
যত কাণ্ড বাংলাদেশে। আরও একবার সেই দেশে উগ্র ইসলামপন্থীদের হামলা শিল্প ও সংস্কৃতির উপর। এবার বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পী রকস্টার জেমস-এর ফরিদপুরের কনসার্টে হামলা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। তাদের মূল দাবি ছিল কোনও ধরনের সঙ্গীত অনুষ্ঠান বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না।
হামলাকারীরা অনুষ্ঠান বাতিলের জন্য ইট, পাটকেলও ছোড়ে। যার ফলে অন্তত ২০ জন আহত হন। আর এই ২০ জনের মধ্যে অধিকাংশই পড়ুয়া। এমন পরিস্থিতিতে শেষমেশ বাতিল করা হয় কনসার্ট।
কী অনুষ্ঠান?
ফরিদপুর জেলা স্কুলের ১৮৫তম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান ছিল। সেই কারণেই আয়োজন করা হয়েছিল অনুষ্ঠান। জনপ্রিয় রকস্টার জেমসের ব্যান্ডের পারফর্ম করার কথা ছিল শেষে। তবে কিছু বহিরাগত চরমপন্থী ইসলামীরা এই অনুষ্ঠান বাতিল করে দেওয়ার দাবি জানায়। তারা হামলা চালায় অনুষ্ঠানে। ছোড়া হয় ইঁট। যার ফলে কনসার্ট বাতিল করতে বাধ্য হন উদ্যোক্তারা। অল্পের জন্য রক্ষা পান জেমস।
স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে খবর, শুক্রবার রাত ৯টা ৩০ নাগাদ স্কুল প্রাঙ্গণে জেমস নিজের অনুষ্ঠান শুরু করবেন বলে ঠিক ছিল। কিন্তু তাঁর পারফর্ম্যান্সের আগেই সেখানে একদল বহিরাগত উপস্থিত হয়। তারা অনুষ্ঠানস্থলে জোর করে ঢুকে পড়তে চায়। এই সময় নিরাপত্তারক্ষীরা তাদের বাধা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে তারা ইট ছুড়তে শুরু করে। পাশাপাশি মঞ্চ দখল করে নেওয়ার চেষ্টাও করে তারা।
এই সময় নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে আয়োজক এবং পড়ুয়ারা হামলাকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। যার ফলে পরিস্থিতি আরও অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। আহত হয় একাধিক পড়ুয়া।
এমন পরিস্থিতিতে কোনও গতি না দেখে কনসার্ট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেন আয়োজকরা। আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ডঃ মোস্তাফিজুর রহমান রাত ১০টা নাগাদ এই অনুষ্ঠান বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। মূলত আইনশৃঙ্খলার বজায় রাখার স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
আয়োজকরা কী জানান?
এই অশান্তি নিয়ে মুখ খুলেছেন আয়োজকরা। তাঁদের পক্ষ থেকে পাবলিসিটি ও মিডিয়া সাব কমিটির কনভেনর রাজিবুল হাসান খান সমকালকে জানান, এই অনুষ্ঠান আয়োজনের সবরকম ব্যবস্থাই করা ছিল। তবে কারা এই হামলা করেছে এবং কেন করেছে, সেটা বোঝা যাচ্ছে না। ইটের আঘাতে ১৫ থেকে ২০ পড়ুয়া আহত হয়েছে।
তিনি আরও জানান, জেলা অধিকারিকরাই তাদের কনসার্ট বন্ধ করার পরামর্শ দিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্যই এমন পদক্ষেপ।