Advertisement

Bangladesh New Govt: প্রধান নোবেলজয়ী ইউনুস, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের তালিকা দিল আন্দোলনকারীরা

বাংলাদেশে গত কয়েক দিনের রাজনৈতিক অস্থিরতার পর এবার অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে নোবেল বিজয়ী মহম্মদ ইউনুসকেকে বেছে নেওয়া হয়েছে। দেশটির রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিনের সভাপতিত্বে বঙ্গভবনে (রাষ্ট্রপতি ভবন) এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে মহম্মদ ইউনূসের নাম প্রস্তাব করেছিলেন। কোটা আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ছাত্র নেতাদের পাশাপাশি তিন বাহিনীর প্রধানরাও বৈঠকে যোগ দেন। দারিদ্র্য মোকাবেলায় কাজের জন্য 'গরীবের ব্যাঙ্কার' হিসেবে পরিচিত মহম্মদ ইউনুস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রথম পছন্দ ছিলেন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. ইউনুস
Aajtak Bangla
  • ঢাকা,
  • 07 Aug 2024,
  • अपडेटेड 7:25 AM IST

বাংলাদেশে গত কয়েক দিনের রাজনৈতিক অস্থিরতার পর এবার অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে নোবেল বিজয়ী মহম্মদ ইউনুসকেকে বেছে নেওয়া হয়েছে। দেশটির রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিনের সভাপতিত্বে বঙ্গভবনে (রাষ্ট্রপতি ভবন) এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে মহম্মদ ইউনূসের নাম প্রস্তাব করেছিলেন। কোটা আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ছাত্র নেতাদের পাশাপাশি তিন বাহিনীর প্রধানরাও বৈঠকে যোগ দেন। দারিদ্র্য মোকাবেলায় কাজের জন্য 'গরীবের ব্যাঙ্কার' হিসেবে পরিচিত মহম্মদ ইউনুস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রথম পছন্দ ছিলেন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক তালিকা রাষ্ট্রপতির কাছে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নোবেলবিজয়ী অর্থনীতিবিদ মহম্মদ ইউনুসের  নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতিও এই প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছেন। তাঁকে প্রধান করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হবে। এই সরকারের একটি প্রাথমিক তালিকা দেওয়া হয়েছে। যেখানে নাগরিক সমাজসহ ছাত্র প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। খুবই দ্রুত সময়ের মধ্যে এই তালিকাটি নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত করা হবে। মঙ্গলবার রাতে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি ও তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিদের বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন নাহিদ। তিনি বলেন, ‘আমরা সমন্বয়কবৃন্দ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটি আমাদের সঙ্গে সম্মানিত শিক্ষক অধ্যাপক আসিফ নজরুল ও অধ্যাপক তানজীম উদ্দিন খান একত্রে বঙ্গভবনে এসেছিলাম। মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সেনাবাহিনী, নৌ বাহিনী ও বিমান বাহিনী প্রধানের সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের একটি ফলপ্রসু আলোচনা হয়েছে। ছাত্র ও নাগরিক অভ্যুত্থানকারীদের পক্ষ থেকে যে সরকারের প্রস্তাব করা হবে, সেই প্রস্তাবিত সরকারই চূড়ান্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হবে সেই নিশ্চয়তা আমরা বঙ্গভবন থেকে পেয়েছি।’

Advertisement

মহম্মদ ইউনুস কে?
মহম্মদ ইউনুস বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কট্টর প্রতিপক্ষ। শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশত্যাগের পেছনে এটিও অন্যতম প্রধান কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। 'গরীবের ব্যাঙ্কার' নামে পরিচিত, ইউনুস এবং তার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাঙ্ক ২০০৬ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করে। কারণ, তিনি গ্রামীণ গরীবদের জন্য ১০০ ডলারেরও কম ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান করে লক্ষ লক্ষ মানুষকে দারিদ্র্য থেকে মুক্তি  দিতে সাহায্য করেন। এই হতদরিদ্ররা বড় ব্যাঙ্ক থেকে কোনো সাহায্য পেতনা।

তার ঋণের মডেল বিশ্বজুড়ে এই ধরনের অনেক পরিকল্পনাকে অনুপ্রাণিত করেছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত দেশও রয়েছে। আমেরিকায় ইউনূস গ্রামীণ আমেরিকা নামে একটি পৃথক অলাভজনক সংস্থাও চালু করেন। ৮৪ বছর বয়সী ইউনুস সফল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে  রাজনীতিতে কেরিয়ার গড়ার প্রতি তার ঝোঁক বেড়ে যায়। ২০০৭ সালেও তিনি নিজের দল গঠনের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তার উচ্চাকাঙ্ক্ষা বড় আকার নিতে শুরু করলে শেখ হাসিনা ক্ষুব্ধ হন। ইউনুসকে 'গরীবের রক্ত ​​চুষে খাওয়ার' অভিযোগও করেন হাসিনা।

বাংলাদেশ এবং প্রতিবেশী ভারত সহ অন্যান্য দেশের সমালোচকরা আরও বলেন, ক্ষুদ্র ঋণদাতারা উচ্চ সুদ নেয় এবং দরিদ্রদের কাছ থেকে টাকা  আদায় করে। তবে ইউনুস বলেন, উন্নয়নশীল দেশের স্থানীয় সুদের হারের তুলনায় এই হার অনেক কম। ২০১১ সালে হাসিনা সরকার তাকে গ্রামীণ ব্যাঙ্কের প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে। সরকার তখন বলেছিল যে ৭৩ বছর বয়সী ইউনুস আইনি অবসরের বয়স ৬০ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরও পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তখন মানুষ তার বরখাস্তের প্রতিবাদ করেছিল। এর প্রতিবাদে হাজার হাজার বাংলাদেশি মানববন্ধন করেন।

ছয় মাসের জেল হয়
চলতি বছরের জানুয়ারিতে শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে ইউনুসকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। জুন মাসে, একটি বাংলাদেশি আদালতও ইউনূস এবং অন্য ১৩ জনের বিরুদ্ধে তার প্রতিষ্ঠিত একটি টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানির শ্রমিকদের জন্য একটি কল্যাণ তহবিল থেকে ২৫২.২ মিলিয়ন টাকা (২ মিলিয়ন ডলার) আত্মসাতের অভিযোগে বিচার করেছিল। তবে কোনো মামলায় তাকে জেলে  পাঠানো হয়নি। ইউনুসের বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ আরও শতাধিক মামলা রয়েছে। তবে ইউনুস এ ধরনের  অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। চলতি বছরের জুনে হাসিনার সমালোচনা করে ইউনুস বলেছিলেন, 'বাংলাদেশে কোনো রাজনীতি বাকি নেই। একটি মাত্র দল আছে যারা সক্রিয় এবং সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে। এবং তিনি তার নিজস্ব উপায়ে নির্বাচনে জিতেছেন।'

সোমবার এক সংবাদ মাধ্যমকে ইউনুস বলেন , হাসিনা দেশ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতার জন্য ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর এটি বাংলাদেশের জন্য "দ্বিতীয় স্বাধীনতা দিবস"। ইউনুস বর্তমানে প্যারিসে আছেন এবং সেখানে তার সামান্য চিকিৎসা চলছে। তার মুখপাত্র বলেছেন যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী শিক্ষার্থীদের তাকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা করার অনুরোধে তিনি সম্মত হয়েছেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি পড়াতেন
১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে যখন দুর্ভিক্ষ ছিল, তখন ইউনুস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতির অধ্যাপনা করছিলেন। এই দুর্ভিক্ষে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। তারপর ইউনুস দেশের বিশাল গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে সাহায্য করার জন্য একটি ভাল উপায় খুঁজে বের করার কথা ভাবলেন। এই সুযোগটি আসে যখন ইউনুস বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকটবর্তী একটি গ্রামের এক মহিলার সঙ্গে  দেখা করেন যিনি একজন মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। এই ঋণ ছিল এক ডলারেরও কম, কিন্তু এর বিনিময়ে মহাজন তার দ্বারা নির্ধারিত মূল্যে মহিলার দ্বারা উৎপাদিত সমস্ত কিছু কেনার অধিকার পেয়েছিল। ইউনুস নোবেল পুরস্কার গ্রহণের সময় তার বক্তৃতায় বলেছিলেন, 'আমার কাছে এটা ছিল দাস শ্রম নিয়োগের একটি উপায়।'

Advertisement

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement