
Bangladesh Political Crisis: বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর দেশজুড়ে যে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আওয়ামি লিগ। দলের শীর্ষ নেতাদের দাবি, বাংলাদেশ ধীরে ধীরে ‘পাকিস্তানি মডেলের’ দিকে এগোচ্ছে। যেখানে চরমপন্থা, দুর্নীতি এবং জনতার হিংসাই রাজনীতির নিয়ামক হয়ে উঠছে।
আওয়ামি লিগের একাধিক সিনিয়র নেতা জানিয়েছেন, আগস্ট ২০২৪-এ শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর থেকে তাঁরা কার্যত আত্মগোপনে রয়েছেন। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে দলের নেতাকর্মীদের উপর হামলা, পরিবারের সদস্যদের হুমকি এবং প্রকাশ্যে কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি করতে না পারার অভিযোগ উঠেছে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, যে কোনও সময় জনতার আক্রমণের আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
দলের অভিযোগ, শেখ হাসিনার আমলে কড়া হাতে নিয়ন্ত্রিত মৌলবাদী শক্তিগুলি এখন ফের মাথাচাড়া দিচ্ছে। প্রশাসনের দুর্বলতা ও রাজনৈতিক শূন্যতার সুযোগে বাড়ছে চরমপন্থী প্রভাব। পাশাপাশি লাগামছাড়া দুর্নীতিও পরিস্থিতিকে আরও ঘোরালো করে তুলছে বলে দাবি আওয়ামি লিগের। অনেক নেতার কথায়, এই পরিস্থিতিই বাংলাদেশকে পাকিস্তানের মতো অস্থিতিশীল পথে ঠেলে দিচ্ছে।
এই অশান্তির মধ্যেই নতুন করে আগুনে ঘি ঢালে ছাত্রনেতা শরিফ উসমান হাদির মৃত্যু। গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকার বিজয়নগরে গুলিবিদ্ধ হন হাদি। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হলেও এক সপ্তাহের মাথায় মৃত্যু হয় তাঁর। এই ঘটনার পর থেকেই দেশজুড়ে হিংসাত্মক প্রতিবাদ শুরু হয়। একাধিক জায়গায় আওয়ামি লিগের কার্যালয়ে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ চলে। পাশাপাশি ভারত থেকে শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের দাবিও জোরাল হয়েছে।
সব মিলিয়ে পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে ২০২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে। ওই নির্বাচনের আগেই জাতীয় গণভোটের কথাও ঘোষণা করা হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ভোটের আগে আবেগ উসকে দেওয়া হলে পরিস্থিতি আরও বিস্ফোরক হয়ে উঠতে পারে। আপাতত আতঙ্ক, অনিশ্চয়তা আর অস্থিরতার মধ্যেই দিন কাটছে বাংলাদেশের।