বাংলাদেশে সন্ত্রাসের অভিযোগে একাধিকবার নিষিদ্ধ ঘোষণা হয়েছিল ইসলামি ছাত্রশিবির। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির ছাত্র সংগঠন বলে পরিচিত তারা। সেই কট্টরপন্থী ইসলামিক ছাত্র শিবিরই বিপুল ভোটে জিতল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নির্বাচনে। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, মহম্মদ ইউনূসের জমানায় খোলা ছাড় পেয়েছে কট্টরপন্থীরা। এই নির্বাচনের ফলাফল তাই প্রমাণ করল।
বাংলাদেশের সংবাদপত্র 'প্রথম আলো' তে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ভিপি, জিএস ও এজিএস এবং ১২টি সম্পাদক পদের মধ্যে ৯টিতে জয় পেয়েছেন ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত 'ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের' প্রার্থীরা। ভিপি বা সহসভাপতি পদে জিতেছেন আবু সাদিক কায়েম। জিএস বা সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এস এম ফরহাদ। এজিএস বা সহসাধারণ সম্পাদক পদে শিবিরের মহিউদ্দিন খান।
যদিও এই ভোটে কারচুপির অভিযোগ করেছিলেন নির্দল শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা। মঙ্গলবার রাতেই ভোটে কারচুপির অভিযোগ আনেন তিনি। জানান, এই ভোটে প্রশাসন ও শিবির মিলে কারচুপি করছে। প্রকাশ্যে তা চলছে। অথচ সবাই নীরব। তিনি ফেসবুক পোস্টে লেখেন, 'সম্পূর্ণ নির্লজ্জ কারচুপির নির্বাচন। ৫ আগস্টের পরে জাতিকে লজ্জা উপহার দিল ঢাবি প্রশাসন। শিবির পালিত প্রশাসন।' উমামার আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছিলেন আর এক ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি বরাবরই কট্টরপন্থী রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত। তাদের ছাত্র সংগঠন ইসলামি ছাত্র শিবির হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে অগাস্ট আন্দেোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। যদিও আন্দোলন শুরু হওয়ার সময়ই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জামায়াতে ইসলামি ও ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। তবে মহম্মদ ইউনূসের অন্তর্বতী সরকার ক্ষমতায় আসার পরই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনেও জামাত শিবির প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অথচ এই জামাত শিবির ও তাদের ছাত্র সংগঠন মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানকে সমর্থন করেছিল। বহু নেতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের নাগরিকদের হত্যার অভিযোগও ওঠে। সেই সময় নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় তাদের। তবে ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার পর জামাতের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। শেখ হাসিনার আমলের অনেকটা সময় এই দল নিষিদ্ধ ছিল বাংলাদেশে।