Advertisement

Dipu Chandra Das: দীপুর দেহ যখন হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছিল ওরা, পুলিশ কী করছিল? নৃশংসতার নাম 'বাংলাদেশ'

পুলিশ পৌঁছনোর আগেই ঘটনাস্থলে দীপুকে খুন করে ফেলেছিল উন্মত্ত জনতা। হাইওয়ের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল দীপুর লাশ। হয়তো সময়মতো পুলিশ পৌঁছলে দীপুকে বাঁচানো যেত। এমনটা বলছেন খোদ পুলিশকর্তা। সেদিন ঠিক কী হয়েছিল? প্রকাশ্যে হাড়হিম ঘটনা।

দীপু চন্দ্র দাসের মৃত্যুকে পুলিশের কী ভূমিকা? দীপু চন্দ্র দাসের মৃত্যুকে পুলিশের কী ভূমিকা?
Aajtak Bangla
  • ময়মনসিংহ,
  • 22 Dec 2025,
  • अपडेटेड 11:20 AM IST
  • পুলিশ পৌঁছনোর আগেই দীপুকে খুন করা হয়েছিল
  • সময়মতো পুলিশ পৌঁছলে দীপুকে বাঁচানো যেত
  • বলছেন খোদ পুলিশকর্তা

উগ্রপন্থীদের হাতে নৃশংস ভাবে খুন হওয়া হিন্দু যুবক দীপু চন্দ্র দাসের ঘটনা ঘিরে উত্তাল বাংলাদেশ। ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার মহম্মদ ফরহাদ হোসেন খান বলেন, 'রাত ৮টা এক ASP এই ঘটনা সম্পর্কে আমাকে অবহিত করেন।'

বাংলাদেশের সংবাদপত্র দ্য ডেইলি স্টার এই পুলিশ আধিকারিককে উদৃত করে লিখেছে, 'আমরা খবর পাওয়ার পর তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। রাস্তায় শয়ে শয়ে মানুষ ছিল। সেই বিশাল ভিড়ের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছনো খুব কঠিন ছিল। আমরা যখন কারখানার গেটে পৌঁছই তখন আমরা দেখতে পাই একটি ক্ষুব্ধ জমায়েত প্রায় ২ কিমি দূরে ঢাকা-ময়মনসিংহ জাতীয় সড়কের দিকে একটি লাশ নিয়ে যাচ্ছে। প্রায় ৩ ঘণ্টা ঘরে ১০ কিমি দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়ে গিয়েছিল। যার ফলে পুলিশ পৌঁছতেই পারেনি।'

ASP ফরহাদ হোসেন খান আরও বলেন, 'ঘটনাস্থল থেকে আমাদের দফতর ১৫ কিমি দূরে এবং ভালুকা থানা তুলনামূলক ভাবে কাছে। সময় মতো যদি খবর পাওয়া যেত তাহলে দীপুকে বাঁচানো সম্ভব হত। তবে এমনটা করা যায়নি। পুলিশ কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করারও চেষ্টা করে। তবে তা-ও সম্ভব হয়নি।'

কারখানা কর্তৃপক্ষ কী বলছে?

দ্য ডেইলি স্টারকে পাওনিয়ার নিটওয়্যারের সিনিয়র ম্যানেজার সাকিব মেহমুদ বলেন, 'বিকেল ৫টার সময়ে কিছু শ্রমিক কারখানায় হট্টগোল শুরু করে। তারা দীপুর বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার অভিযোগ আনে। এই খবর পেয়ে কারখানার কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। ততক্ষণে শত শত মানুষ জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। দীপু দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগের পক্ষে কোনও প্রমাণ নেই।'

কারখানার সিনিয়র ম্যানেজার আলমগীর হোসেন সেদিন সন্ধ্যা ৭.৩০ নাগাদ দীপুকে ভুয়ো পদত্যাগপত্র জমা দিতে বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাতেও কারখানার শ্রমিকরা শান্ত হতে প্রস্তুত ছিল না বলে খবর।

এদিকে, দীপু চন্দ্র দাসকে কারখানার নিরাপদ জায়গায় রাখা হয়েছিল এবং রাত ৮টা নাগাদ পুলিশকে খবর দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। কারখানার সিনিয়র ম্যানেজার বলেন, 'কারখানার অভ্যন্তরে আমাদের নিজস্ব পদ্ধতিতে বিষয়টি সমাধানের জন্য যথাসাধ্য করেছি। ততক্ষণে কারখানার শিফট পরিবর্তনের সময় হয়ে গিয়েছিল। দ্বিতীয় শিফটের শ্রমিকরা ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে। তাছাড়া খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয়রা সেখানে জড়ো হয়ে যায়। রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে উন্মত্ত জনতা কারখানায় প্রবেশ করে। কারখানার দরজা ভেঙে দেয় এবং নিরাপদ স্থানে ঢুকে দীপুকে টেনে নিয়ে যায়।'

Advertisement

কারখানা সূত্রে দাবি, আক্রমণকারীরা দীপুকে কারখানা থেকে টেনে বের করে আনে। স্থানীয়রাও সেই জটলায় যোগ দেয়। ঘটনাস্থলেই তাঁকে হত্যা করা হয় এবং শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

ময়মনসিংহে ব়্যাব-১৪ কোম্পানি কমান্ডার মহম্মদ শামসুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নিহত ব্যক্তি ফেসবুকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা কিছু কথা লিখেছিলেন বলে কোনও প্রমাণ মেলেনি। পরিস্থিতি বেগতিক হওয়ায় কারখানা বাঁচাতে তাঁকে জোর করে বাইরে ঠেলে দেওয়া হয়।'

দীপুকে কারখানার অন্যান্য ব্যক্তিদের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে সিনিয়র ম্যানেজার সাকিব মেহমুদ বলেন, 'আমরা কখনওই এমন কাজ করিনি।'

গত ১৮ ডিসেম্বর রাতে বাংলাদেশের ময়মনসিংহের ভালুকা এলাকায় দীপু চন্দ্র দাস নামে এই হিন্দু যুবককে উন্মত্ত জনতা নির্মম ভাবে হত্য়া করেছিল। দীপুর একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক ছিলেন এবং ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। জনতার অভিযোগ ছিল, তিনি মুসলিম ধর্মকে অবমাননা করেছেন। যদিও পুলিশ এই অভিযোগ মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছে। পরবর্তীতে উন্মত্ত জনতা দীপুকে খুন করে গাছে উল্টো ঝুলিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এই হত্যাকাণ্ডে বাংলাদেশ পুলিশ এখনও পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে। নিহতের ভাই অপু চন্দ্র দাস ভালুকা থানায় ১৪০-১৫০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।

Read more!
Advertisement
Advertisement