বাংলাদেশে এই মুহূর্তে বন্দি রয়েছেন সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস। রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় তাঁকে গ্রেফতারের পর থেকে অশান্তির আগুনে তেতে আছে গোটা বাংলাদেশ। এই পরিস্থিতিতে সামনে এলো বড় আপডেট। ইসকন বাংলাদেশ শাখার নাকি কোটি কোটি টাকার হদিশ মিলেছে। একই সঙ্গে নাকি চিন্ময়প্রভুর বিপুল বেআইনি টাকার হদিশ মিলেছে।
বাংলাদেশের জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস বা ইসকন ও চিন্ময় দাসের ২০৩টি ব্যাঙ্ক হিসাবে প্রায় ২৪০ কোটি টাকার সন্ধান পেয়েছে আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বা বিএফআইইউ। যার মধ্যে ইসকনের নামে ২০২টি অ্যাকাউন্টে ২৩৬ কোটি ৪২ লাখ টাকা জমা দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে গত ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত তোলা হয়েছে ২২কোটি ৭৩ লাখ টাকা। ব্যাঙ্কগুলোতে জমা রয়েছে ১২ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। পাশাপাশি চিন্ময় দাসের নামে তিন কোটি ৯২ লাখ টাকা জমা হয়েছিল। যার প্রায় পুরো অর্থই উত্তোলন করা হয়েছে।
ইসকনের ব্যাঙ্ক হিসাবের তথ্য চেয়ে এর আগে বিএফআইইউ থেকে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। তারপর এই হিসাব সামনে এসেছে। এতো টাকা কারা জমা দিয়েছে, কী তাঁদের আয়ের উৎস, কোন কোন কাজে সেই টাকা খরচ করা হয়েছে, সেই নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।
যাঁদের ব্যাঙ্ক হিসাবে লেনদেন স্থগিত করা হয়েছে তাঁরা হলেন চিন্ময়কৃষ্ণ দাস, কার্ত্তিকচন্দ্র দে, অনিক পাল, সরোজ রায়, সুশান্ত দাস, বিশ্ব কুমার সিংহ, চণ্ডীদাস বালা, জয়দেব কর্মকার, লিপিরানী কর্মকার, সুধামা গৌর দাস, লক্ষণ কান্তি দাশ, প্রিয়তোষ দাশ, রূপন দাস, রূপন কুমার ধর, আশিস পুরোহিত, জগদীশ চন্দ্র অধিকারী ও সজল দাস। যদিও ইসকনের সহ সভাপতি রাধারমণ দাস বলছেন বিষয়টা সম্পূর্ণ ভুল। তিনি বলেন বাংলাদেশে এতো অ্যাকাউন্টই নেই। রিপোর্টে সময়ের উল্লেখও করা হয়নি। বিষয়টা অবাক করা। ইসকনের অ্যাকাউন্ট আলাদা। আর ভক্তদের অ্যাকাউন্ট আলাদা।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে সমাবেশ করেছিল বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ। সেই সমাবেশে ভাষণ দিয়েছিলেন চিন্ময়কৃষ্ণ দাসও। অভিযোগ, সেই সমাবেশেই নাকি তিনি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছিলেন। এই অভিযোগেই চট্টগ্রামে একটি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেন বিএনপি নেতা ফিরোজ খান। গত ৩১ অক্টোবর চিন্ময় দাস-সহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন সেই নেতা। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই গত ২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চিন্ময়কৃষ্ণ প্রভুকে গ্রেফতার করে ঢাকা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। এরপর তাঁকে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের আদালতে বাইরে হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকে জড়ো হয়েছিলেন চিন্ময় প্রভুর গ্রেফতারির প্রতিবাদ জানাতে। সেই জনতার ওপর নির্বিচারে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। তারপর থেকেই অশান্ত হয়ে রয়েছে বাংলাদেশের পরিস্থিতি। দিকে দিকে চলছে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আন্দোলনও।
সংবাদদাতাঃ সুজয় ঘোষ