চট্টগ্রামে উদ্ধার হল বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনাপ্রধানের দেহ। সোমবার চট্টগ্রাম ক্লাবের একটি ঘরে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় ৭৭ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মহম্মদ হারুন-আর-রশিদকে। তাঁর মৃত্যুর খবর জানিয়েছে, ডেস্টিনি গ্রুপ। এই গ্রুপেরই সভাপতি পদে ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত এই লেফটেন্যান্ট জেনারেল। ২০২৪ সালে ৫ অগাস্টই গণঅভ্যুত্থানে উত্তাল বাংলাদেশ ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন শেখ হাসিনা। চলে এসেছিলেন ভারতে। পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে। বদলে গিয়েছিল বাংলাদেশের রাজনীতির প্রেক্ষাপট। সেই ঘটনার বর্ষপূর্তির দিন প্রাক্তন সেনাপ্রধানের রহস্যমৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।
ঢাকা ট্রিবিউন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত রবিবার ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে একটি মামলার শুনানিতে উপস্থিত থাকতে পৌঁছেছিলেন প্রাক্তন এই সেনাপ্রধান। ডেস্টিনি ক্লাবের এক আধিকারিক বলেন, 'নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও উনি মামলার শুনানিতে উপস্থিত হননি। ফোনের উত্তরও দিচ্ছিলেন না। তারপরই ক্লাবের লোকজন তাঁর হোটেল রুমে যান। সেখানে তাঁকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।' দেহ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম কম্বাইনড মিলিটারি হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেই দেহের ময়নাতদন্ত হওয়ার কথা। এখনও পর্যন্ত মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যায়নি। তবে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ব্রেন হ্যামারেজ থেকেই মৃত্যু হয়েছে প্রাক্তন সেনাপ্রধানের।
২০০০ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের সেনাপ্রধান পদে ছিলেন এই হারুন-আর-রশিদ। ডেস্টিনি গ্রুপের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগে চট্টগ্রামে মামলা চলছিল। সভাপতি পদে থাকায় সেই মামলার শুনানিতে উপস্থিত থাকার জন্য ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে পৌঁছেছিলেন তিনি।
উল্লেখ্য, ঠিক এক বছর আগে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করেছিলেন। ঠিক দিন তিনেকেই দেশটির অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা পদে বসেন মহম্মদ ইউনূস। দেশবাসীকে সংস্কার ও জাতীয় নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দেন। কেটে গিয়েছে একটা বছর। বাংলাদেশ এখনও অশান্ত, রক্তাক্ত। সংখ্যালঘু বিশেষ করে হিন্দুদের উপর অত্যাচার, নির্যাতন চলছেই। শান্তি তো দূর, জাতীয় নির্বাচন কবে হবে, তাও কেউ জানে না। বাংলাদেশে সরকার-বিরোধী সেই আন্দোলনে কত প্রাণ যে ঝরেছে, তার কোনও হিসেব নেই। কোটি কোটি টাকার সরকারি সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে। থানা, সরকারি অফিস আগুনে জ্বলে পুড়ে ছাই হয়েছে।