প্রথমে আটক, তারপর গ্রেফতার। কী হতে চলেছে ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রীর ভবিষ্যত? তাই নিয়েই এখন সরগরম গোটা বাংলাদেশ। পরীমনির বাড়িতে মিলেছে প্রচুর মাদক। তারপরেই তাঁকে গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত নেয় ব়্যাব। এদিকে এই ঘটনা আরও চমকপ্রদ মোড় নিয়েছে। ব়্যাবের জালে গ্রেফতার হয়েছেন চলচিত্র প্রযোজক তথা অভিনেতা নজরুল ইসলাম রাজ। বুধবার রাতেই ঢাকার গুলশান এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। নজরুলের মোবাইল ফোনে অসংখ্য তরুণীর পর্ন ভিডিও পাওয়া গিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
পরীমনির গফফাডার
ঢালিউডে পরীমনির গফফাদার হিসাবে পরিচিত নজরুল ইসলাম রাজ। খালি পরীমনি নয়, কয়েক দিন আগে ঢাকায় মাদক-সহ গ্রেফতার মডেল পিয়াসারও গডফাদার এই রাজ। রাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার নজরুল ইসলামকে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ব়্যাব-এর সদর দফতরে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। জিজ্ঞাসাবাদ চলে পরীমনিরও। দু'জনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করা হবে বলে জানিয়েছে র্যাব। র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) কর্নেল কে এম আজাদ জানিয়েছেন, পরীমনি ও নজরুল রাজের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হবে। এ ছাড়া নথিপত্র যাচাই–বাছাই করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেও মামলা হতে পারে।
র্যাব বলছে, পরীমনির বিরুদ্ধে বাড়িতে মাদকদ্রব্য থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। নজরুল রাজের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি মাদকের আসর বসিয়ে সেখানে আসা বিত্তবান ব্যবসায়ী ও উচ্চবিত্তদের ভিডিও করে ব্ল্যাকমেইল করতেন । এভাবে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করতেন। পরীমনি ২০১৬ সাল থেকে (পাঁচ বছর) মাদক সেবন করতেন। ভয়ঙ্কর মাদক এলএসডি ও আইসও সেবন করতেন নায়িকা। চলচ্চিত্র প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজ পরীমনির বাসায় এসব মাদক সরবরাহ করতেন।
কে এই রাজ?
গ্রেফতারের পর রাজের মোবাইল ফোনে অসংখ্য তরুণীর পর্ন ভিডিও পাওয়া গেছে। র্যাব বলছে, পরীমনির গডফাদার হিসাবে পরিচিত নজরুল রাজ একেক সময় একেক পরিচয়ে চলাফেরা করেন। কখনও চিত্রপরিচালক, কখনও ব্যবসায়ী আবার কখনও রাজনীতিবিদ। প্রতারণার মাধ্যমে তিনি অঢেল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। পরীমনিকে গ্ল্যামার জগতে নিয়ে আসেন রাজ। জানা যায় সিনেমায় নাম লেখানোর আগে দীর্ঘদিন তার কাছেই থাকতেন পরী। আওয়ামি লিগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর নজরুল প্রতিপত্তি আরও বাড়ে। নিজের জেলায় একাধিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও গড়ে তোলেন। এমনকি তার নিজস্ব ৫ তারা হোটেল নির্মাণের কাজ চলছে। এছাড়া ঠিকাদারি ব্যবসা রয়েছে রাজের। ইতিমধ্যে নজরুলের বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সন্ধান পাওয়া গেছে।
কীভাবে চলত পর্ন ব্যবসা
নজরুল তার প্রতারণা ও পর্ন ব্যবসায় দুই তরুণীকে ব্যবহার করতেন। এদের একজনের ডাক নাম সেমি এবং অপরজন কাঁকন। দু'জনই তার সবসময়ের সঙ্গী। এ দুই তরুণীকে দিয়ে তিনি ব্ল্যাকমেইলের কাজ করতেন। পাশ্চাত্য পোশাকে অভ্যস্ত সেমি এবং কাঁকনকে নিয়ে হাজির হতেন সরকারি কর্মকর্তাদের ফ্ল্যাটে অথবা বাড়িতে। অনেকেই তাদের প্রেমে পড়ে যেতেন। যে কোনো মূল্যে তাদের সান্নিধ্য পেতে চাইতেন। এমন দুর্বলতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে টোপ ফেলতেন নজরুল। এছাড়া এই দুই তরুণীকে ব্যবহার করে তিনি ক্যাসিনো সম্রাট ইসমাইল চৌধুরীর কাছাকাছি পৌঁছে যান। ঠিকাদারি কাজের ডন হিসাবে পরিচিত জিকে শামীমের সঙ্গেও তার সখ্য গড়ে ওঠে।