লালচাঁদ ওরফে সোহাগকে ভরা রাস্তায় পিটিয়ে থেঁতলে খুনের পর রাজনৈতিক নাটক শুরু হয়ে গিয়েছে বাংলাদেশে। এক গত বুধবার ঢাকায় মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে যা ঘটেছে, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক হিংসাত্মক ঘটনাগুলির মধ্যে অন্যতম নৃশংস। বাংলাদেশে নির্বাচন যখন আসন্ন, ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলি নির্বাচনী কার্যকলাপ শুরু করে দিয়েছে, তখন লালচাঁদকে খুন করার ঘটনা বারবার প্রশ্নের মুখে ফেলছে দেশটির আইন-শৃঙ্খলাকে।
লালচাঁদ ওরফে সোহাগকে কীভাবে খুন করা হয়েছে? ঘটনাটি ঠিক কী?
গত বুধবার অর্থাত্ ৯ জুলাই ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয় লালচাঁদ ওরফে সোহাগ নামে এক ব্যক্তিকে। তারপর থেকেই এই হত্যাকাণ্ড ঘিরে বিতর্ক ঘনিয়েছে। ঘটনায় আঙুল উঠেছে বিএনপির যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীদের দিকে। প্রয়াত লালচাঁদের বোনের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগে ১৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, লালচাঁদকে নৃশংস ভাবে মারধর করা হয়। তারপর ইট মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। থেঁতলে দেওয়া হয় শরীরের নানা অংশ। খুলে দেওয়া হয় পোশাকও। ঘটনার ভিডিও ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা গিয়েছে, ঢাকায় রজনী ঘোষ লেনে কয়েকজন ব্যক্তি এক ব্যক্তিকে কংক্রিটের ইট দিয়ে মারছে এবং মৃত্যুর পর তাঁর দেহের উপর দাঁড়িয়ে নাচছে।
লালচাঁদের মৃত্যু ঘিরে কী ধরনের রাজনৈতিক 'খেলা' চলছে
লালচাঁদের হত্যায় খালেদা জিয়ার বিএনপি-র কিছু নেতা-কর্মীর দিকে অভিযোগের আঙুল উঠছে। বিএনপি জানিয়েছে, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে দলের ৫ জন নেতাকে বহিষ্কারও করা হয়েছে। ঠিক এখানেই রাজনীতির খেলা। এখন দেখা যাচ্ছে, বিএনপি ড্যামেজ কন্ট্রোলের জন্য বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের 'স্ক্রিপ্ট' লিখছে।
বিএনপি-র বক্তব্য, জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশকে বিঘ্নিত করার চেষ্টা চলছে। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম 'প্রথম আলো'-র খবর অনুযায়ী, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলের দাবি, 'পরিকল্পিতভাবে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য এই হত্যাকাণ্ড রাজনৈতিক অভিসন্ধি বাস্তবায়নে ব্যবহার করা হচ্ছে।' তাঁর প্রশ্ন, কেন কোনও মানুষ, এমনকী পুলিশ কাছাকাছি থাকলেও কেউ বাঁচাতে গেল না। কারণ লালচাঁদ মৃত্যুর ঘটনার প্রসঙ্গের মধ্যেই আবার তারেক রহমানের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের প্রতিবাদ, নিন্দা ও ঘৃণাও প্রকাশ করলেন।
আসলে শুধু লালচাঁদ মৃত্যু নয়, মহম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে সার্বিক ভাবে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কতটা শোচনীয় অবস্থা, তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে বাংলাদেশের নাগরিকরা।