
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবউদ্দিন ফেব্রুয়ারিতে ভোটের পরই নিজের দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এই দাবি করেছেন বলে জানা গিয়েছে।
এই সাক্ষাৎকারে একাধিক বিস্ফোরক অভিযোগ করেন সাহাবউদ্দিন। তিনি জানিয়েছেন, বর্তমান অন্তবর্তী মহম্মদ ইউনূস সরকারের আমলে তিনি 'অপমানিত' এবং 'কোণঠাসা'। তাই তিনি নিজের দায়িত্ব ছাড়তে চান।
২০২৩ সালে রাষ্ট্রপতি হন
সাহাবউদ্দিন হলেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি। ক্ষমতা বলে তিনি সেনার সুপ্রিম কমান্ডার। তবে এই পদটার খুব একটা ক্ষমতা বাংলাদেশের সংবিধানে নেই। বাস্তবে দেশ চালানোর ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রীমণ্ডলের কাছেই রয়েছে। তবে ২০২৪ সালের আন্দোলনের পর সেই দেশের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন ক্ষমতাচ্যুত। তিনি ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। আর এমন পরিস্থিতিতে সংবিধানের একমাত্র সরকারি আধিকারিক হলেন রাষ্ট্রপতি। তবে ইউনূসের আমলে তাঁরও কোনও ক্ষমতাই রইল না।
আসলে ২০২৩ সালে ক্ষমতায় আসেন সাহাবউদ্দিন। তিনি আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী হিসাবেই রাষ্ট্রপতি হন। তবে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনে লড়তে পারবে না আওয়ামী লীগ বলেই খবর। এমন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি হিসাবে ভীষণই কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন তিনি। সেই কারণেই পদত্যাগের ইচ্ছে প্রকাশ করলেন।
আমি পদত্যাগ করতে চাই
ঢাকার রাষ্ট্রপতির বাসভবন থেকে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, 'আমি ছাড়তে চাই, আমি বেরতে চাইছি।' তবে ভোট পর্যন্ত যে তিনি এই পদে থাকবেন, সেটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, 'আমি ভোট হওয়া পর্যন্ত রয়েছি। আমি অফিসে রয়েছি, কারণ এটা একটা সাংবিধানিক দায়িত্ব।'
আমি ৭ মাস ধরে ইউনূসকে দেখিনি
এই সাক্ষাৎকারে সাহাবউদ্দিন মহম্মদ ইউনূসের দিকে আঙুল তোলেন। সাহাবউদ্দিন জানান, তিনি এই সরকারের আমলে কোণঠাসা। গত ৭ মাস ধরে ইউনূসের সঙ্গে দেখা নেই। এমনকী তাঁরা প্রেস বিভাগ তুলে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দূতাবাস থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে তাঁর ছবি।
রাতারাতি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ছবি
তিনি বলেন, 'সব হাই কমিশন এবং দূতাবাসে রাষ্ট্রপতির ছবি ছিল। সেগুলি রাতারাতি খুলে ফেলা হয়েছে... এর জন্য আমি আপমানিত বোধ করেছি।'
এই বিষয়টি নিয়ে তিনি ইউনূসকে জিজ্ঞেসাও করেন। তবে কোনও উত্তর আসেনি। বরং তাঁর বক্তব্যকে চুপ করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি। যদিও এখনও বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেনি সরকারের পক্ষ থেকে কেউই।