বাংলাদেশে ঝড় তুলে দিয়েছেন পরীমনি। কী হবে নায়িকার ভবিষ্যত? শাস্তি হলে কতদনি জেলে থাকতে পারবেন? কেন পরীমনি বেছে নিলেন এমন পথ? চায়ের কাপে ঝড় তুলছে এসব প্রশ্ন। এর মাঝে কাশিমপুরের মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিভৃতে দিন কাটছে ঢাকাই সিনেমার অন্যতম নায়িকার। আর পাঁচটা বন্দির মত থাকতে হচ্ছে তাঁকে। খাচ্ছেন বন্দিদের খাবার। গ্ল্যামারের দুনিয়া থেকে বাস্তবের একেবারে রুক্ষ্ম জমিতে এসে পড়েছেন অভিনেত্রী। তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও চলছে কাটাছেড়া। সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছিল ডিবি কর্মকর্তা গোলাম সাকলায়েনের সঙ্গে অভিনেত্রীর ঘনিষ্ঠ একটি ভিডিও। যেখানে সাকলায়েনের ঠোঁটে চুমু খেতে দেখা গেছে পরীমনিকে। নায়িকার সেই অন্তরঙ্গ ভিডিও ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। জানা গেছে পুলিশকর্তার বাড়িতে ১৮ ঘণ্টা সময় দু'জনে নিভৃতে কাটিয়েছিলেন। তবে সাকলায়েনের সঙ্গে পরীর প্রেমের বয়স কিন্তু বেশিদিনের নয়। গত জুন মাসে আশুলিয়ার বোট ক্লাবকাণ্ডে প্রভাবশালী ব্যবসায়ী-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন পরী। সেই মালার তদন্ত করতে গিয়েই সাকালায়েনের সঙ্গে পরীর ঘনিষ্ঠতা। তবে কেবল ডিবি কর্তা নন এর আগে আরও একাধিক সম্পর্কের জন্য চর্চায় ছিলেন পরীমনি। চলুন দেখে নেওয়া যাক পরীর বিয়ে ও ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের সেই তালিকা।
২০১৪ সালে সিনেমায় নায়িকা হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হয় পরীমনির। এর এক বছরের মধ্যেই ২০১৬ সালের শুরুর দিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় পরীমনির সঙ্গে দু'জনের বিয়ের খবর। এমনকি বিয়ের ছবি, কাবিননামা ও তালাকনামার ছবিও প্রকাশ পায় ফেসবুকে। ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারি সকালে একটি ফেসবুক আইডি থেকে কিছু ছবি শেয়ার করে দাবি করা হয়, পরীমনি ইসমাইল নামের এক ব্যক্তির স্ত্রী। কিছুদিন পরেই ফেসবুকে পাওয়া যায় সৌরভ কবীর নামের আরও একজনের সঙ্গে তার বিয়ের কাবিননামা এবং কিছু ঘনিষ্ঠ ছবি। এদিকে সিনেমায় নামার ঠিক আগের দুই বছর অর্থাৎ নাটকে অভিনয় করার সময় সেতু নামের এক ফটোগ্রাফারের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল। তারা দুই বছর সংসারও করেছিলেন বলে শোনা যায়। এরপর ২০১৭ সালে তামিম হাসান নামের এক এন্টাটেনমেন্ট সাংবাদিকের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে বলে খবর। বাগদানও হয়েছিল দু'জনের। তামিমকে নিয়ে বিভিন্ন দেশে ঘুরতেও গিয়েছিলেন পরী। দুই বছর প্রেমের পর ২০১৯ সালে সেই সম্পর্ক ভেঙে যায়। এরপর ২০২০ সালের ৯ মার্চ রাতে অভিনেত্রী ও পরিচালক হৃদি হকের অফিসে কাজি ডেকে তার সহকারী কামরুজ্জামান রনিকে মাত্র তিন টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেন নায়িকা পরীমনি। কিন্তু সে বিয়েও ৫ মাসের মাথায় ভেঙে যায়।
এখানেই অবশ্য থামেনি পরীর সম্পর্তের লিস্ট। শোনা যায় ব্যাঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ মামলায় পলাতক বিতর্কিত ব্যবসায়ী ও চলচ্চিত্র প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আবদুল আজিজের সঙ্গেও তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। আজিজ তাকে বিএমডব্লিউ গাড়ি উপহার দেন। এছাড়া বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন দলের এক সংসদ সদস্যের সঙ্গেও নাকি তার ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। দীর্ঘদিন পরী তার ছত্রছায়ায় ছিলেন। বিভিন্ন কারণে পরে সেই সংসদ সদস্যের সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি হয়। তবে এরই মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের কিছু নেতা, প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং কিছু শিল্পপতির সঙ্গে তার সখ্য গড়ে উঠে। এছাড়া পরীমনিকে গ্ল্যামার জগতে নিয়ে আসেন রাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার নজরুল ইসলাম রাজ। সিনেমায় নাম লেখানোর আগে দীর্ঘদিন তার কাছেই থাকতেন পরী।
গ্ল্যামার জগতে আসার আগেই গ্রামে থাকাকালীন পরী বিয়ে করেছিলেন বলে জানা যায়। পরীমনির দ্বিতীয় স্বামী ফেরদৌস কবীর সৌরভ যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার বাসিন্দা। ২০১২ সালের এপ্রিলে বিয়ে হয়েছিল তাদের। ঢাকায় স্বামীর সঙ্গী থাকাকালীনই নাকি উচ্ছৃঙ্খল জীবন শুরু করেছিলেন পরী। ২০১৪ সাল পর্যন্ত তারা একসঙ্গে ছিলেন। এর আগে ভোলার ইসমাইল নামে এক ব্যক্তিক সঙ্গেও বিয়ের কথাও শোনা গিয়েছিল পরীর। ২০১০ সালে সেই বিয়ে হয়েছিল। তবে তা বেশি দিন টেকেনি। প্রথম স্বামীকে তালাক না দিয়েই নাকি একাধিক প্রেম ও বিয়েতে জড়িয়েছিলেন। বর্তমানে পরীমনির বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়েছে। তার পর থেকেই তাঁর ব্য়ক্তিগত জীবন নিয়ে মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। তাঁকে নিয়ে সত্য-অসত্য অনেক কিছুই রটছে।