বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার উত্তরার স্কুলে বিমান ভেঙে পড়ার ঘটনায় বহু পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল বাংলাদেশ। দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়াল সচিবালয়ের সামনে। পুলিশ ও জনতার খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায়। কাঁদানে গ্যাসের সেল ছোড়ে পুলিশ। চলে ভাঙচুরও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও সেনা যৌথভাবে লাঠিচার্জ শুরু করে। সংবাদ মাধ্যম 'প্রথম আলো'-তে প্রকাশ এর ফলে ৭৫ জন জখম হয়েছেন। তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের 'প্রথম আলো'-তে প্রকাশিত খবর অনুসারে, সোমবার ঢাকার স্কুলে বিমান ভেঙে পড়ার পর থেকেই সরকারের উপর অসন্তোষ বাড়ছিল সেই দেশের আম-জনতার। ঢাকার মতো জনবহুল এলাকায় কেন বিমানের প্রশিক্ষণ চলছিল? সেই প্রশ্ন সরব হয়েছিলেন অনেকে। কেউ কেউ আবার মৃত্যুর সংখ্যা গোপন করার অভিযোগও করেছিলেন ইউনূস প্রশাসনের বিরুদ্ধে। তবে সরকারের তরফে এসবের পাল্টা কোনও বিবৃতি জারি করা হয়নি। ফলে ক্ষোভ বাড়তে থাকে। মঙ্গলবার সকালে তার জেরে রাস্তায় নেমে আসেন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা।
এদিন সকালে ঢাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান ফটকের বাইরে বিক্ষোভ শুরু করেন শয়ে শয়ে পড়ুয়া। তার জেরে ভিতরে আটকে পড়েন উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ নিয়ে নির্দিষ্ট কর্মসূচি থাকলেও পুলিশের তরফে জানানো হয়, দিয়াবাড়ি গোলচত্বর ও আশপাশের এলাকায় কোনও ধরনের জমায়েত বা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা যাবে না। কিন্তু সরকারের এই নির্দেশ মানতে রাজি হননি প্রতিবাদীরা। তাঁরা মাইলস্টোন স্কুলের বাইরে শুয়ে পড়েন। তখনই পুলিশের সঙ্গে সংঘাত অবশ্যম্ভবী হয়ে ওঠে।
আন্দোলনকারীরা বেশ কয়েকদফা দাবি করেন। তার মধ্যে অন্যতম ছিল-মৃতদের সঠিক সংখ্যা প্রকাশ, নিহতদের পরিচয় প্রকাশ, ঝুঁকিপূর্ণ ও পুরোনো প্রশিক্ষণ বিমান বাতিল করে আধুনিক ও নিরাপদ বিমান চালু ইত্যাদি। এই দাবিদাওয়া নিয়ে দুই উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করতে যান শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল। তবে তারপরও পরিস্থিতি শান্ত হয়নি। আন্দোলন চলতে থাকে।
এদিকে ছাত্র-ছাত্রীদের একটা অংশ বিকেলে সচিবালয় ঘেরাও করেন। তাঁদের অভিযোগ, বিমান দুর্ঘটনার পর আচমকা এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। শিক্ষা উপদেষ্টা ও শিক্ষাসচিবের পদত্যাগের দাবিতে সরবও হন তাঁরা। সচিবালয়ের ভিতরে প্রবেশের চেষ্টাও করেন। তখনই উত্তেজনা ছড়ায়। সেখানে আগে থেকে মোতায়েন সেনাকর্মী ও পুলিশ লাঠি চালায়। অভিযোগ, শিক্ষার্থীরা অনেক গাড়িতে ভাঙচুর চালান। পুলিশকে ধাওয়া করেন।
এদিকে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে রণেভঙ্গ দিতে নামে সেনা। তখন পুলিশ ও সেনাকর্মীরা পাল্টা ধাওয়া করেন ছাত্রদের। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ শুরু হয়। ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের সেল। তার জেরে প্রায় ৭৫ জন জখম হন। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।