শেখ হাসিনার অনলাইন ভাষণের পর উত্তপ্ত বাংলাদেশ। জায়গায় জায়গায় চলেছে ভাঙচুর। এর মধ্যেই নয়াদিল্লিকেও হুঁশিয়ারি দিয়ে বসলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী নাহিদ ইসলাম। তাঁর মন্তব্য, 'ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে কোনও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালালে, তার দায়ভার ভারতকেই নিতে হবে'।
বুধবার বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান মিলনায়তনে 'সংবাদপত্রে জুলাই অভ্যুত্থান' শীর্ষক একটি বইয়ের উন্মোচন উপলক্ষে অনুষ্ঠানে নাহিদ বলেন,'শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছে ভারত। এর জন্য তাদের নিজস্ব ব্যাখ্যা রয়েছে। আমরা ভারতকে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে দিতে বলেছি। এটা কূটনৈতিক বিষয়। কিন্তু শেখ হাসিনা যদি সে দেশে থেকে রাজনীতি করার চেষ্টা করেন, ভারতে রাজনৈতিক সভা করেন, এর জন্য ভারত সরকারই দায়ী থাকবে'।
ধানমন্ডিতে মুজিবরের বাড়ি ভাঙচুর
বুধবার নেট মাধ্যমে হাসিনার ভার্চুয়াল ভাষণ সম্প্রচারিত হওয়ার পরেই বুধবার বিকেলে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িটি ভেঙে ফেলার ডাক দেন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য শরিফ ওসমান হাদি। সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ফেসবুক পোস্টে লেখেন,'আজ রাতে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমি মুক্ত হবে'। তারপরই বুলডোজার নিয়ে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ির দিকে অভিযান চালায় উন্মত্ত জনতা। চালানো হয় ভাঙচুর। পরে ধরিয়ে দেওয়া হয় আগুন।
শেখ হাসিনার ভাষণ
অগাস্টেও এই বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছিল স্বঘোষিত ছাত্ররা। বাবার বাড়ি ভাঙচুর প্রসঙ্গে হাসিনা ভাষণে বলেন,'ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি থেকে জাতির জনক (শেখ মুজিব) স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন। তাঁকে গ্রেফতার করে নিয়ে গিয়েছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই বাড়িটিতে লুটপাট চালিয়েছিল তারা। কিন্তু আগুনে পোড়ায়নি, ভাঙেওনি'। স্মৃতিকাতর হয়ে ওঠেন হাসিনা। তাঁর কথায়,'আমার মা অনেক কষ্ট করে এই বাড়ির প্রতিটি ইট নিজের হাতে গেঁথেছিলেন। অনেক দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা এই বাড়িতে এসেছিলেন। আজ এই বাড়িটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। কেন? বাড়িটির কী অপরাধ? এই বাড়িটিকে কেন এত ভয় পাচ্ছেন?'।
তাঁকে এবং তাঁর বোনকে হত্যা করার জন্য আন্দোলন শুরু করা হয়েছিল বলে দাবি করেন শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ দলের সমর্থকদের উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে শেখ হাসিনার মন্তব্য, বাংলাদেশে তাঁর বিরুদ্ধে যে আন্দোলন চলছে তা আসলে তাঁকে হত্যার চেষ্টা। মহম্মদ ইউনূস হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন। বাংলাদেশের জনগণের কাছে ন্যায়বিচার দাবি করেন। তাঁর আক্ষেপ,'আমি কি বাংলাদেশের জন্য কিছুই করেনি? কেন আমাকে এত অপমান করা হচ্ছে?'
তিনি যোগ করেন,'যদি আল্লাহ এই হামলার পরেও আমাকে জীবিত রাখেন, তাহলে কিছু কাজ করতে হবে। যদি এমনটা না হতো, তাহলে আমি এতবার মৃত্যুকে কীভাবে পরাজিত করতাম'?