শেখ হাসিনার আমলের ১৫ জন সামরিক কর্তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে বাংলাদেশ সেনা। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালকে জানাল সেনা। আদালতের প্রধান প্রসিকিউটর রবিবার ১৫ জন সামরিক কর্মকর্তাকে অবিলম্বে আদালতে হাজির করার দাবি জানান। তারপরই সেনা এই তথ্য দেয়।
যদিও প্রধান প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদেকর জানান, যদি ১৫ জন সেনাকর্তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়ে থাকে তাহলে তাঁদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে পেশ করতে হবে। এটাই নিয়ম।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এক জেনারেল মেজর মোহাম্মদ হাকিমুজ্জামান জানান, ১৬ জনকে হেফাজতে নেওয়ার কথা ছিল। তবে ১৫ জন রয়েছেন।
বাংলাদেশের একাধিক সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ষোলোতম অফিসার ছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। তিনি একজন মেজর জেনারেল। তবে তাঁকে ধরা যায়নি। কারণ, তিনি দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছেন। তাঁকে আটকানোর চেষ্টা হয়েছিল।
জানা যায়, ১৬ জন অফিসারের মধ্যে দুইজন মেজর জেনারেল, ছয়জন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এবং বেশ কয়েকজন কর্নেল এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল।
এদিকে বাংলাদেশ সেনার তরফে যখন নিজেদের আধিকারিকদের হেফাজতে নেওয়া হচ্ছে ঠিক তখনই দেশজুড়ে বিশেষ করে এই সংক্রান্ত একটি বিতর্কও দানা বেঁধেছে ৷ অনেকের দাবি, সেনা জওয়ানদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট আদালত আছে ৷ সেখানে বিচারের ব্যবস্থা না করে অসামারিক আদালতে সেই প্রক্রিয়া করা হচ্ছে কেন?
২০২৪ সালের জুলাই মাসে আওয়ামি লিগ পরিচালিত সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলাকালীন নৃশংসতার অভিযোগে হাসিনা, প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং প্রাক্তন পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় চূড়ান্ত যুক্তিতর্ক শুনানি শুরু করেছে আইসিটি-বিডি। তাতেই অভিযুক্ত হন একাধিক সেনাকর্তা। সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে হত্যার অভিযোগ ওঠে তাদের বিরুদ্ধে। সেই বছরের অগাস্ট মাসের পর থেকে সেদেশের অন্তর্বতী সরকারের প্রধান রয়েছেন মহম্মদ ইউনূস। তাঁর আমলেই হাসিনা ও তাঁর সরকারের একাধিক নেতা-মন্ত্রী এমনকী সেনার আধিকারিকদের একাংশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে শুরু করে নয়া সরকার।
এদিকে বাংলাদেশে এই সেনা আধিকারিকদের গ্রেফতারের জেরে অশান্তির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। কারণ, অভিযুক্তরা সবাই কর্মরত। তাদের বিরুদ্ধে এতদিন পরে কেন পদক্ষেপ করা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। আওয়ামি লিগ বিরোধী দল বিএনপি সেনার এই পদক্ষেপকে সমর্থন করলেও হাসিনার দল করেনি। এই সেনা কর্তাদের গ্রেফতারের জেরে সেই দেশে ফের হিংসা দানা বাঁধবে না তো? প্রশ্ন অনেকের।