
পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবনের ব্যাঘ্র প্রকল্পের জন্য ১১২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। পাশাপাশি গত পাঁচ বছরে হাতির জন্য ৩৪৪ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব। তিনি অভিযোগ করেছেন যে কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া এই টাকার অধিকাংশই ব্যবহার করা হয়নি। যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে পর্যটনে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবনে প্রজেক্ট এলিফ্যান্ট এবং ন্যাশনাল টাইগার কনজারভেশন অথরিটির একটি বৈঠক করেছেন মন্ত্রী। তারপর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ভূপেন্দ্র যাদব দাবি করেন, 'সুন্দরবনে বছরে ৯.৫ লাখ পর্যটক আসেন। তবে রণথম্ভোর টাইগার রিজার্ভে ১৮ থেকে ১৯ লক্ষ পর্যটক প্রতি বছর আসেন।'
এসবের পাশাপাশি এই দিন আসামের হোজাই জেলায় ট্রেনের ধাক্কায় হাতি মৃত্যু নিয়েও রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
সব রাজ্যকে হাতিদের চলাচল ট্র্যাক করতে বলা হয়েছে
হাতি মৃত্যুর পর থেকেই নড়চড়ে বসেছে সরকার। তাদের পক্ষ থেকে সব রাজ্যকে হাতিদের চলাচলের রাস্তাটা ট্র্যাক করতে বলা হয়েছে বলে জানালেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, 'রেলের কর্তৃপক্ষ এবং বন দফতরকে সমন্বয় করে কাজ করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি অসমের ঘটনায় চাওয়া হয়েছে রিপোর্ট।'
তাঁর মতে, এমন পরিস্থিতিতে ট্রেন চালক ও বনকর্মীদের মধ্যে সমন্বয় থাকা জরুরি। তাহলেই পরিস্থিতি দ্রুত সামলে নেওয়া যাবে।
এখানে মাথায় রাখতে হবে, অসমের হোজাই জেলাতে সাইরাং-নিউদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় শনিবার সাতটি হাতি মারা গেছে। পাঁচটি কোচ এবং ট্রেনের ইঞ্জিনও বেলাইন হয়ে গিয়েছে।
আর এমন পরিস্থিতিতে, একটি দল গঠন করা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। যেখানে রেলের DRM, DFO এবং স্থানীয় মানুষেরা রয়েছেন।
ভূপেন্দ্র যাদব জানিয়েছেন, দেশে ১১০০টি হাতি দুর্ঘটনা হটস্পট চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে নানা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরাবল্লি প্রসঙ্গেও খোলেন মুখ
আরাবল্লি নিয়ে সারা দেশেই ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। আর এমন পরিস্থিতিতে সেই বিষয়টা নিয়েও কথা বলেছেন ভূপেন্দ্র। তিনি বলেন, 'আরাবল্লি ১.৪৪ লক্ষ বর্গকিলোমিটার এলাকায় বিস্তৃত। তবে সেখানে মাত্র ০.১৯ শতাংশ জায়গাতেই খনি খোলা যাবে। বাকি পুরো অরাবল্লি সংরক্ষিত থাকবে।'
মন্ত্রী এ দিন জানান, সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে নিজের মতামত জানিয়েছেন। সেই নির্দেশের ইতিমধ্যেই বাস্তবায়ন করা হবে।
এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, আরাবল্লি পাহাড় এবং পর্বতমালার সংজ্ঞা ঠিক করার জন্য একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছিল। সেই কমিটি ২০ নভেম্বর ২০২৫ সেই সংজ্ঞা দেয়। সেখানে বলা হয়েছে যে, ১০০ মিটার বা তার বেশি উচ্চতার যে কোনও পাহাড়কে আরাবল্লির অংশ হিসাবে ধরা হবে। অন্যগুলোকে নয়। আর এই সংজ্ঞা নিয়েই শুরু হয়ে গিয়েছে বিতর্ক।