
আবার নৈরাজ্য বাংলাদেশে। রাত থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে তাণ্ডব। একাধিক জায়গায় চলছে ভাঙচুর। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সংবাদপত্রের অফিস। এমনকী ভারতীয় দূতাবাসের বাইরেও চলছে বিক্ষোভ। উঠছে ভারত বিরোধী স্লোগান। আর এই সব কিছুই হচ্ছে একজনের মৃত্যুর জন্য। তিনি হলেন জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি।
কী হয় হাদির সঙ্গে?
১২ ডিসেম্বর ই-রিকশাতে চেপে যাচ্ছিলেন হাদি। এই সময়ই তাকে এক দুষ্কৃতী গুলি করে বলে অভিযোগ। প্রাথমিকভাবে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে পরিস্থিতি খারাপ হলে তাকে স্থানান্তরিত করা হয় এভারকেয়ার হসপিটালে। কিন্তু সেখানেও তার স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়নি। এরপর তাকে গত শনিবার সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয় উন্নত চিকিৎসার জন্য। কিন্তু তারপরও শেষ রক্ষা হল না।
বৃহস্পতিবার ৯.৪০ মিনিটে ইনকিলাব মঞ্চ হাদির মৃত্যুর খবর ঘোষণা করে। তারা লেখে, 'ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা মহান বিপ্লবী ওসমান হাদিকে শহিদ হিসাবে গ্রহণ করেছে আল্লাহ।' আর এই ঘোষণার পর থেকেই বাংলাদেশ নতুন করে উত্তপ্ত হতে শুরু করে দেয়।
কে এই হাদি?
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে চলা জুলাই আন্দোলনের সময় থেকে উত্থান চরমপন্থী হাদির। তিনি ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ছিলেন। পাশাপাশি ভারত বিরোধীতার জন্যও তিনি পরিচিত ছিলেন। তাঁর সংগঠনও দিনভর শুধু ভারত বিরোধী মন্তব্যই করে চলে। এটাই তাদের রাজনৈতিক দর্শন বলে মনে করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ।
জুলাই আন্দোলনের প্রথম সারির মুখ ছিলেন হাদি। তিনি আওয়ামী লিগকে সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করার পক্ষে ছিলেন। পাশাপাশি তার নিশানায় থাকত বিএনপি বা বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি। আর সেই হাদিরই ঢাকা ৮ কেন্দ্র থেকে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ নির্বাচন লড়ার কথা ছিল।
গ্রেটার বাংলাদেশের ম্যাপ সামনে আনেন
ভারত বিদ্বেষের জন্য দেশে প্রসিদ্ধ ছিলেন হাদি। তিনি একটা গ্রেটার বাংলাদেশের ম্যাপও তৈরি করেন। সেই মানচিত্রে ভারতের কিছু অংশকে বাংলাদেশের বলে দেখান হয়। আর সেই ম্যাপ তিনি ছড়িয়ে দিতে থাকেন নিজের অনুগামীদের মধ্যে।
কে শ্যুট করল হাদিকে?
যতদূর খবর, হাদিকে গুলি করার অভিযোগ রয়েছে ফয়সাল করিমের উপর। ইতিমধ্যেই পুলিশের পক্ষ থেকে ফয়সারের বাবা এবং মাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি তার স্ত্রী, বন্ধু এবং একাধিক সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ভারত এর পিছনে রয়েছে বলে অভিযোগ
বাংলাদেশে হাদির অনুগামীদের মধ্যে এখন ক্ষোভ চরমে। তারা এই মৃত্যুর জন্য ভারতেই দায়ী করছে। শুধু তাই নয়, খুন করার পর অভিযুক্ত ভারতে পালিয়েছে বলেও মনে করছে তারা। তাই তাদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, 'খুনি যদি ভারতে চলে যা, তাকে যে কোনওভাবে দেশে ফেরাতে হবে।'