
পাকিস্তানের সঙ্গে যে কিছু একটা ঘোঁট পাকাচ্ছে বাংলাদেশ, তার আরও একটি উদাহরণ। ইতিমধ্যেই পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে একাধিক সামরিক চুক্তি হয়ে গিয়েছে। জঙ্গিদের জন্যও দরজা খুলে দিয়েছে বাংলাদেশ। এবার পাকিস্তানের নৌসেনা প্রধান অ্যাডমিরাল নাভিদ আশরফ যাচ্ছেন ঢাকা। আগামী ৮ নভেম্বর ৪ দিনের সফরে বাংলাদেশ যাচ্ছেন পাকিস্তানের নৌসেনা প্রধান।
জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে ভারতের সাহায্যেই জন্ম নেওয়া বাংলাদেশ
গত সপ্তাহেই পাকিস্তানের সেনাকর্তা জেনারেল শাহির শমশদ মির্জা ঢাকায় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক সেরে এসেছেন। তারপরেই ঢাকায় পাকিস্তান হাইকমিশনে পাক গুপ্তচর সংস্থা ISI এর পৃথক সেল খোলা হয়েছে। পাকিস্তানের কুখ্যত জঙ্গিরা অবাধে ঘুরছে বাংলাদেশে। লস্কর ই তৈবার প্রধান হাফিজ সইদের ঘনিষ্ঠ জঙ্গিনেতা তো একের পর এক উস্কানিমূলক ভাষণ দিচ্ছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বাংলাদেশি জেলাগুলিতে। সব মিলিয়ে ক্রমেই পাকিস্তানের মতো জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে ভারতের সাহায্যেই জন্ম নেওয়া দেশ, বাংলাদেশ।
পাকিস্তান নৌবাহিনীর জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর ফেলবে
চার দিনের সফরের অংশ হিসেবে একটি পাকিস্তান নৌবাহিনীর জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর ফেলবে। এর মধ্য দিয়ে ভারতের ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী এলাকায় সামরিক সম্পর্ক গড়ে তোলার পাকিস্তানের নতুন প্রচেষ্টা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বিশ্লেষকদের মতে, বঙ্গোপসাগর অঞ্চলে চিনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের প্রেক্ষাপটে, এই সফরটি ঢাকার প্রতি ইসলামাবাদের নীরব কূটনৈতিক তৎপরতারই অংশ।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ভুলিয়ে দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চলছে
এবার পাকিস্তানের নৌসেনা প্রধানের ঢাকা সফর। তিনি বাংলাদেশের নৌসেনা প্রধান মহম্মদ নজমুল হাসান ও সেনা প্রধান ওয়াকার উজ্জামান ও বায়ুসেনা প্রধান মার্শাল হাসান মেহমুদ খানের সঙ্গে বৈঠক করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই বাংলাদেশ-পাকিস্তান কাছাকাছি আসা শুরু করে। যে পাকিস্তান মুক্তিযুদ্ধের সময় লক্ষ লক্ষ গণহত্যা, ধর্ষণ করেছিল, সেই পাকিস্তানকেই এখন তৈলমর্দন করছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের জনগণকে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ভুলিয়ে দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চলছে। এই সবই চলছে ইউনূসের কলকাঠিতে।
এখন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা দিচ্ছে পাকিস্তান
বাংলাদেশের পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইকবাল হুসেন খান তো স্পষ্টই বলে দিলেন, বাংলাদেশ, পাকিস্তান সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হবে ভবিষ্যতে। ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, 'গত ১০-১২ বছর ধরে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্ক ভাল ছিল না। কিন্তু এবার সব কিছু পরিবর্তন হচ্ছে। দুদেশের সম্পর্ক মজবুত হচ্ছে। এখন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা দিচ্ছে পাকিস্তান।'
শেখ হাসিনা এখন নির্বাসিত অবস্থায় ভারতের কূটনৈতিক আশ্রয়ে রয়েছে। বিদেশনীতি বিশেষজ্ঞ ও কূটনীতিকদের মতে, ভারতের এখন এমন এক জটিল ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি সামলাতে হচ্ছে যেখানে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিতে অস্থিরতা ও নিরাপত্তা ঝুঁকি ক্রমশ বাড়ছে। দিল্লি এই ঘটনার উপর নজর রাখছে, পাশাপাশি বাংলাদেশ সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করছে। দীর্ঘদিন ধরেই মানবপাচার, অনুপ্রবেশ ও জঙ্গি কার্যকলাপ নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারত। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ, অসম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, এই রাজ্যগুলির সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত যুক্ত, আর এই রাজ্যগুলি অতীতে বহুবার হিংসাত্মক ঘটনার সাক্ষী হয়েছে।