Advertisement

Bangladesh Crime: ইউনূসের বাংলাদেশে কত অরাজকতা? গত ১০ মাসে খুন-ধর্ষণের সংখ্যাটা বিস্ময়কর

ব্যবসায়ী লালচাঁদ সোহাগের মৃত্যু ঘিরে ক্ষোভে ফুঁসছে বাংলাদেশ। নৃশংসভাবে লালচাঁদের হত্যার প্রতিবাদে পথে নেমে বিক্ষোভ করেছেন পড়ুয়ারা। অপরাধ রুখতে একেবারে ব্যর্থ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, এমনটাই মত প্রতিবাদীদের। এর মাঝেই ইউনূস সরকারকে আরও অস্বস্তিতে ফেলে দিল বাংলাদেশ পুলিশের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান।

বাংলাদেশে গত ১০ মাসে বেড়েছে  খুন-নৃশংসতাবাংলাদেশে গত ১০ মাসে বেড়েছে খুন-নৃশংসতা
Aajtak Bangla
  • ঢাকা,
  • 15 Jul 2025,
  • अपडेटेड 1:27 PM IST

ব্যবসায়ী লালচাঁদ সোহাগের মৃত্যু ঘিরে ক্ষোভে ফুঁসছে বাংলাদেশ। নৃশংসভাবে লালচাঁদের হত্যার প্রতিবাদে পথে নেমে বিক্ষোভ করেছেন পড়ুয়ারা। অপরাধ রুখতে একেবারে ব্যর্থ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, এমনটাই মত প্রতিবাদীদের। এর মাঝেই ইউনূস সরকারকে আরও অস্বস্তিতে ফেলে দিল বাংলাদেশ পুলিশের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত ১০ মাসে বাংলাদেশে  ৩ হাজার ৫৫৪টি খুন, ১২ হাজার ৭২৬টি নারী ও শিশু নির্যাতন, ৪ হাজার ১০৫ধর্ষণ, ৮১৯ অপহরণ এবং ৯৭টি দাঙ্গার ঘটনা ঘটেছে। সেইসঙ্গে  ১ হাজার ৭৩০টি চোরাচালান, ১ হাজার, ৬১০টি ডাকাতি, ৩৮ হাজার ১৭৬টি মাদকদ্রব্য সংক্রান্ত অপরাধ এবং ৭ হাজার ৩১০টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় মোট ১ লাখ ৪৪ হাজার ৯৫৫টি মামলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বুধবারের ঘটনা। ঢাকার ভরা রাস্তায় পাথর দিয়ে থেঁতলে মারা হয় এক ব্যবসায়ীকে। ঘণ্টাখানেক তাণ্ডব চললেও ওই ব্যবসায়ীকে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসেনি। শুধু এই ঘটনা নয়। গত এক বছরে বাংলাদেশজুড়ে একের পর এক অপরাধের ঘটনা সামনে এসেছে। অত্যাচার বেড়েছে সংখ্যালঘুদের উপর। গত বছরের অগাস্ট থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত সারা দেশে ১ লক্ষ ৮ হাজারের বেশি অপরাধের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৩৫০৪টি খুন। পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে ১০ জন খুন হয়েছে। মহিলা ও শিশুদের উপর অপরাধের সংখ্যাও ক্রমশ বাড়ছে। এছাড়া গত বছরের অগাস্ট থেকে ১৫৮৭টি লুট, ৬৪৭টি ডাকাতি হয়েছে। পুলিশ বেশিরভাগ ঘটনাকেই ‘অন্যান্য অপরাধ’ বিভাগে নথিভূক্ত করায় বিভিন্ন অপরাধের হিসেব পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হতেই ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমেছে মহম্মদ ইউনূসের তত্ত্বাবধায়ক সরকার। সোমবার পরিসংখ্যান দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং বিবৃতি জারি করে দাবি করেছে, বাংলাদেশে অপরাধের সংখ্যা তেমন বাড়েনি। বিভিন্ন সংবদ মাধ্যমে যে দাবি করা হচ্ছে, তাতে সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত সরকারি অপরাধ পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছর বড় ধরনের অপরাধের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে-এমন দাবি ঠিক নয়। ওই পরিসংখ্যানের কয়েকটি তথ্যেও ইউনুসের সরকারের দাবি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দেখা যাচ্ছে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশে ৪৯০টি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছিল। আর চলতি বছরের প্রথম ছ’মাসেই ৩৬৭টি ডাকাতি হয়েছে। ১০ মাসে খুন হতে হয়েছে ১৯৩৩ জনকে।

Advertisement

বাংলাদেশে অপরাধপ্রবণতার এই তথ্য সোমবার প্রকাশ করেছে  প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পুলিশ সদর দফতরের তথ্য অনুযায়ী, ‘গত ১০ মাসে বড় ধরনের অপরাধের প্রবণতা স্থিতিশীল রয়েছে।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘চলতি বছর দেশে অপরাধের হার উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে-বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত এমন খবরে জনমনে আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি হয়েছে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত সরকারি অপরাধ পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছর বড় ধরনের অপরাধের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে-এমন দাবি সঠিক নয়।’ পুলিশ সদর দফতর যে তথ্য দিয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৬ মাসে ১ হাজার ৯৩৩টি খুন, ২ হাজার ৭৪৪টি ধর্ষণ, ৫১৭টি অপহরণ এবং ৩৬৭টি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এর আগে ২০২৪ সালে সারা বছরে ৪ হাজার ১১৪টি খুন, ৪ হাজার ৩৯৪টি ধর্ষণ, ৬৪২টি অপহরণ এবং ৪৯০টি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছিল। 

প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে বলা হচ্ছে, ‘পরিসংখ্যানে বড় ধরনের অপরাধ দ্রুত বাড়ার কোনও লক্ষণ নেই। বাস্তবে বেশির ভাগ গুরুতর অপরাধের হার কমছে বা একই পর্যায়ে রয়েছে। তবে কিছু নির্দিষ্ট অপরাধের ক্ষেত্রে সামান্য বৃদ্ধির প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে।’

পরিসংখ্যানে বড় ধরনের অপরাধ দ্রুত বাড়ার কোনও লক্ষণ নেই বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।  প্রেস উইং নাগরিকদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপরও বিশ্বাস রাখতে হবে। কারণ, অপরাধের হার মোটামুটি স্থিতিশীল, যাতে বোঝা যায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।

যদিও বাংলাদেশ পুলিশের ঘোষিত পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে মহম্মদ ইউনূসের বিগত দশ-সাড়ে দশ মাসের শাসনামলে বাংলাদেশ খুনি, ধর্ষকদের মরুদ্যানে পরিণত হয়েছে। সমাজমাধ্যমে বহু মানুষ বলছেন, বাড়ি থেকে বের হতে ভয় করে। প্রাণ নিয়ে ফিরতে পারব কিনা সর্বদা সেই চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খায়। বহু মহিলা লিখেছেন, ধর্ষকেরা চারপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশ নির্বিকার। কেউ তির্যক মন্তব্য করেছেন, খুন-ধর্ষণে বাংলাদেশ বিশ্বে এক নম্বর। চরম আতঙ্কে দিন কাটছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের। গত বছরের ৪ অগাস্ট থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ৩৩০ দিনে সংখ্যালঘু, বিশেষ করে হিন্দুদের উপর হামলার ২,২৪৪টি ঘটনা ঘটেছে বলে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের দাবি। অর্থাৎ দিনে সাতটির বেশি হামলার ঘটনা ঘটেছে। নিহত হয়েছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৫০ জন। এছাড়া ধর্ষণ, গণ ধর্ষণের একাধিক ঘটনা তো আছেই।
 

Read more!
Advertisement
Advertisement