মিডিয়া ও সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে শেখ হাসিনার সমস্ত 'বিদ্বেষপূর্ণ ভাষণ' প্রচার নিষিদ্ধ করার জন্য নির্দেশ দিল বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি)। ক্ষমতা থেকে উৎখাত ও ভারতে পালিয়ে আসার ৪ মাস পর সম্প্রতি বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলেছিলেন হাসিনা। তিনি দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের ওপর গণহত্যা, হিন্দু-সহ সংখ্যালঘুদের জীবন রক্ষা করতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগে তোলেন। বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) জানিয়েছে যে বিচারপতি মহম্মদ গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে দুই সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এখন নির্দেশ দিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে হাসিনার সমস্ত বিদ্বেষপূর্ণ ভাষণ মুছে ফেলার। এছাড়াও ভবিষ্যতেও সব ধরনের মাধ্যমে যাতে হাসিনার বক্তব্যের প্রচার বন্ধ থাকে সেটাও নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আবদুল্লা আল নোমান বলেন, 'ট্রাইব্যুনাল আইসিটি বিভাগ, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক এবং বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনকে (বিটিআরসি) নির্দেশ কার্যকর করতে বলেছে। প্রসিকিউশন এর আগে হাসিনার সমস্ত ঘৃণাত্মক ও উস্কানিমূলক বক্তৃতা সরিয়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিল, যা সাক্ষী বা ভুক্তভোগীদের ভয় দেখাতে পারে বা তদন্তকে বাধা দিতে পারে। প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম বলেন, 'শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দেওয়া বিশ্বের প্রতিটি আইনে এবং প্রতিটি দেশেই ফৌজদারি অপরাধ। শেখ হাসিনা বক্তৃতা দিয়েছেন, যেখানে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে যে তাঁর বিরুদ্ধে একই সংখ্যক মামলা হওয়ায় তিনি ২২৭ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়েছেন। এমনকি তাঁকে অত্যাচারিত লোকজন ও সাক্ষীদের হুমকি দিতেও শোনা গিয়েছে।'
আমেরিকার নিউইয়র্কে থাকা সমর্থকদের কাছে এক ভিডিও বার্তায় বর্তমানে ভারতে থাকা হাসিনা আরও দাবি করেছেন যে ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মতোই তাঁকে এবং তার বোন শেখ রেহানাকে হত্যা করার পরিকল্পনা ছিল। মহম্মদ ইউনূস 'ক্ষমতার জন্য ক্ষুধার্ত' বলেও অভিযোগ করেন হাসিনা। তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশ হিন্দু মন্দিরে হামলা চালানো হচ্ছে। বর্তমান সরকার পরিস্থিতি মোকাবিলায় সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে। ‘বিজয় দিবস’ উপলক্ষে রবিবার আয়োজিত অনুষ্ঠানে আওয়ামি লিগ সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখছিলেন হাসিনা। এটাই ছিল তাঁর প্রথম জনসমক্ষে ভাষণ।