বাংলাদেশে চিন্ময় দাসের গ্রেফতার ও হিন্দুদের ওপরে অত্যাচারের ঘটনায় কড়া বিবৃতি দিয়েছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। তারপরেই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলিতে নিরাপত্তা বাড়াল বাংলাদেশের বর্তমান প্রশাসন। উগ্র মৌলবাদীদের বাংলাদেশের হিন্দু সংখ্যালঘুরা আবারও আক্রমণের শিকার হতে পারে, এমন সম্ভাব্য জায়গাগুলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এসব জায়গায় গত কয়েক মাস ধরেই আক্রমণের শিকার হচ্ছেন হিন্দুরা। তাঁদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ এখন সাম্প্রদায়িক আগুনে পুড়ছে। হিন্দু ধর্মগুরু চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতারের পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। সেখানে হিন্দু ও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পবন কল্যাণ। অন্ধ্রপ্রদেশের উপ মুখ্যমন্ত্রী পবন কল্যাণ ইসকনের প্রধান পুরোহিত চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতারের নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, আসুন আমরা একসঙ্গে চিন্ময় প্রভুর গ্রেফতারের নিন্দা করি। আমরা মহম্মদ ইউনূসের বাংলাদেশ সরকারকে হিন্দুদের উপর অত্যাচার বন্ধ করার কথা বলি। তিনি আরও বলেন, 'বাংলাদেশ গঠনের জন্য আমাদের সেনারা রক্ত ঝরিয়েছে, আমাদের সম্পদ ব্যয় করেছে, আমাদের সেনারা শহিদ হয়েছেন। আমাদের হিন্দু ভাই-বোনদের যেভাবে টার্গেট করা হচ্ছে তাতে আমরা ব্যথিত। আমরা এ ব্যাপারে রাষ্ট্রসংঘের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।'
চিন্ময় দাসের গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়েছিল ভারতের বিদেশ মন্ত্রক (এমইএ)। মঙ্গলবার একটি বিবৃতি জারি করে তারা বলেছে, 'আমরা বাংলাদেশে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করা এবং তাঁকে জামিন না দেওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। বাংলাদেশে উগ্রবাদীদের দ্বারা হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ক্রমাগত টার্গেট করার মধ্যে এই বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন লাগানো ও লুটপাট চালানো হয়েছে। হিন্দ মন্দিরে চুরি ও ভাঙচুর করার একাধিক ঘটনা ঘটেছে।'
বিদেশ মন্ত্রক বলেছে যে এটা দুর্ভাগ্যজনক যে একজন হিন্দু পুরোহিতের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ দায়ের করা হচ্ছে, যিনি হিন্দু সংখ্যালঘুদের জন্য দাবি তুলেছিলেন। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতাররে বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদকারী হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনাতেও আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করছি। শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারসহ হিন্দু ও সকল সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ২৫ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। বাংলাদেশের আদালত মঙ্গলবার তাঁকে জামিন না দিয়ে জেলে পাঠিয়েছে। এরপর চিন্ময় দাসের সমর্থকরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন। নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে সাংবাদিক-সহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।