
'মুখোশ' খুলে গেল NCP বা বাংলাদেশ জাতীয় নাগরিক পার্টির। জুলাই আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে এই রাজনৈতিক দলটি গড়ে উঠেছিল। দলের নেতারা ঘোষণা করেছিলেন, তাঁরা নতুন বাংলাদেশ গড়বেন। কিন্তু, এখন সেই দলই হাত মেলাল জামাত ইসলামির মতো মৌলবাদী সংগঠনের সঙ্গে। প্রসঙ্গত, সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের অভিযোগে জামাতের ভোটে দাঁড়ানোর অধিকার ছিল না বাংলাদেশে। তবে মহম্মদ ইউনূস ক্ষমতায় আসার পর সেই নিষেধাজ্ঞা সরিয়ে দেন। জুলাই আন্দোলনের সময় অনেকে দাবি করেছিলেন, এই NCP আসলে জামাতের-ই বি টিম। আজকের এই ঘোষণার পর তাই যেন দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে গেল, বলছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
রবিবার বিকেলে জামাতের আমির শফিকুর রহমান এই ঘোষণা করেন। তিনি জানান, এতদিন পর্যন্ত আটটি দল নিয়ে জামাতের জোট ছিল। তবে আজ থেকে এনসিপি ও এলডিপি যোগ দেয়। ঢাকা ট্রিবিউনে প্রকাশ, 'কিছুক্ষণ আগে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। রবিবার রাতের মধ্যেই এনসিপিও আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করবে।
তবে নাহিদ ইসলামের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে এনসিপি-র একটা অংশ। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, অনেকে পদত্যাগ করলেও ১৭০ জনেরও বেশি নেতা জামাতের সঙ্গে জোটকে সমর্থন করেছে।
তবে মুখ খুলেছেন জুলাই আন্দোলনের অন্যতম মুখ তথা এনসিপি নেতা তাজনুভা জাবিন। পদ থেকে পদত্যাগ করে তিনি ফেসবুকে লেখেন, 'দলের নীতি নির্ধারণ খুব হতাশাজনক। এর পক্ষে অনেকে নন।'
প্রসঙ্গত, জামাত ইসলামির উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা ওঠার পর থেকেই তারা ফের প্রকাশ্য সমাবেশ করতে শুরু করে উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলতে শুরু করেছে। ভারত বিরোধী কথাও বলেছেন সেই দলের নেতারা। ইতিহাস সাক্ষী, এই জামাত নেতারা মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিলেন। তাঁরা পাকিস্তানি শাসন চাইতেন দেশে। সেই নেতাদের সঙ্গে এনসিপি জোট করায় তাদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
জামাত এনসিপি-কে কত আসন দেবে?
প্রথম আলো-র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩৫০ সদস্যের জাতীয় সংসদের জন্য এনসিপি ৫০টি আসন দাবি করছিল। তবে জামাত সেই দাবিকে অবাস্তব বলে উড়িয়ে দিয়েছে। আপাতত মনে হচ্ছে, এনসিপি বুঝতে পেরেছে ভোটের রাজনীতিতে তাদের পায়ের তলায় মাটি শক্ত নয়। সেজন্য তারা আপাতত ৩০ আসনের জন্য দর কষাকষি করছে।
এও শোনা যাচ্ছে, BNP নেতা তারেক রহমানের সঙ্গেও যোগাযোগ রেখে চলেছেন এনসিপি নেতাদের একাংশ। নেতৃত্ব মনে করছে, তাঁদের সঙ্গে এখনও BNP-র আলোচনার রাস্তা খোলা।
শেখ হাসিনার বিদায়ের পর এই এনসিপি নেতারাই মহম্মদ ইউনূসকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ফলে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের এনসিপি-র প্রতি সমর্থন আছে বলেই মনে করা হচ্ছে।