আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধে বাংলাদেশে নির্বাচন হবে। দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এই ঘোষণা করেছেন। কিছুক্ষণ আগে বকরি ইদের প্রাক্কালে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি এই ঘোষণা করেন। তিনি আরও জানিয়েছেন যে নির্বাচন কমিশন আগামী মাসগুলিতে নির্বাচনের জন্য একটি বিস্তারিত রোডম্যাপ তৈরি করবে। বাংলাদেশের বিরোধী দল এবং অন্য রাজনৈতিক দলগুলি এই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দাবি জানিয়ে আসছিল। যদিও ইউনূস প্রশাসন এই বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্য়ে নির্বাচন করার কথা বলে আসছিল। যা নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলির সংঘাত তৈরি হয়।
জাতীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন বলেন, 'অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তিনটি মূল ম্যান্ডেট নিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেছে: সংস্কার, ন্যায়বিচার এবং নির্বাচন। আসন্ন নির্বাচন যাতে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু, প্রতিযোগিতামূলক এবং গ্রহণযোগ্য হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য সরকার সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পরামর্শ করেছে। আমাদের লক্ষ্য ছিল এমন একটি প্রক্রিয়া তৈরি করা যা বিদ্রোহের শহিদদের আত্মাকে সন্তুষ্ট করবে এবং এর অখণ্ডতার জন্য জাতি স্মরণ করবে।'
তিনি আরও বলেন, 'রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরি করতে পারে এমন ন্যায়বিচার এবং সংস্কারের কাঠামো চূড়ান্ত করার জন্য আগামী মাসগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে। ২০২৬ সালের এপ্রিলের তারিখটি বৈধ, অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে বিশ্বাসযোগ্য প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের মাধ্যমে জনসাধারণের আস্থা ফেরাতে ভারসাম্য বজায় রাখার লক্ষ্যে বেছে নেওয়া হয়েছে।'
ইউনূসের এই ঘোষণা নির্বাচনের সময় নিয়ে কয়েক মাসের জল্পনা এবং রাজনৈতিক বিবাদের অবসান ঘটাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, মুহাম্মদ ইউনূস এর আগে পরামর্শ দিয়েছিলেন যে সংস্কারের গতির উপর নির্ভর করে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে যে কোনও সময় নির্বাচন হতে পারে। যদিও, বিএনপি এবং তার মিত্র বিরোধী দলগুলি ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের জন্য চাপ দিচ্ছিল। যদিও অন্যদিকে নবগঠিত জাতীয় নাগরিক দল (এনসিপি) সংস্কার সম্পন্ন হওয়ার পরেই নির্বাচনের দাবি জানিয়েছিল। তবে মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন যে তিনি নির্বাচনের আগে সংস্কারের ধারাবাহিকতার দিকে নজর দিয়েছেন।