গোপালগঞ্জে হিংসা ও ৪ জনের মৃত্যুর ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২৫ জনকে গ্রেফতার করেছে মহম্মদ ইউনূসের প্রশাসন। বৃহস্পতিবার একথা জানান বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের উপদেষ্টা মহম্মদ জাহাঙ্গির আলম চৌধুরী। 'প্রথম আলো' এই খবর প্রকাশ করেছে। বুধবার বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল NCP-র মিছিল ও সমাবেশে হামলা হয়। পুলিশের উপর আক্রমণ করা হয়। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় গাড়ি। চলে ব্যাপক ভাঙচুর। তারপর থেকেই উত্তপ্ত গোপালগঞ্জ।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বুধবার রাত থেকেই গোপালগঞ্জে মোতায়েন করা হয় সেনাবাহিনী। জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। রয়েছে পুলিশ পিকেটও। মহম্মদ জাহাঙ্গির আলম চৌধুরী জানান, আরও যারা এই ঘটনার তাণ্ডবলীলার সঙ্গে যুক্ত তাদের গ্রেফতার করা হবে। সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। অভিযান চলছে।
বাংলাদেশ প্রশাসনের দাবি, এই ঘটনায় ১০ জন পুলিশকর্মী গুরুতরভাবে জখম হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে রাজারবাঘ ও পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়াও প্রায় ৫০ জন মতো সাধারণ নাগরিক জখম হয়েছেন। তাঁদের অনেকেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বাংলাদেশের আর এক সংবাদপত্র 'ঢাকা ট্রিবিউন' জানিয়েছে, বুধবার রাত থেকে ২২ ঘণ্টার কারফিউ জারি ছিল। তবে এলাকায় শান্তি বজায় রাখার জন্য বৃহস্পতিবার তা ফের বাড়ানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিবৃতি অনুসারে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ১১টা পর্যন্ত কারফিউ থাকবে। তারপর দুপুর ২টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারফিউ কার্যকর থাকবে। অনেকে অনুমান করছেন, জুম্মাবার হওয়ায় শুক্রবার ৩ ঘণ্টার জন্য কারফিউ শিথিল করা হয়েছে। যদিও সরকারিভাবে কারণ ব্যাখ্যা করা হয়নি।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশ, এখনও গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক নয়। বৃহস্পতিবার এলাকা ছিল থমথমে। সেভাবে রাস্তাঘাটে লোকজন দেখা যায়নি। সেনার গাড়ি টহল দিয়েছে। যে কোনও মুহূর্তে নতুন করে উত্তেজনা ছড়াতে পারে। সেজন্য প্রশাসন কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না।
এদিকে গোপালগঞ্জের ঘটনা নিয়ে সেনাবাহিনীর বিবৃতি সামনে এনেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর। তাদের তরফে জানানো হয়েছে, বুধবার সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করেও হামলা চালানো হয়। দুষ্কৃতীদের বারবার বারণ করা সত্ত্বেও না শোনায় বলপ্রয়োগ করা হয়। সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে। সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব এবং প্রশাসনের অন্য সংস্থাগুলো সমন্বয় রেখে কাজ করে চলেছে।
সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের তরফে বাংলাদেশের নাগরিকদের কাছে, গুজবে কান না দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। গুজব ছড়ালে কঠোর শাস্তির নিদানও দিয়েছে ইউনূস সরকার।