
সোমবার গভীর রাতে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে একটি হিন্দু পরিবারের বাড়িতে আগুন লাগানোর অভিযোগ উঠেছে। হামলার পর ঘটনাস্থল থেকে একটি হুমকি পোস্টারও উদ্ধার হয়েছে। যেখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর প্রকাশ্যে হামলা করার কথা বলা হয়েছে। এই ঘটনায় এলাকা জুড়ে আতঙ্ক ও উত্তেজনার পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
স্থানীয়দের মতে, সোমবার গভীর রাতে রাউজান উপজেলার সুলতানপুরের পশ্চিম বণিক পাড়ায় এই হামলার ঘটনাটি ঘটে। অত্যাচারিত পরিবারের সদস্য বাবু শুকুশীল জয়ন্তি সংঘের একজন সদস্য। হামলাকারীরা বাবু শুকুশীলের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়, ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়। ভিতরে থাকা সমস্ত জিনিসপত্রে আগুন ধরিয়ে দেয়। এমনকী পোষ্য প্রাণীগুলিকেও জ্যান্ত জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে নৃশংস ভাবে।
প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, ওই পরিবারের সদস্যরা বেড়া ভেঙে কোনওমতে প্রাণ হাতে নিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। তারা সময়মতো বেরিয়ে আসতে না পারলে মারাত্মক কোনও ঘটনা ঘটে যেত। হামলার কিছুক্ষণ পরই ঘটনাস্থলের কাছে বাংলায় হাতে লেখা একটি পোস্টার পাওয়া গিয়েছে। পোস্টারে লেখা ছিল, 'হিন্দুদের জন্য সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি। এই এলাকার হিন্দু বাসিন্দাদের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ইসলাম ও মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে কাজ করছে তারা।'
হুমকি বার্তায় হিন্দু বাসিন্দাদের চলাফেরা, কার্যকলাপ এবং জমায়েত অবিলম্বে বন্ধ করার কথা বলা হয়েছে। যদি এমনটা না করা হয়, তাহলে ভয়াবহ পরিণতি হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়। পোস্টারে স্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে, বাড়িঘর, দোকান এবং সম্পত্তি টার্গেট করা হবে। সঙ্গে লেখা হয়, 'কেউ তোমাদের বাঁচাতে আসবে না।' এই হুমকি বার্তাকে চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি হিসেবে বর্ণনা করা হয়। এই হুমকির বিরোধিতা করলেই কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।
পোস্টারে বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং সক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলিকেও টার্গেট করে দাবি করা হয়েছে, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এই ধরনের অশান্তির মূলে। এই ঘটনা এবং হুমকি পোস্টারের পর এলাকায় ভয় ও আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা অবিলম্বে অপরাধীদের গ্রেফতার এবং কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছে।
গত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে চট্টগ্রাম অশান্ত হয়ে রয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের অভিযোগ, ইচ্ছাকৃত ভাবে তাদের টার্গেট করা হচ্ছে।