ভারতের সঙ্গে উত্তেজনার মাঝে দিনদিন জোরালো হচ্ছে বাংলাদেশ- পাকিস্তান সম্পর্ক। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল কামার-উল-হাসানের ইসলামাবাদ সফর শেষে পাকিস্তান আইএসআই-এর একটি উচ্চপর্যায়ের দল ঢাকায় পৌঁছেছে। এরপর পাকিস্তানের চার সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের সামরিক প্রতিনিধি দল মঙ্গলবার সন্ধেয় তিন দিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছেছে বলে সূত্রের খবর।
বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর ৬ জন সেনাকর্তার প্রতিনিধি দল কোনও ঘোষণা ছাড়াই ৬ দিনের পাকিস্তান সফর সেরে শনিবার ঢাকায় ফিরে যায়। এর মধ্যে মেজর জেনারেল শহীদ আমির আফসারও রয়েছেন, যিনি চিনে পাকিস্তানের সামরিক কূটনীতিক ছিলেন। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন দুই ব্রিগেডিয়ার আলম আমির আওয়ান ও মুহাম্মদ উসমান জাতিফ।
যদিও কিছু প্রতিবেদনে আইএসআই ডিরেক্টর জেনারেল লেফটেন্যান্ট মহম্মদ আসিম মালিকের সফরকে অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, তবে তিনি পাকিস্তানের উচ্চ পর্যায়ের আইএসআই দলের অংশ নন। আইএসআই কর্মকর্তারা ২১ জানুয়ারি এমিরেটসের ফ্লাইট ইকে-৫৮৬-এ ঢাকায় পৌঁছেছিলেন। ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশে থাকবেন। কয়েক দশকের মধ্যে এই প্রথম দুই দেশের মধ্যে এতটা ঘনিষ্ঠতা দেখা যাচ্ছে। দু’দেশের সরকারি মাধ্যমে এই সফর নিয়ে কোনও কথা বলা হয়নি।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পিএসও-ও পাকিস্তান সফর করেছে
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চিফ অফ স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল কামার-উল-হাসানের সাম্প্রতিক পাকিস্তান সফরের সঙ্গে পাকিস্তানে উচ্চ পর্যায়ের সফরটি মিলছে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর হঠাৎ করেই বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক ও গোয়েন্দা সম্পর্ক জোরদার হয়েছে। এছাড়াও, পাকিস্তান আইএসআই এবং জামাতের লোকদের জন্য বাংলাদেশে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাও গত কয়েক মাসে হ্রাস পেয়েছে।
পাকিস্তানের আঞ্চলিক শক্তিকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা
বাংলাদেশে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে পালানোর পর বর্তমান অন্তর্বর্তী শাসনামলে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। যে কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় ভূ-রাজনৈতিক দৃশ্যপট পরিবর্তন হচ্ছে। পাকিস্তান তার আঞ্চলিক শক্তিকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে, যাকে সমর্থন করছে চিন।
২১-২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত সফর
২১-২৪ জানুয়ারি ঢাকায় আইএসআই এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মধ্যে আলোচনার অ্যাজেন্ডা কী হবে সে সম্পর্কে কিছুই প্রকাশ করা হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, সামরিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতা প্রতিষ্ঠার জন্যই এই সফর হতে পারে। পাকিস্তান তার ব্যক্তিগত কৌশল অনুযায়ী বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার চেষ্টা করছে।