বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি, হিন্দুদের ওপরে অত্যাচার নিয়ে বিবৃতি দিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চিন্ময় দাস প্রভুর গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়েছেন। অবিলম্বে তাঁর মুক্তির দাবি জানিয়েছেন। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। একই সঙ্গে ইউনূস সরকার সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ বলে দাবি করেছেন হাসিনা। এছাড়াও চট্টগ্রামে আইনজীবীকে হত্যারও নিন্দা করেছেন। ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ আওয়ামি লিগের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে শেখ হাসিনার বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। বিবৃতিতে হাসিনা বলেছেন, 'চট্টগ্রামে একজন আইনজীবীকে হত্যা করা হয়েছে, এই হত্যার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরকে খুঁজে বের করে দ্রুত শাস্তি দিতে হবে। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। একজন আইনজীবী তার পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়েছিল, আর তাকে এভাবে যারা পিটিয়ে হত্যা করেছে তারা সন্ত্রাসী। তারা যেই হোক না কেন শাস্তি তাদের পেতেই হবে। অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলকারী ইউনূস সরকার যদি এই সন্ত্রাসীদের শাস্তি দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে তাকেও শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। দেশবাসীর প্রতি আমি আহবান জানাচ্ছি, এই ধরনের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ান। সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি। বর্তমান ক্ষমতা দখলকারীরা সর্বক্ষেত্রেই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে চলেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ, মানুষের জীবনের নিরাপত্তা দিতেও ব্যর্থ। সাধারণ মানুষের উপরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এইসব নির্যাতনের তীব্র নিন্দা জানাই।ট
নাম না করে চিন্ময় দাসের গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়ে হাসিনা লিখেছেন, 'সনাতন ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের একজন শীর্ষ নেতাকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে, অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিতে হবে। চট্টগ্রামে মন্দির পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ইতিপূর্বে মসজিদ, মাজার, গির্জা, মঠ এবং আহমাদিয়া সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি আক্রমণ করে ভাঙচুর ও লুটপাট করে আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সকল সম্প্রদায়ের মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।'
এর পর নিজের দল আওয়ামি লিগের নেতাদের হত্যার প্রতিবাদ করেছেন হাসিনা। তিনি বলেছেন,'আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মী, ছাত্র-জনতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হত্যা করার পরে চলছে হামলা-মামলা ও গ্রেফতারের মাধ্যমে হয়রানি। আমি এসব নৈরাজ্যবাদী ক্রিয়াকলাপের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।' (হাসিনার পুরো বিবৃতি অসম্পাদিত)
এদিকে, বাংলাদেশে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির প্রতিবাদে কলকাতায় গর্জে উঠল সনাতনী সমাজ। বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদ এবং চিন্ময়ের নি:শর্ত মুক্তির দাবিতে কলকাতায় বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণের মিছিল ঘিরে তুলকালাম কাণ্ড ঘটল। বেকবাগানে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বাধে বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সদস্যদের। পুলিশের ব্যারিকেড মিছিল আটকালেই উত্তেজনা ছড়ায়। এক জন পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন বলে দাবি। অন্য দিকে, তাঁদের ২ সদস্য আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ মঞ্চ। এদিন শিয়ালদা থেকে কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনের দফতর পর্যন্ত মিছিল করে বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ মঞ্চ। মিছিল বাংলাদেশে ডেপুটি হাই কমিশনের দফতরের দিকে এগোতেই উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশের ব্যারিকেড মিছিল আটকালেই উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশের সঙ্গে বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সদস্যদের মধ্যে বচসা-ধস্তাধস্তি বাধে। পরে বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ মঞ্চের ৫ সদস্য কমিশনের দফতরে যান।