বর্তমানে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে রয়েছে চাপা উত্তেজনা। এমনকী বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচার নিয়ে একাধিক অভিযোগ উঠছে। আর এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে গিয়ে একবারে উল্টো সুর পশ্চিমবঙ্গের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের। তাঁর সাফ দাবি, বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বেশ ভালো। এখানে হিন্দু ও মুসলমান মিলেমিশেই রয়েছে।
এখানেই থেমে না থেকে তিনি বলেন, 'এখানে হিন্দুদের উপর অত্যাচার করা হয় বলে যে প্রচার চলে, সেটা একবারেই মিথ্যে। এখানে সুন্দরভাবে দুর্গাপুজো হয়।'
এছাড়াও তিনি জানান, কক্সবাজারে গিয়েছিলেম। সেখানেও পুজো হয়। ঢাকাতেও পুজো হয় দেখলাম। পদ্মা সেতু ঘুরেছি, বোটেও ঘুরেছি।
আর তাঁর এই ধরনের মন্তব্যে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। ক্ষোভ তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলের একাংশের মধ্যে।
যতদূর খবর, ৩ দশক পর আবার বাংলাদেশ গিয়েছেন হুমায়ুন কবীর। সেখানে তিনি খোশ মেজাজেই কাটাচ্ছেন সময়। তিনি সেখানে গিয়ে একাধিক ছবিও পোস্ট করছে। কখনও তিনি মৈত্রী এক্সপ্রেসের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি দিচ্ছেন তো, কখনও আবার কক্সবাজের দারুণ মেজাজে দেখা যাচ্ছে তাঁকে।
কী বলছে রাজনৈতিক মহল?
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক খুবই খারাপ। সেই দেশে গণঅভ্যুথ্থান শেষে অন্তবর্তী ইউনূস সরকারের সঙ্গে সাপে নেইলে অবস্থা ভারতের। মাঝে মধ্যেই কোনও না কোনও বিষয় নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বিতর্ক চলছে।
বিশেষত, ভারতের পক্ষ থেকে বারবার অভিযোগ করা হয়েছে যে সে দেশে মুসলমানদের অত্যাচারে হিন্দুরা অতিষ্ট। রোজই সেখানে হিন্দুদের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। ধর্মান্তকরণের জন্য দেওয়া হচ্ছে চাপ। এমনকী কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রাণেও মেরে ফেলা হচ্ছে তাদের।
যদিও কোনও দিনই এই অভিযোগ মানতে চায়নি বাংলাদেশ সরকার। তারা বারবারই এই ধরনের প্রচারকে ভিত্তিহীন বলে দাগিয়ে দিয়েছেন। উল্টে শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য করা হচ্ছে জোর দিচ্ছে।
আর এমন পরিস্থিতিতে হুমায়ুন কবীরের এই ধরনের বক্তব্য যে ভারতের বিপক্ষে গেল, সেটা বলাই বাহুল্য। আর ইতিমধ্যেই এই বিষয়টা নিয়ে তৃণমূলকে জোর খোঁচা দিয়েছে বিরোধী দলেরা। তবে হুমায়ুনকে নিয়ে এখনও মুখ খোলেনি তৃণমূল।
আসলে দীর্ঘদিন ধরেই হুমায়ুনকে নিয়ে সমস্যায় রয়েছে তৃণমূল। বারবার দলের লাইনের বাইরে গিয়ে কথা বলেছেন তিনি। যার ফলে দলের তরফে এসেছে হুঁশিয়ারি। যদিও হুমায়ুন রয়েছে হুমায়ুনেই। আর সেটা আরও একবার প্রমাণিত।