বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন তথা মুক্তিযুদ্ধের (Bangladesh Muktijuddho) ৫০ বছর পূর্তি। ১৯৭১ সালে এই দিনেই তৎকালিন পশ্চিম পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণ থেকে বেরিয়ে স্বাধীনতা পায় সেই সময়ের পূর্ব পাকিস্তান তথা বর্তমান বাংলাদেশ। প্রতিবেশী রাষ্ট্রের এই স্বাধীনতা আন্দোলনে ভারতের ভূমিকার কথা নতুন করে বলার কিছু নেই। এককথায় বলতে গেলে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পাক সেনার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। কিন্তু কী এমন পরিস্থিতি তৈরি হয় যার জেরে বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে হয় ভারতকে?
ভারতে হামলা চালায় পাকিস্তান
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বলছে ১৯৭১-এর ৩ ডিসেম্বর ভারতে বিমান হামলা চালায় পাকিস্তান (Pakistan)। সেই সময় কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে বক্তব্য রাখছিলেন ভারতের তৎকালিন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী (Indira Gandhi)। সেই সময়ই ভারতের বিভিন্ন বিমান ঘাঁটিতে হামলা চালায় পাক বায়ু সেনা। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিচার করে অবিলম্বে দিল্লি ফিরে যান ইন্দিরা। মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক সেরে মধ্যরাত্রের কিছুটা পরে তিনি রেডিওতে ঘোষণা করেন, "বাংলাদেশে যে যুদ্ধ চলে আসছিল, তা ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পরিণত হয়েছে।"এরপরেই পাকিস্তানের হামলা প্রতিহত করতে শুরু করে ভারত। ভারতের সামরিক বাহিনী ও মুক্তিবাহিনী একসঙ্গে যৌথবহিনী তৈরি করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে।
স্বাধীনতা পেল বাংলাদেশ
যৌথবাহিনীর প্রবল আক্রমণের মুখে পড়ে পিছু হঠতে শুরু করে পাক সেনা। একের পর এক পাক ঘাঁটির পতন হতে থাকে। এমনকী বাংলাদেশের (Bangladesh) পূর্ব পাকিস্তানের বেশিরভাগ মানুষও স্বতঃস্ফূর্তভাবে মুক্তিবাহিনীর পাশে দাঁড়ায়। মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই ঢাকায় পৌঁছে যায় মুক্তিবাহিনী। অন্যদিকে লাগাতার বিমান হামলা চালিয়েও পাক বাহিনীকে পর্যদুস্ত করা হয়। তাছাড়া মুক্তি বাহিনীর গেরিলা আক্রমণও রুখতে ব্যর্থ হয় পাকিস্তান। ফলে সবদিক থেকে একেবারে কোণঠাসা হয়ে পড়ে পাক বাহিনী। ঢাকাকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণের রাখতে ব্যর্থ হয় তারা। যার ফলস্বরূপ ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তান। ৯ মাসের এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের শেষে গড়ে ওঠে স্বাধীন বাংলাদেশ।