Advertisement

Bangladesh Hindu : ৩৩ থেকে ৮ শতাংশ, বাংলাদেশে ক্রমশ কমছে হিন্দুদের সংখ্যা

বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর আক্রমণের ঘটনার পর চর্চায় উঠে এসেছে সেই দেশের হিন্দুদের জনসংখ্যা ও তার পতনের হার। ব্রিটিশ আমলের পূর্ববঙ্গ, পাকিস্তান আমলের পূর্ব পাকিস্তান আর বর্তমান বাংলাদেশের জনসংখ্যার হিসাব পাওয়া যায় বিভিন্ন সময়ে হওয়া আদমশুমারিতে। এসব তথ্য বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বুরোতে রক্ষিত আছে। 

বাংলাদেশে কমছে হিন্দুদের সংখ্যা
সৌমেন কর্মকার
  • কলকাতা ও ঢাকা ,
  • 20 Oct 2021,
  • अपडेटेड 4:06 PM IST
  • হিন্দুদের উপর আক্রমণের ঘটনার পর চর্চায় বাংলাদেশের হিন্দু জনসংখ্যা
  • সেই দেশে জনসংখ্যা হু হু করে কমছে
  • সেজন্য বাংলাদেশের সরকারকেই দায়ি করছেন সংখ্যালঘুরা

বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর আক্রমণের ঘটনার পর চর্চায় উঠে এসেছে সেই দেশের হিন্দুদের জনসংখ্যা ও তার পতনের হার। ব্রিটিশ আমলের পূর্ববঙ্গ, পাকিস্তান আমলের পূর্ব পাকিস্তান আর বর্তমান বাংলাদেশের জনসংখ্যার হিসাব পাওয়া যায় বিভিন্ন সময়ে হওয়া আদমশুমারিতে। এসব তথ্য বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বুরোতে রক্ষিত আছে। 

বাংলাদেশের সংবিধান ও হিন্দু

সেই তথ্য থেকে কী জানা যায়, তার আগে দেখে নেব বাংলাদেশে হিন্দুদের ইতিহাস ও সেই দেশের সরকার বা সংবিধান হিন্দুদের কীভাবে দেখে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে পৃথক দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ। ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর সংবিধানে বাংলাদেশকে ধর্মনিরপেক্ষ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু, ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ নিজেকে ইসলামিক রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করে। 

বাংলাদেশে হিন্দুদের প্রতিবাদ

বাংলাদেশে হিন্দুদের পরিসংখ্যান 

২০১১ সালে বাংলাদেশে সর্বশেষ আদমশুমারি হয়। সেই পর্যন্ত তথ্য পাওয়া গিয়েছে। তবে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত আজতক বাংলাকে জানান, সরকারের তরফে তাঁদের আগের বছর জানানো হয়েছিল, বাংলাদেশে হিন্দুদের সংখ্যা বেড়েছে। তবে সেই পরিসংখ্যান বা কোনও সরকারি তথ্য এখনও তাঁরা হাতে পাননি।  

সাল      মুসলিম জনসংখ্যা (%)         হিন্দু জনসংখ্যা (%) 
১৯০১  ৬৬.১ ৩৩
১৯১১ ৬৭.২  ৩১.৫ 
১৯২১ ৬৮.১  ৩০.৬ 
১৯৩১ ৬৯.৫    ২৯.৪ 
১৯৪১ ৭০.৩ ২৮
১৯৫১ ৭৬.৯   ২২ 
১৯৬১ ৮০.৪  ১৮.৫ 
১৯৭৪ ৮৫.৪ ১৩.৫
১৯৮১  ৮৬.৭ ১২.১ 
১৯৯১   ৮৮.৩    ১০.৫
২০০১ ৮৯.৬   ০৯.৩ 
২০১১   ৯০.০

০৮.৫ 

উপরের পরিসংখ্যান থেকেই পরিষ্কার, সংযুক্ত ভারতের একটা অংশ অর্থাৎ বর্তমান বাংলাদেশে হিন্দু জনসংখ্যা ছিল ৩০ শতাংশেরও বেশি। কিন্তু, ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগ ও পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর সেই দেশে হিন্দুদের সংখ্যা ক্রমশ কমেছে। তার কারণ দেশভাগের সময় তৎকালীন পাকিস্তান ছেড়ে বিপুল সংখ্যক হিন্দু চলে এসেছিলেন ভারতে। আবার বাংলাদেশ ভাগ হওয়ার সময় ও সেদেশ ছেড়ে বাধ্য হয়েছিলেন অনেক হিন্দু। তারপর বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরও সেখানে অনেক হিন্দুকেই ধর্মান্তরিত করার অভিযোগ রয়েছে। 

Advertisement

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্তের অভিযোগ, এদেশে হিন্দুদের উপর দিনের পর দিন অত্যাচার হয়ে আসছে। সংখ্যালঘুদের এখানে কোনও মর্যাদা নেই। নেই বেঁচে থাকার নিরাপত্তাও। সেই কারণে হিন্দুদের সংখ্যা ক্রমশ কমছে। আর সম্প্রতি মন্দিরে হামলা বা হিন্দুদের বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার যে ঘটনা গোটা বিশ্ব দেখল সেটাই বাংলাদেশের আসল ছবি। মাঝে মাঝে এমন হয়ে থাকে।  

বাংলাদেশে হিন্দুরা পথে নেমেছেন

কীরকম সেই ছবি ? 

রানা দাশগুপ্ত বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানকে হত্যার পরই বাংলাদেশের নিজস্বতা নষ্ট হয়েছে। তাঁর কথায়, 'সেই সময় থেকেই বাংলাদেশে হিন্দু ও সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার বেড়েছে। কার্যত পাকিস্তানে পরিণত হয়েছে এই দেশ।এখন শুধু আফগানিস্তান হওয়া বাকি। বাংলাদেশে গত ৯ বছরে হিন্দুদের উপর ৩৬৭৯টি হামলা হয়েছে। এটা মানবাধিকার সংগঠনের পরিসংখ্যান কিন্তু আসলে এর থেকেও বেশি হামলা সংঘটিত হয়েছে। যেগুলো নথিভুক্ত হয়নি। প্রতিবছরই মন্দির ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের উপর আক্রমণ করছে মুসলিম মৌলবাদীরা।

শেখ হাসিনা সরকারের ভূমিকা 

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের রানা দাশগুপ্তের কথায়, 'খালিদা জিয়া সরকার প্রকাশ্যে ধর্মান্ধদের সমর্থন করত, আর এই সরকার রাজনীতির প্রয়োজনে, ভোট ব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখে চলে। আমি এখনই বলতে চাই না যে, খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনা মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। তবে এই সরকারকে প্রমাণ দিতে হবে যে তারা সংখ্যালঘুদের পাশে আছে।' 

শেখ হাসিনার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন হিন্দুদের

হাসিনার উপর বিশ্বাস আছে, সরকারের উপর নেই 

রানা দাশগুপ্তের কথায়, 'বাংলাদেশে হিন্দুদের সংখ্যা কমছে। তাদের উপর অত্যাচার হচ্ছে, এর প্রধান কারণ, সরকারের উদাসীনতা। আমার তো মনে হয় এভাবে চলতে থাকলে বাংলাদেশ থেকে হিন্দু নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে। একথা এই কারণেই বলছি, আওয়ামি লিগ ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশকে ফের ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র ঘোষণা করতে পারত। সংবিধান সংশোধন করতে পারত। তবে করেনি। এর আগে হিন্দুদের উপর একাধিক হামলা হয়েছে। আওয়ামি লিগ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। হ্যাঁ, রাজাকারদের ফাঁসি তারা দিয়েছে। কিন্তু, দেশটার তৃণমূলস্তর কলুষিত হয়ে গেছে। সব জায়গায় হিন্দু-বিদ্বেষী ও ধর্মান্ধদের বসবাস। সেজন্য আওয়ামি লিগ বা দলের কোনও নেতাকে সংখ্যালঘুরা আর বিশ্বাস করে না। আমাদের এখনও বিশ্বাস টিকে আছে একমাত্র শেখ হাসিনার উপর। তিনি যদি কিছু করতে পারেন তবেই আমরা বাঁচব।' 

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement