Advertisement

বাংলাদেশের পুজোমণ্ডপে ভাঙচুর, এবার ভারতকে সতর্ক করলেন হাসিনা

বাংলাদেশে দুর্গাপুজোর সময় তাণ্ডবের ঘটনা নিয়ে এখন শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এপার বাংলার মত ওপার বাংলাতেও এই সময়ে রয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ। কিন্তু সেই উৎসবের রং অনেকটাই ম্লান করে দিয়েছে মৌলবাদীদের কীর্তি। গোটা বিষয়টিতেই কড়া বার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু কন্যা হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, অশান্তির ঘটনায় যে বা যারা জড়িত, তাদের খুঁজে বের করা হবেই। নেওয়া হবে উপযুক্ত ব্যবস্থা। পশাপাশি গোটা পরিস্থিতিতে এবার প্রতিবেশী ভারতকেও সতর্ক করছেন হাসিনা।

 ভারতকেও বার্তা দিলেন হাসিনা ভারতকেও বার্তা দিলেন হাসিনা
Aajtak Bangla
  • ঢাকা,
  • 15 Oct 2021,
  • अपडेटेड 2:03 PM IST
  • বাংলাদেশে দুর্গাপুজোর সময় তাণ্ডবের ঘটনা নিয়ে এখন শোরগোল পড়ে গিয়েছে
  • এপার বাংলার রাজনৈতিক মহলেও প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে
  • এই নিয়ে এবার ভারতকেও বার্তা দিলেন হাসিনা

বাংলাদেশে দুর্গাপুজোর সময় তাণ্ডবের ঘটনা নিয়ে এখন শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এপার বাংলার মত ওপার বাংলাতেও এই সময়ে রয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ। কিন্তু সেই উৎসবের রং অনেকটাই ম্লান করে দিয়েছে মৌলবাদীদের কীর্তি। গোটা বিষয়টিতেই কড়া বার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু কন্যা  হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, অশান্তির ঘটনায় যে বা যারা জড়িত, তাদের খুঁজে বের করা হবেই। নেওয়া হবে উপযুক্ত ব্যবস্থা। পশাপাশি গোটা পরিস্থিতিতে এবার প্রতিবেশী ভারতকেও সতর্ক করছেন হাসিনা।

হাসিনা যা বলছেন
কুমিল্লায় দুর্গামণ্ডপে তাণ্ডবের ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ করেছে বাংলাদেশের  শেখ হাসিনার সরকার। বাংলাদেশের ২২ টি জেলায় আধা সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। গোটা বিষয়টিতে  প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাণ্ডবকারীদের উদ্দেশে স্পষ্ট বার্তা দিয়ে হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশ এক অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ। বাংলাদেশে সকল ধর্ম, বর্ণ, সম্প্রদায়ের মানুষ একসঙ্গে বসবাস করবে। যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে।” তিনি প্রত্যেক বাংলাদেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দেন, “ধর্ম যার যার, কিন্তু উৎসব সবার। ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার।” কুমিল্লার ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বাংলাদেশে সম্প্রীতির ইতিহাসের কথাও তুলে ধরেন হাসিনা। বলেন, “বাংলাদেশের ইতিহাসে এটা আছে যে এদেশের মানুষ সবসময় প্রতিটি উৎসব সামিল হয়ে একসঙ্গে সেই আনন্দ উপভোগ করে। মাঝে মাঝে কিছু দুষ্ট চক্র এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে মানুষের মধ্যে এই চেতনাকে নষ্ট করতে চায়। এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।"

আঙুল জামাত-ই-ইসলামির দিকে
ওপার বাংলার দুর্গাপুজো মণ্ডপে তাণ্ডবের ঘটনায় এপার বাংলার রাজনৈতিক মহলেও প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ঢাকা ও নয়াদিল্লির কূটনীতিকদের মতে, ১৩ অক্টোবর বিকেলে কুমিল্লায় মণ্ডপে এবং মন্দিরে হামলার পিছনে মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের সরকারকে বিব্রত করা এবং ভারতের তরফে এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে বাধ্য করা।  এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকারের তরফে এই সাম্প্রদায়িক সহিংসতার অভিযোগের আঙুল তোলা হয়েছে জামাত-ই-ইসলামির বিরুদ্ধে। সরকারের দাবি, শেখ হাসিনা সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই এই হামলা চালায় জামাত।

Advertisement

আরও পড়ুন

হিন্দুদের উদ্দেশে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বার্তা
চাঁদপুরের হাজিগঞ্জ, চট্টগ্রামের বাঁশখালি, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ এবং কক্সবাজারের পেকুয়ায় বিভিন্ন মন্দিরে হামলা চালানো হয়। বেশ কিছু ছবিও প্রকাশ্যে আসে যাতে দেখা যায় দুর্গা প্রতিমা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই সব প্রতিমা ভাঙার ছবি ছড়িয়ে পড়ে। হামলাগুলোর বেশিরভাগই বাংলাদেশের পূর্বপ্রান্তে ত্রিপুরা লাগোয়া কুমিল্লা জেলায় ঘটেছে। বাংলাদেশ সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, ঘটনাগুলোকে গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। এবং যেসব এলাকায় সহিংসতা হয়েছে সেখানে আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এই অবস্থায় হিন্দুদের উদ্দেশে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বার্তা দিয়েছেন, ”আমি আপনাদের আবারও অনুরোধ করব, আপনার কখনওই নিজেদেরকে সংখ্যালঘু ভাববেন না। আমরা আপনাদের সংখ্যালঘু নয়, আপনজন বলেই মানি। আমাদের এই দেশের নাগরিক হিসেবে মানি। সমঅধিকারে আপনারা এখানে বসবাস করেন। আপনারা সমঅধিকার ভোগ করবেন। সমঅধিকার নিয়ে আপনাদের ধর্ম পালন করবেন, উৎসব পালন করবেন। সেটাই আমরা চাই।’’ তিনি আরও জানান, কিছুদিন আগে কুমিল্লায় যে ঘটনা ঘটেছে ইতিমধ্যেই তার তদন্ত শুরু হয়েছে। ব্যাপকভাবে তদন্ত চলছে। অনেক তথ্য ইতিমধ্যেই প্রশাসনের হাতে এসেছে। এই ধরনের ঘটনা যারা ঘটাবে, তাদের আমরা খুঁজে বের করবই। সে যেই হোক না কেন, যে ধর্মেরই হোক না কেন, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা অবশ্যই যথাযথভাবে নেওয়া হবে।

ভারতকেও সতর্ক করলেন হাসিনা
কুমিল্লার দুর্গামণ্ডপে এই তাণ্ডবের পিছনে রাজনৈতিক ইন্ধন থাকার সম্ভাবনাও একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না শেখ হাসিনা। নাম না করে বাংলাদেশের বিরোধী দল বিএনপিকে নিশানা করতেও ছাড়লেন না তিনি। তাঁর মতে, বাংলাদেশ যখন উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন এই যাত্রাকে ব্যাহত করার এবং একইসঙ্গে দেশের ভিতরে একটি সমস্যা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে কেউ কেউ। যারা মানুষের বিশ্বাস, আস্থা অর্জন করতে পারে না, রাজনীতি নেই, কোনও আদর্শ নেই, আসলে তারাই এই ধরনের কাজ করে। এই মাঝেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভরাতকেও সতর্ক করেছেন। ভারতকে সচেতন থাকার পরমার্শ দিয়ে হাসিনা বলেন, "সেখানেও (ভারতে) এমন কিছু যেন না করা হয়-যার প্রভাব আমাদের দেশে এসে পড়ে। আর আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আঘাত আসে। "

ভারতের উদ্দেশে  শেখ হাসিনার বক্তব্য 
 গোটা বিশ্বে জঙ্গি তৎপরতার কথা তুলে ধরে  বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবেশি দেশকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, প্রতিবেশি দেশেও এমন কিছু যাতে না করা হয়, যার প্রভাব এখানে পড়ে। তিনি বলেন, ‘সারা বিশ্বে জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাওয়ায় তারও একটা প্রভাব এসে পড়ছে। সেব্যাপারে আমাদের নিজেদের দেশ শুধু নয়, আমাদের প্রতিবেশি দেশকেও সজাগ থাকতে হবে।’ ভারতের উদ্দেশে তিনি আরও বলেছেন, ‘প্রতিবেশি ভারত আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় সহযোগিতা করেছে। তাদের কথা আমরা সব সময় কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করি।’ সেইসঙ্গে যোগ করেন, ‘সেখানেও (ভারতে) এমন কিছু যেন না করা হয়-যার প্রভাব আমাদের দেশে এসে পড়ে। আর আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আঘাত আসে। সে ব্যাপারে তাদেরকেও একটু সচেতন থাকতে হবে।’

হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা হাসিনার দরবারে
বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় পুজোমণ্ডপে হামলার ঘটনার প্রেক্ষাপটে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা নিরাপত্তা নিয়ে তাদের উদ্বেগ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ব্যক্ত করেছেন। তারা বলেছেন, এসব ঘটনায় হিন্দুদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তবে হাসিনা আশ্বাস দিয়েছেন,  কুমিল্লার ঘটনা এবং তার জের ধরে সহিংসতার ঘটনাগুলোর সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

Read more!
Advertisement
Advertisement