প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের বাজারগুলিতে যেন আগুন জ্বলছে। মূল্যবৃদ্ধির মারে নাজেহাল আমজনতা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার সচেষ্ট হলেও সেই অর্থে সুফল মিলছে না। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের তুলনায় অগাস্টে বেশির ভাগ নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে রাজধানী ঢাকায়। বেশ কিছু পণ্য রয়েছে, যেগুলোর দাম প্রতি মাসেই দফায় দফায় বাড়ছে। পেঁয়াজ ও আদার দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ। আয়ের সঙ্গে এই বাড়তি ব্যয়ের হিসাব মেলাতে পারছে না মানুষ। দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন পণ্যের সরবরাহ কমে যাওয়া এবং উৎপাদন ও পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়া। টাকার অবমূল্যায়নের কারণেও বেশ কিছু আমদানি পণ্যের দাম বেড়ে গেছে দেশটিতে।
কয়েকদিন আগেই লঙ্কার দামে চোখে জল চলে এসেছিল সাধারণের। বাংলাদেশে প্রতি কেজি লঙ্কা বিক্রি হয়েছে হাজার থেকে বারোশো টাকায়। তবে লঙ্কার ঝাঁজ কিছুটা কমলে এবার বাজার কাঁপাচ্ছে ডিম ও ডাব। বাজারগুলোতে ডিমের দাম দুই সপ্তাহ ধরে লাফিয়ে বাড়ছে। ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা প্রতি পিস দরে। এক হালি (৪টি) বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। গত সপ্তাহেও ডিম বিক্রি হয়েছে ১১ থেকে ১২ টাকায়। এছাড়া, দেশি মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকা ডজন দরে। হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়। সোনালি মুরগির ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা করে। আর ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। শুধু তাই নয়, পেঁয়াজ-রসুনের দামও বেড়েছে। গত সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ ছিল ৬৫ টাকা কেজি। এখন ৮০ টাকা কেজি। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।
ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা এবং সোনালি মুরগি ৩০০ থেকে ৩১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি ও খুচরা ডিম ব্যবসায়ীরা বলছেন, মাছ-মাংস বাড়তি দামে বিক্রি হওয়ার কারণে ডিমের ওপর চাপ বেড়েছে। এতে চাহিদাও খুব বেড়ে গেছে। এর মধ্যে টানা কয়েক দিনের বৃষ্টির কারণে ডিম সংগ্রহ ও সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
ডবল সেঞ্চুর হাঁকিয়েছে ডাবও। রাজধানী ঢাকায় বড় সাইজের ডাব বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা করে। এছাড়া ছোট সাইজের ডাব ১৩০ টাকার কমে মিলছে না। বিক্রেতাদের দাবি, দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতির জন্য রোগীর অন্যতম পথ্য ডাবের চাহিদা বেড়েছে। আর এতে ডাবের বাজারে সরবরাহ সংকট তৈরি হয়েছে।
শুধু পেঁয়াজ, ডাব আর ডিম নয়, বেশির ভাগ খাদ্যপণ্যের জন্য এখন বাড়তি দাম দিতে হচ্ছে। দেশটিতে দেশি ভাল মানের রসুন বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি। আর মাঝারি মানের রসুন বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৭০ টাকা কেজি। ছোট কোয়া রসুন বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৫০ টাকা কেজিতে।
জানা গিয়েছে, বাজারে প্রতি কেজি আলু ৪০ টাকা, ঝিঙে ৬০, ঢেঁড়স ৪০, পেঁপে ৪০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। কুমড়ো বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায় (কাটা পিস), ফুলকপি ৫০, মূলো ৫, চাল কুমড়ো প্রতি পিস ৫০ টাকা, শিম ২০০ টাকা কেজি, লম্বা বেগুন ৮০ টাকা থেকে কমে ৬০ টাকা, ধনেপাতা ১৬০ টাকা কেজি, বাঁধাকপি ৬০ টাকা পিস দরে বিক্রি হচ্ছে। বড় চিংড়ির কেজি ৮০০ টাকা। ছোট চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা কেজিতে। ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে মাঝারি মানের পাবদা। রুইয়ের কেজি ৩৫০ টাকা, টেংরা ৫০০ টাকা। খাসির মাংস ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।