গত অগাস্টে বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকে হিন্দুদের উপর শুরু হয়েছে নির্যাতন। একের পর এক ঘটনায় প্রশ্নের মুখে বাংলাদেশ সরকার। অভিযোগ, হিন্দুদের উপর মৌলবাদিদের অত্যাচারের পরও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কয়েকটি ঘটনায় তো পুলিশ-প্রশাসন নীরব দর্শকের ভূমিকাও পালন করেছে। এমনকি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টায় কোনও খামতি রাখেনি ইউনূস সরকার। বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে দাবি করেছিল তারা। শেষপর্যন্ত ভারতের চাপে পদক্ষেপ করতে বাধ্য হয় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সেই তদন্ত রিপোর্টেও কতটা সত্যি উঠে এল, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর নির্যাতনের কথা মানতেই চায়নি ইউনূস সরকার। এবার তাদের পুলিশি তদন্ত রিপোর্টই বলছে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ১৪১৫টি হিন্দু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনাগুলি ঘটেছে ৪ অগাস্ট থেকে ২০ অগাস্ট পর্যন্ত। তবে এটা 'রাজনৈতিক কারণ' বলে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। শনিবার প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের দফতর থেকে তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনা হয়েছে। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, হিন্দুদের উপর আক্রমণ, ভাঙচুরের ঘটনার ৯৮.৪ শতাংশই রাজনৈতিক। মাত্র ১.৫৯% ঘটনার পিছনে রয়েছে ধর্মীয় বিদ্বেষ।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্ট্রান ঐক্য পরিষদের দাবি, ওই সময়ের মধ্যে ২০১০টি সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। যদিও ১৭৬৯টি হামলা ও ভাঙচুর ঘটনাই নথিভুক্ত হয়েছে পুলিশের তদন্ত রিপোর্টে। এর মধ্যে ১৪১৫টি ঘটনার তদন্ত হয়ে গিয়েছে। তদন্ত চলছে বাকি ৩৪৫টি ঘটনার। ১৪১৫টি ঘটনার মধ্যে ১২৫৪টির প্রমাণ মিলেছে। বাকি ১৬১টি ঘটনায় কোনও প্রমাণ নেই। ১২৫৪টি ঘটনার পিছনেই রয়েছে রাজনীতি। মাত্র ২০টি ঘটনাই ধর্মীয় কারণে সংগঠিত হয়েছিল।
তদন্ত রিপোর্ট বলছে, ৫ অগাস্ট থেকে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংখ্যালঘুদের উপর ২২০০টি ঘটনা ঘটেছে। প্রথম দিকে ঘটনাগুলিকে গুরুত্বই দেয়নি ইউনূস সরকার। কিন্তু এখন তাঁর সরকারের পুলিশই সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের ঘটনা মেনে নিল। প্রশ্ন উঠছে, রাজনৈতিক কারণে হিন্দুদের হত্যা, বাড়িঘর ভাঙচুর হলে কি অপরাধ নয়? আর অপরাধীদের বিরুদ্ধেই বা কি ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার?