেবেন না মুখ্যমন্ত্রী? তাঁকে তো জবাব দিতেই হবে।'
এরপরই একের পর এক তৃণমূলের অভিযুক্ত নেতার নাম করেন তিনি। বলেন, 'পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, অনুব্রত মণ্ডল, জীবন কৃষ্ণ সাহা, মানিক ভট্টাচার্য, চন্দ্রনাথ সিনহা, পরেশ পাল, কুন্তল ঘোষরা জেলে গিয়েছেন। ফিরহাদ হাকিমও অভিযুক্ত। শোভন চট্টোপাধ্য়ায় অভিযুক্ত। তিন বছর জেল খেটেছেন কুণাল ঘোষ। এতজন কীভাবে দুর্নীতি করে? আপনি কেন এর দায়িত্ব নিচ্ছেন না? পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, বাংলার মানুষের সব টাকা খেয়ে নিচ্ছে তৃণমূলের নেতারা।'
পশ্চিমবঙ্গের মহিলারা নিরাপদ নন বলেও অভিযোগ করেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, 'মেয়েদের তো সন্ধে ৭ টার পর বাড়ি থেকে বেরোতে বারণ করা হচ্ছে। এটা তো ঠিক নয়। আমরা কি মুঘল যুগে বসবাস করছি? স্বাধীন ভারতে এসব চলবে না। চলতে পারে না। মেয়েদের সুরক্ষা দেওয়া যে কোনও সরকারের দায়িত্ব। তবে এই সরকার তা পালন করতে পারেনি। সন্দেশখালি, আরজিকর, দক্ষিণ কলকাতার ল কলেজের ঘটে যাওয়া ঘটনা তার প্রমাণ।'
রাজ্যে তুষ্টিকরণের রাজনীতি করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই অভিযোগও করেন অমিত শাহ। তাঁর দাবি, 'বাংলায় তুষ্টিকরণের রাজনীতি চলছে। এটা চলতে পারে না। আমি খেয়াল করছি মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় এখন মলম লাগানোর চেষ্টা করছেন। তবে হিন্দুদের মনে এত গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছে যে সেটা আর পারবেন না।'