খাদ্যশস্যের ঘাটতি ও ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধির মধ্যে বাংলাদেশের এখন একমাত্র ভরসা ভারত। ভারতের সঙ্গে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার খাদ্য নিরাপত্তার জন্য ভারতের দিকে তাকিয়ে আছে। কয়েকদিন আগে জানা গিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার ভারত থেকে ৫০ হাজার টন চাল কিনবে। সেই মতোই বৃহস্পতিবার ভারত থেকে বাংলাদেশে ৭০০ টন চাল গেছে। শেখ হাসিনার অভ্যুত্থান এবং মহম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম ভারত থেকে চালের চালান জাহাজে করে বাংলাদেশে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের স্থানীয় সংবাদপত্র সূত্রে খবর, স্থানীয় বাজারে খাদ্যশস্যের ঘাটতি মেটাতে বাংলাদেশ ভারত থেকে চাল কিনেছে যা বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রকের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতীয় জাহাজ এমভি তানাইস ড্রিম চালের চালান নিয়ে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বন্দরে পৌঁছবে।
শেখ হাসিনার আমলে ভারত-বাংলাদেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। জুলাই-অগাস্টে ছাত্র আন্দোলনের কারণে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এরপর শেখ হাসিনা ভারতে আসেন। নোবেলজয়ী মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করে। নতুন সরকার আসার পর থেকে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক টানাপোড়েন চলছে, যার প্রভাব দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যেও পড়েছে। বাংলাদেশ তার ঐতিহাসিক শত্রু পাকিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্ব বাড়াচ্ছে। ভারত থেকে ক্রমশ দূরে সরাচ্ছে সম্পর্ক। একটি সূত্রে খবর মিলেছিল, বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের পাকিস্তান থেকে পণ্য কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে।
চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ ভারত থেকে চাল কিনেছে
গত ১১ নভেম্বর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চাল কেনা সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির আওতায় ভারত থেকে চালের প্রথম চালান বাংলাদেশে আসছে।
এর আগে বাংলাদেশের স্থানীয় পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, দেশে খাদ্যশস্যের ঘাটতির পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকার ভারত থেকে ৫০ হাজার টন চাল কিনতে চলেছে। সরকারি খাদ্য বিতরণ কর্মসূচির জন্য এই চাল কেনা হবে বলে জানানো হয়। দেশে ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকার দরিদ্রদের ত্রাণ দিতে সরকারি খাদ্য বিতরণ কর্মসূচির ওপর জোর দিচ্ছে।
বাংলাদেশ খাদ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত, বাংলাদেশে ১১.৪৮ লক্ষ টন খাদ্যশস্য ছিল, যার মধ্যে প্রায় ৭.৪২ লক্ষ টন চাল ছিল। সরকার চলতি অর্থবছরে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৬.২৫ লক্ষ টন খাদ্যশস্য ক্রয় করেছে, যার মধ্যে ৫৪.১৭০ টন চাল। বাংলাদেশ সরকার ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ২০.৫২ লক্ষ টন খাদ্যশস্য বিতরণের পরিকল্পনা করেছে।