
বাংলাদেশে ভারতের প্রতি বিদ্বেষ কোন জায়গায় পৌঁছেছে, এবার তার আরও একটি নজির সামনে এল। এর আগে বাংলাদেশের কয়েকজন প্রাক্তন সেনাকর্মী দাবি করেছিল, তারা নাকি কলকাতা দখল করে নেবে। এবার বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনাকর্তা আব্দুল্লাহিল আমান আজমি বলল, 'ভারত যতদিন না ভেঙে টুকরো টুকরো হচ্ছে, একেবারে কেয়ামত পর্যন্ত, ততদিন বাংলাদেশের শান্তি নেই।' যে বাংলাদেশ ভারতের সাহায্য ছাড়া তৈরি হত না, সেই বাংলাদেশেরই প্রাক্তন সেনাকর্তার ভারত বিদ্বেষ অকৃতজ্ঞতার সব সীমা ছাড়াল।
রাজাকার বাহিনীর প্রধান ছিল আজমির বাবা
অবশ্য এই আজমি লোকটি বাংলাদেশের রাজাকারের বংশধর। তার বাবা প্রাক্তন জামাত ই ইসলামি প্রধান গোলাম আজম। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় ধর্ষণ, ডাকাতি, খুনের অন্যতম অপরাধী সেই গোলাম আজম। সুতরাং বাবার রক্তই তো ছেলের শরীরে বইছে। ফলে অকৃতজ্ঞতা ও পাকিস্তান প্রেম স্পষ্টতই। একটি অনলাইন আলোচনা সভায় আজমির বক্তব্য ভাইরাল হয়ে গিয়েছে।
ভারতকে টুকরো টুকরো করার ইচ্ছে
তাঁর কথায়, 'ভারত ভেঙে না গেলে বাংলাদেশে পূর্ণ শান্তি আসবে না। ভারত সবসময় এই দেশে অস্থিরতা জিইয়ে রাখে।মুজিব সরকারের সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) তৈরি হয়। এর সশস্ত্র শাখা শান্তিবাহিনীকে ভারত সমর্থন দেয়। এই সমর্থনের ফলেই ২১ বছর পাহাড়ে রক্তপাত চলে।' তাঁর আরও দাবি, ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত চট্টগ্রাম হিল ট্র্যাক্টসে (সিএইচটি) যে সশস্ত্র লড়াই চলেছিল, সেখানে ভারত নাকি প্রশিক্ষণ, অস্ত্র ও আশ্রয় দিয়ে ভূমিকা নিয়েছিল।
আব্দুল্লাহিল আমান আজমি ভারতে বড় হামলার ছকও কষেছিল
হাসিনা আমলে এই আজমিকে আটক করে গুম ঘরে রাখা হয়েছিল বলে শোনা যায়। যদিও বাংলাদেশেরই একাংশ জানায়, কোনও ঘুম ঘরে ছিল না, বরং তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারাতে বহাল তবিয়তে দিন কাটিয়েছিল। বস্তুত, হাসিনা সরকারের পতনের পরে জামাত ই ইসলামির স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। এমনকী চলতি বছরের অগাস্টে শোনা যায়, এই আব্দুল্লাহিল আমান আজমি ভারতে বড় হামলার ছকও কষেছিল। পাকিস্তানের জঙ্গিদের হাত মিলিয়ে ভারতে জঙ্গি হামলার নেতৃত্ব দেওয়ার চেষ্টা করে বাংলাদেশের এই অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল।
যুদ্ধাপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে মৃত একাত্তরের রাজাকার বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা গোলাম আজমের ছেলে আব্দুল্লাহিল আমান আজমিকে ডিবি পুলিশ আটক করেছিল ২০২১ সালে। ২০০৯ সালে আজমিকে সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের নিয়ে নানা কুমন্তব্য বরাবরই করে থাকে আজমি।