ঢাকার ধানমন্ডি এলাকায় বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের বাড়িতে ভাঙচুর চালানোর ঘটনায় মুজিব-কন্যা তথা বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেই কাঠগড়ায় তুলল মহম্মদ ইউনূসের সরকার। ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের ঘটনার জন্য হাসিনাই দায়ী বলে সরব হয়েছে ইউনূসের সরকার। বৃহস্পতিবার ইউনূস সরকারের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ভারত থেকে হাসিনার উস্কানিমূলক মন্তব্যের কারণেই ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, ভাঙচুরের ঘটনায় কড়া হাতে পদক্ষেপ করা হবে।
ঠিক কী বলেছে ইউনূস সরকার?
ইউনূস সরকারের তরফে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'কিছু মানুষ দেশজুড়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ভবনে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করছেন, এটা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে দেখছে সরকার। কড়া হাতে এই ধরনের ঘটনা রুখবে সরকার। নাগরিকদের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষা করতে প্রস্তুত সরকার।'
এরপরেই হাসিনাকে দায়ী করে উল্লেখ করা হয়েছে যে, '৩২ ধানমন্ডির বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনা অনভিপ্রেত...ভারত থেকে শেখ হাসিনার উস্কানিমূলক বক্তব্যের কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে।' বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে যে, জুলাই বিদ্রোহে যাঁরা বলিদান দিয়েছেন, তাঁদের অপমান করেছেন হাসিনা। ক্ষমতায় থাকাকালীন যে সুরে কথা বলতেন হাসিনা, সেই সুরেই কথা বলেছেন। তাঁর ওই মন্তব্যের কারণেই ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
প্রসঙ্গত, হাসিনার ভার্চুয়াল বক্তৃতার পর পরই বাংলাদেশে ফের একাধিক জায়গায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার ঢাকার ধানমন্ডি এলাকায় বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ। তারপর আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’য় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, বিক্ষোভকারীরা ‘২৪-এর বিপ্লবী ছাত্র জনতা’। ভারতীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে শুরু হয় বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারীরা ওই বাড়িতে প্রবেশ করে ভাঙচুর শুরু করে। হাসিনার সরকারের পতনের পরে অগাস্টে ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছিল। তারপর থেকে ওই বাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। সেখানেই ভাঙচুর চালায় বিক্ষুব্ধ ছাত্র–জনতা। গত বছর ছাত্র আন্দোলনের জেরে বাংলাদেশে পতন হয় হাসিনা সরকারের। গত ৫ অগাস্ট তড়িঘড়ি করে দেশ ছাড়েন হাসিনা। আশ্রয় নেন ভারতে। সেই থেকে ভারতেই রয়েছেন হাসিনা। বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে সে দেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সম্প্রতি ইউনূস সরকার জানায় যে, হাসিনা এবং আরও ৯৬ জনের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে। তার পর পরই ভারতে হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়ানো হয়।