বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতন হয়েছে। দেশ ছেড়ে পালিয়ে এসে ভারতে রয়েছেন হাসিনা। তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ দয় মনে করছেন, বাংলাদেশে এই আশান্তির মূলে রয়েছে বাইরের কোনও শক্তি। তাঁর ইঙ্গিত, বাংলাদশের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য আমেরিকা হয়তো দায়ি। তারাই গেমপ্ল্যান বানিয়েছে। বাংলাদেশের এই অবস্থার জন্য পাকিস্তানার হাত থাকতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন হাসিনা-পুত্র।
aajtak-কে সজীব ওয়াজেদ বলেন, 'আমি বলতে পারব না কে এই কাজ করেছে। তবে আমরা সন্দেহ করছি যে এর পিছনে পাকিস্তান বা আমেরিকা থাকতে পারে। কে জানে... পাকিস্তানের এটা করার পিছনে উদ্দেশ্য থাকতেই পারে। তারা চায় না বাংলাদেশে স্থায়ী ও শক্তিশালী সরকার থাকুক। আমেরিকা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনার ছেলে আরও বলেন, 'আমেরিকাও শক্তিশালী সরকার চায় না, বাংলাদেশে দুর্বল সরকার চায়। বাইডেনের দেশ এমন একটি সরকার চায় যাকে তারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। পাকিস্তানের ক্ষমতা নেই হাসিনাকে নিয়ন্ত্রণ করার। তাই হয়তো এটা করেছে।'
পররাষ্ট্র বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের এই অবস্থার নেপথ্যে রয়েছে বাহ্যিক শক্তির হাত। কারণ আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল কোটা সংস্কার নিয়ে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মান্যতাও পায় ছাত্রদের দাবি। তারপরও এত বড় আন্দোলন, এত হিংসা কীভাবে ছড়াল তা নিয়ে রীতিমতো চর্চা শুরু হয়েছে।
পররাষ্ট্র বিশ্লেষক ব্রহ্মা চেলানি এই নিয়ে একটি নিবন্ধও লিখেছেন। তাঁর অনুমান, বাংলাদেশের পরিস্থিতির পিছনে আমেরিকা থাকতে পারে। সোশ্যাল মিডিয়া সাইট এক্স-এ তাঁর নিবন্ধ শেয়ার করে তিনি মন্তব্য করেছেন, 'একটি ধর্মনিরপেক্ষ সরকারের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন হাসিনা। তিনি কট্টরপন্থীদের ঘৃণা করতেন। বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করছিলেন। কিন্তু বহিরাগত শক্তি তাঁর বিরুদ্ধে দাঁড়ায়। তিস্তা প্রকল্প ভারতকে দেওয়ায় হাসিনার সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ চিন। মনে হয়, বাই়ডেনও হাসিনাকে পছন্দ করতেন না।'
এদিকে আমেরিকা বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে। সোমবার শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বাংলাদেশে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ঘোষণা করেন। এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে আমেরিকা বলেছে, যে কোনও পরিবর্তন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও আইনের শাসনের ভিত্তিতে হওয়া উচিত। বাংলাদেশের জনগণ তাদের নিজস্ব সরকার নির্বাচন করবে। আমেরিকার বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, 'আমরা দেখছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে বাংলাদেশ ছেড়েছেন। আমরা সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। আমেরিকা বাংলাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।'