কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের বাইরে জাতীয় পতাকার স্ট্যান্ডে ঝুলিয়ে দেওয়া হল জুতো। বাংলাদেশের জনপ্রিয় সংবাদপত্রের একটি রিপোর্টে এই দাবি করা হয়। সোশ্যাল মিডিয়াতেও ভাইরাল জুতো ঝুলিয়ে দেওয়ার ভিডিও। সংবাদপত্রে দাবি করা হয়, মসজিদের ইমামতি পছন্দ না হওয়ায় জুতো ঝুলিয়ে দেওয়ার ঘটনাটি ঘটায়। শুক্রবার, ৭ মার্চ জুম্মার নামাজের সময় কলেজের ডিগ্রি শাখার প্রশাসনিক ভবনের সামনে এটি ঘটে।
ঘটনাটি নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এই ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণিক, বিভিন্ন পেশার মানুষজন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ২৮ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন যুবক কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনের জাতীয় পতাকার স্ট্যান্ডে জুতো বেঁধে টাঙিয়ে দিচ্ছেন। এই সময় অশালীন স্লোগানও দিতে শোনা যায়। ভিডিওটি ভাইরাল হলে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়।
কলেজ প্রশাসনের ধারণা, কলেজের সম্মানহানি করতেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। সদ্য নানা অভিযোগের ভিত্তিতে ডিগ্রি শাখার মসজিদের প্রাক্তন ইমাম মারুফ বিল্লাহকে অব্যাহতি দেয় কলেজ প্রশাসন। মুসল্লি ও স্থানীয়রা বলছেন, অভিযুক্তদের পছন্দের ইমামকে না রাখায় জাতীয় পতাকার স্ট্যান্ডে জুতো টাঙিয়ে দেয় একদল যুবক।
ইতিমধ্যে এই ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছে কলেজ প্রশাসন। জানা যায়, শুক্রবার জুম্মার নামাজের খুতবার আগে মসজিদের মিম্বরে মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে কথা বলেন স্থানীয় গণ্যমান্যরা। তাঁরা বলেন, "ভিক্টোরিয়া কলেজ একটি স্বনামধন্য কলেজ। স্থানীয়দের সঙ্গে ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিরোধ কখনও কাম্য নয়। কলেজ মসজিদের অব্যাহতি পাওয়া ইমাম মারুফ বিল্লাহকে সসম্মানে বিদায় জানানোর পাশাপাশি বর্তমান ইমামকেও বাদ দিয়ে নতুন ইমাম নিয়োগ করতে হবে দাবি করে। এমন একজনকে নিয়োগ করতে হবে যাকে কলেজ ও মসজিদ এলাকার কেউ চেনে না। এ বিষয়ে আমরা ভিক্টোরিয়া কলেজ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।"
তবে, স্থানীয়দের এই কথা মানেনি অব্যাহতি পাওয়া ইমাম মারুফ বিল্লার অনুসারীরা। তারা খুৎবা চলাকালীন বের মসজিদ থেকে বেরিয়ে যান। নামাজ শেষ হতেই বাকিরা তাদের সঙ্গে যোগ দেন। এই সময় কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থাকা জাতীয় পতাকার তিনটি স্ট্যান্ডের মধ্যে মাঝের স্ট্যান্ডে বিভিন্ন অশ্লীল স্লোগান দিয়ে জুতা ঝুলিয়ে দেন ৮-১০ জন যুবক।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইমাম মারুফ বিল্লাহ বলেন, "এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। কলেজ প্রশাসন আমাকে অব্যাহতি দিয়েছে। আমি কলেজ থেকে চলে এসেছি৷ এখন কি ঘটনা হয়েছে এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।"
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম বলেন, "এ ঘটনায় কলেজ প্রশাসন মৌখিক ভাবে অভিযোগ করলেও লিখিত কোন অভিযোগ পাইনি। তবুও আমরা তদন্ত করছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
বাংলাদেশের একাংশ মনে করছে এই পরিস্থিতি থেকে নিস্তার পেতে গেলে অবশ্যই নির্বাচনের প্রয়োজন রয়েছে। কারণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাচন দরকার। যদিও এখনও পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে এখনও এই নির্বাচন কবে হবে, সেই নিয়ে স্পষ্ট ধারণা দিতে পারেনি। আর তার মধ্যে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে।