বাংলাদেশ থেকে এরাজ্যে এসেছে পদ্মার ইলিশ। আজ থেকেই সেই মাছ পৌঁছে যাওয়ার কথা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন বাজারে। মনে করা হচ্ছে ভারতের বাজারে বাংলাদেশের ইলিশের দাম হতে পারে আকাশ ছোঁয়া। এদিকে বাংলাদেশের স্থানীয় বাজারেও ইলিশের দাম বেড়ে গেছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, সরবরাহ ঘাটতির কারণে এ বছর ইলিশের দাম আগে থেকেই বেশি ছিল। রফতানির সিদ্ধান্তের পর দাম আরও বেড়েছে। বিশেষ করে বড় ইলিশের ক্ষেত্রে দাম। ঢাকার বাজারে কয়েকদিন আগে ৭০০ গ্রামের ইলিশ প্রতি কেজি দেড় হাজার টাকায় বিক্রি হতো। এখন দাম বেড়ে এক হাজার ৬০০ থেকে এক হাজার ৭০০ টাকা হয়েছে। ৮০০ গ্রামের ইলিশ এক হাজার ৭০০ টাকা থেকে বেড়ে এক হাজার ৮০০ টাকা হয়ে গেছে।
দাম বেশি হওয়ায় বাংলাদেশের আমজনতার অনেকেই ইলিশ খেতে পারছেন না বলে স্বীকার করে নিয়েছেন সেদেশের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। আর এই আবহেই ফরিদপুরে সদরপুর উপজেলায় মাত্র ১০ টাকায় ইলিশ মাছ দেওয়ার ঘোষণা করেছিলেন রায়হান জামিল নামের এক ব্যক্তি। কিন্তু বিতরণের জন্য যে পরিমাণ মাছ তিনি এনেছিলেন, তার থেকে লোকসংখ্যা কয়েক গুণ বেশি হয়। সবাইকে মাছ দিতে না পেরে জনতার বিক্ষোভের মুখে কোনোরকমে এলাকা ছাড়েন তিনি। বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম প্রথম আলোয় এই খবর প্রকাশিত হয়েছে।
ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলা নিয়ে গঠিত ফরিদপুর ৪ আসনের একজন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে এলাকায় প্রচার চালাচ্ছিলেন রায়হান জামিল । এরই অংশ হিসেবে ‘জনগণের মন জয় করার জন্য’ তিনি ১০ টাকায় ইলিশ মাছ বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রায়হান জামিল ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী’ পরিচয় দিয়ে সপ্তাহখানেক আগে সদরপুরের বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার সাঁটান। তাতে তিনি লেখেন, ১০ টাকায় ইলিশ মাছ দেবেন। বিশ্ব জাকের মঞ্জিল উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এই ইলিশ দেওয়ার কথা। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শত শত মানুষ জাকের মঞ্জিল উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ভিড় জমান। বিতরণ শুরুর একপর্যায় মাছ ফুরিয়ে যায়। তখন মাছ নিতে না পারা লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে রায়হান জামিল পালিয়ে আত্মরক্ষা করেন। রায়হান জামিল ভাসানচর ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় পৌঁছালে ক্ষুব্ধ জনতা তাঁর গাড়ি আটক করে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় স্থানীয় কয়েকজনের সহায়তায় কোনোমতে তিনি সেখান থেকে প্রাণে রক্ষা পান।
ইলিশ নিতে আসা স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, তাঁদের বলা হয়েছিল, ১০ টাকায় ইলিশ দেওয়া হবে। সকাল থেকে দাঁড়িয়ে ছিলেন, কিন্তু মাছ পাননি। উল্টো ধাক্কাধাক্কি মারামারি লেগে যায়। পরে ‘প্রার্থী’ নিজেই পালিয়ে যান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রায়হান জামিল ৬০০টি ইলিশ নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু ইলিশ মাছ নেওয়ার জন্য দুই হাজারের বেশি মানুষ সেখানে আগে থেকে হাজির ছিলেন। ঢাকার ওই ব্যবসায়ী এই ঘটনায় ক্ষমা চেয়ে বলেছেন, সকলের সামর্থ নেই ইলিশ কিনে খাওয়ার। সেই কারণে তিনি ১০ টাকায় ইলিশ দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু হাজার হাজার মানুষ জড়ো হওয়ায়, এত ইলিশ দেওয়া সম্ভব হয়নি।