
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী কাজের অভিযোগ। আর আজ সকাল ১০.৩০ মিনিটে সেই মামলার রায়দান করবে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। তার আগেই বাংলাদেশ জুড়ে চরম উত্তেজনা। একাধিক জায়গায় অগ্নিসংযোগ এবং বোমা হামলার অভিযোগ উঠছে। যার ফলে সেই দেশের রাজধানী ঢাকা এবং অন্যান্য অঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি গুলি চালানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
আসলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-বাংলাদেশ (আইসিটি-বিডি) রায়ের আগে হাসিনার আওয়ামী লিগ দু'দিনের শাটডাউন ঘোষণা করেছে। যার জন্য মহম্মদ ইউনূস সরকার কঠোর সামরিক, আধাসামরিক এবং পুলিশ নজরদারির নির্দেশ দিয়েছে।
চলছে অরাজকতা
ইউনূস ক্ষমতা দখলের পর থেকে বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলার অবস্থা একবারেই খারাপ। যতদূর খবর, রোববার রাতে অজ্ঞাত পরিচয়ের ব্যক্তিরা একটি থানা কমপ্লেক্সের গাড়ির ডাম্পিং কর্নারে আগুন দেয়। পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারের ইউনূসের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যের বাসভবনের বাইরে বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। পাশাপাশি রাজধানীর বিভিন্ন মোড় বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে।
গুলি করে হত্যা
উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) বিক্ষোভকারীদের গুলি করার নির্দেশ দিয়েছে। 'আমি ওয়্যারলেসে বলেছি যে কেউ বাসে আগুন লাগায় বা হত্যার উদ্দেশ্যে বোমা ছুড়লে তাকে গুলি করে হত্যা করা উচিত। আমাদের আইনে এই এটা স্পষ্টভাবে বলা আছে,' এমনটাই বলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার এসএম সাজ্জাত আলী বলেন।
আসলে ১০ নভেম্বর থেকে মিরপুরে ইউনূস প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের সদর দফতরের সামনে বোমা বিস্ফোরণ ঘটছে। তার ফলেই পুলিশের এমন নির্দেশ বলে মনে করা হচ্ছে।
আধিকারিকরা জানিয়েছেন, পেট্রোল বোমা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ব্যাংকের বেশ কয়েকটি শাখায়। এছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় হামলাকারীরা গত সপ্তাহে বেশ কয়েকটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। যার ফলে গাড়ির ভিতরে ঘুমিয়ে থাকা এক চালককে মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে ভারতে থাকা হাসিনা এবং তাঁর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়া তৃতীয় অভিযুক্ত ও প্রাক্তন পুলিশ প্রধান আবদুল্লাহ আল মামুন ব্যক্তিগতভাবে বিচারের মুখোমুখি হন। তিনি ক্ষমা চেয়ে হয়ে নেন।
আইসিটি-বিডির প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম রবিবার বলেন, 'আমরা হাসিনার জন্য সর্বোচ্চ সাজা চেয়েছি। আমরা গত বছরের শহীদ ও আহতদের পরিবারের মধ্যে বণ্টনের জন্য দোষীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করারও অনুরোধ করেছি।'
প্রসিকিউটররা বলেছেন যে রায়টি বাংলাদেশের বিটিভিতে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। ঢাকার একাধিক স্থানে বড় পর্দায় এটি প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে। ট্রাইব্যুনালের চূড়ান্ত অনুমোদন সাপেক্ষে শুধুমাত্র রায়ের নির্বাচিত অংশগুলোই সম্প্রচার করা হবে। রায়টি আইসিটি-বিডির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজেও প্রচার করা হবে।
তবে রাতারাতি আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজে আপলোড করা এক অডিও বার্তায় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। তিনি দলের সদস্যদের উদ্বিগ্ন না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।