Dhaka Students Clashes: বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার সচিবালয়ের কাছে রবিবার (২৫ অগাস্ট) রাতে ছাত্র ও আনসার সদস্যদের মধ্যে সহিংস সংঘর্ষ হয়। দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়, সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অনেকেই আহত হয়েছেন। রাত ৯টার দিকে সংঘর্ষ শুরু হয়, এতে উভয় পক্ষ একে অপরকে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু করে। পরিস্থিতির অবনতি দেখে পুলিশ শক্তি প্রয়োগ করে তা নিয়ন্ত্রণ করে। রবিবার রাতে নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি সত্ত্বেও, ছাত্র এবং আনসার সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষ চলতে থাকে, কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দও শোনা যায়, যা আতঙ্ক সৃষ্টি করে। ভিড় ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ গ্রেনেডও ব্যবহার করে। এদিকে রবিবারই ছাত্রলীগের এক নেতার মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। ভারতে পালানোর সময় তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
দ্য ডেইলি স্টার জানিয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীরা আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে সচিবালয়ের দিকে মিছিল করে রাজু স্মৃতি ভাস্কর্যে জড়ো হতে শুরু করে। ছাত্ররা আনসার সদস্যদের 'স্বৈরাচারের দালাল' বলে আখ্যা দিচ্ছিল। এই পুরো ঘটনার অনেক ভিডিওও সামনে এসেছে, যাতে ভিড়কে ছত্রভঙ্গ হতে দেখা যায়। জনতার ওপর হামলাও হচ্ছে, এমন কিছু ভিডিওও সামনে এসেছে, যাতে মানুষ আহত হয়।
ঢাকায় তোলপাড়ের কারণ কী?
আসলে ঢাকায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আনসার সদস্যদের বিরোধের কারণ ছিল 'ছাত্র বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন'-এর সদস্যরা। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ও 'স্টুডেন্ট অ্যাগেইনস্ট ডিসক্রিমিনেশন মুভমেন্ট'-এর সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামকে আনসার সদস্যরা আটক করছিল। তার সঙ্গে অন্য সমন্বয়কারী সরজিশ আলম, হাসনাত আবদুল্লাহসহ অন্যদেরও সচিবালয়ে আটক করা হয়। আনসার সদস্যদের এই কর্মকাণ্ডে শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
ছাত্র বিক্ষোভ সমন্বয়কারী হাসনাত আবদুল্লাহ একটি ফেসবুক পোস্টে আন্দোলনরত আনসার সদস্যদের দাবি পূরণের পরও সচিবালয় অব্যাহত অবরোধের জন্য আনসারের প্রাক্তন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম আমিনুল হককে দায়ী করেছেন। হাসনাত সবাইকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু স্মৃতি ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হওয়ার আহ্বান জানান।
আনসার সদস্যরা চাকরি জাতীয়করণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন
হাসনাত আবদুল্লাহ তার ফেসবুক পেজে লিখেছেন, "সবাই রাজুর কাছে আসুন। স্বৈরাচারী বাহিনী আনসার বাহিনীর মাধ্যমে ফিরে আসার চেষ্টা করছে। তাদের দাবি পূরণের পরও আমাদের সচিবালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।" আগের দিন, অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর আশ্বাস পেয়ে আনসার সদস্যরা তাদের বিক্ষোভ শেষ করে। চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে দুই দিন ধরে আন্দোলন করছিলেন আনসার সদস্যরা। রবিবার আন্দোলনরত আনসার সদস্যরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে সচিবালয়ের ৩ নং গেট খুলে দিলে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছেড়ে দেওয়া হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাসহ সরকারি কর্মকর্তারা কিছুক্ষণ পরেই এলাকা ত্যাগ করতে শুরু করেন।
প্রসঙ্গত, আনসার বাহিনী ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৬ জুন ১৯৪৮ সালে কাজ শুরু করে। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময়, আনসারদের বাংলাদেশে (পূর্ব পাকিস্তানের) সীমান্ত চৌকিতে মোতায়েন করা হয়েছিল। সংবিধানের ১৫২ অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী আনসার বাহিনী একটি সংগঠিত বাহিনী।
ছাত্রলীগের নেতার মৃত্যু
এদিকে বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতেনর পর আওয়ামী লীগের নেতাদের অবস্থা ক্রমেই সঙ্গীন হচ্ছে। রবিবার একটি সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দলের ছাত্র সংগঠনের এক নেতা ভারতে পালানোর সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। ঢাকা ট্রিবিউন পত্রিকা জানিয়েছে, শনিবার সকালে ছাত্রলীগের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না মারা গেছেন। খবরে বলা হয়, পান্নার ভাইপো চিরপাড়া সাতোরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কাউখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লাইকুজ্জামান তালুকদার মিন্টু জানান, তার কাকা মেঘালয়ের শিলংয়ের একটি পাহাড় থেকে পিছলে হৃদরোগে আক্রান্ত হন।