
বাংলাদেশের রাজনীতি যখন উথালপাতাল, জ্বলছে গোটা দেশ, ঠিক সেই সময়ই দীর্ঘ ১৭ বছরের স্বেচ্ছানির্বাচন কাটিয়ে ঢাকায় ফিরছেন বিএনপি নেতা তথা খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান। BNP-র অ্যাক্টিং চেয়ারম্যান এখন তারেক। ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের আগে যে সব ঘটনা ঘটছে, তার মধ্যে তারেকের দেশে ফেরাটা অন্যতম।
জটিল কূটনীতির সঙ্গে যুঝতে হবে ভারতকে
ভারতের সঙ্গে বাংলাদশের কূটনৈতিক সম্পর্ক একেবারে তলানিতে। পরিস্থিতি এখন এই রকম, জামাত ই ইসলামি ভারত বিরোধী, এনসিপি নামক নতুন দল ভারত বিরোধী আবার বিএনপি-রও ভারত বিরোধিতার অতীত রয়েছে। এই রকম একটি জটিল কূটনীতির সঙ্গে যুঝতে হবে ভারতকে। জামাতরা কট্টরপন্থী। সে ক্ষেত্রে বিএনপি-কে হ্যান্ডেল করা কি তুলনামূলক সহজ হবে দিল্লির কাছে?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে তারেক রহমান নতুন মা নয়। প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও তিনবার প্রধানমন্ত্রী হওয়া খালেদা জিয়ার পুত্র। ২০০৭-৮ সালে তাঁর বিরুদ্ধে হিংসায় উস্কানি ও দুর্নীতির একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছিল। তখন শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসছেন। খালেদা জিয়ার শাসন প্রায় শেষের পথে। আওয়ামী লিগের প্রভাব বাড়ছে। মামলায় জর্জরিত তারেক দেখলেন, যে কোনও মুহূর্তে তাঁকে গ্রেফতার করা হতে পারে, তাই সুযোগ বুঝে চলে যান লন্ডনে। ঠিক ১৭ বছর পর রাজনৈতিক পালাবদল বাংলাদেশে। হাসিনা সরকারের পতন। তারেকও দেশে ফিরছেন।
বাংলাদেশে যে দলই ক্ষমতায় আসুক, ভারত বিরোধী
বিএনপি ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে, খালেদা জিয়া ফের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী। কিন্তু খালেদা তো অসুস্থ। ভেন্টিলেটরে। তাই সব নজর এখন তারেকের দিকে। এখন ভারতের সমস্যা হল, বাংলাদেশে যে দলই ক্ষমতায় আসুক, ভারত বিরোধী। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে যে মধুর সম্পর্ক ছিল, তা এখন তলানিতে। ভারত ছাড়া আবার বাংলাদেশের চলবে না। এখন বিদেশনীতিতে ব্যালেন্স করতে গেলে, মন্দের ভাল বিএনপি? তারেক রহমানও ব্যাপক ভাবেই ভারত বিরোধী। তিস্তা জলচুক্তির সময়ও ভারতের বিরোধিতা করেছিলেন।
কিঞ্চিত আলো হতে পারে ভারতের কাছে
হাসিনা সরকারের পতনের পরে তারেক বলেছিলেন, 'না দিল্লি, না পিণ্ডি (রাওয়ালপিণ্ডি), সবার আগে বাংলাদেশ।' এখানেই কিঞ্চিত আলো হতে পারে ভারতের কাছে। ভারত বিরোধী হলেও, অন্তত জামাত বা ইউনূসদের মতো পাকিস্তানপন্থী বা পাকিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব না রাখে বাংলাদেশের নতুন সরকার, তাহলেও অনেক।
জামাতরা ক্ষমতায় এলে কী হতে পারে, ক্ষমতায় না এসেও তার প্রমাণ মিল
এখন যা পরিস্থিতি, তাতে পাকিস্তানের জঙ্গিদের সঙ্গে একেবারে খোলা ময়দান বাংলাদেশ। বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে, তাহলে কিছুটা স্বস্তি। কারণ, আওয়ামী লিগ ছাড়া বাংলাদেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে জড়িত। BNP যদি পাকিস্তানের সঙ্গে গাঢ়় বন্ধুত্ব না করে, ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সদ্ভাব রাখে,তাহলেও ভাল। কারণ এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশের রাজনীতির যা পরিস্থিতি, জামাতরা ক্ষমতায় এলে কী হতে পারে, ক্ষমতায় না এসেও তার প্রমাণ মিলছে। গোটা দেশ জ্বলছে। বিএনপি এই হিংসার সমালোচনা করছে। তবে ভোটে জিতে গেলে তারা ভোল বদলে ফেলবে কিনা, তা নিয়ে তো সংশয় রয়েইছে।