২০২৪ সালের অগাস্ট মাসে শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়ার পর থেকে আওয়ামি লিগের কর্মীদের ব্য়াপক অত্যাচারের মুখে পড়তে হয়। বিএনপি ও জামাত হাসিনার দলের কর্মীদের উপর অত্যাচার করে বলে অভিযোগ। তারপর থেকেই সেই দেশে কার্যত নিষ্ক্রিয় পয়ে পড়ে মুজিবুর রহমানের দল। যদিও সাধারণ নির্বাচণের প্রাক্কালে ফের শক্তি বাড়াচ্ছে আওয়ামি লিগ। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেখানে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা। তার আগে জায়গায় জায়গায় মিছিল করছে আওয়ামির কর্মী। আর তা নিয়ে বেজায় চিন্তায় পুলিশ প্রশাসন।
বুধবার বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার উত্তরা, ফার্মগেট, তেজগাঁও এলাকায় মিছিল বের করেন আওয়ালি লিগ কর্মীরা। তাঁরা ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, গাজীপুর, গোপালগঞ্জ থেকে এসেছিলেন। তবে পথে সেই মিছিল আটকে দেয় পুলিশ। তাঁদের গ্রেফতার করা হয়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অ্যাডিশনাল কমিশনার নজরুল ইসলাম জানান, ঢাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে ২৪৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মোট গ্রেফতারির সংখ্যা ৫০০-রও বেশি।
কেন গ্রেফতার করা হয়েছে? সেই প্রসঙ্গে অ্যাডিশনাল কমিশনার জানান, গত কয়েক মাস ধরে ঢাকায় হঠাৎ হঠাৎ মিছিল করছেন আওয়ামি লিগ কর্মী ও সদস্যরা। তাঁদের মিছিলের কোনও অনুমতি ছিল না। সেজন্য গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্তদের থেকে ১৪টি ককটেল ও ৭টি ব্যানার উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মহম্মদ ইউনূস ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বাংলাদেশে আওয়ামি লিগের রাজনৈতিক কার্যকলার কার্যত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আওয়ামি লিগ কর্মী-সমর্থকদের সভা সমিতি করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। একাধিকবার মিছিল করার ফলে একাধিক পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করেছে প্রশাসন। সেখানে জামাতের মতো ইসলামিক সংগঠন প্রকাশ্যে মিছিল করেছে। ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না দিলে আন্দোলন চালাবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। অথচ তাদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি সরকার।
আওয়ামি লিগকে যেনতেন প্রকারেই যে প্রশাসন দমন করবে তা প্রকাশ্যে বলেও দেওয়া হয়েছে আধিকারিকদের তরফে। ডিএমপি কমিশনার শেখ মোহাম্মদ শাজ্জাত আলি যেমন গত সপ্তাহে প্রকাশ্যে বলেছেন, 'আমি ইতিমধ্যেই বৈঠকে স্পষ্ট করে দিয়েছি যদি কোনও এলাকায় আওয়ামি লিগের মিছিল হয় তাহলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর কোনও বিকল্প নেই।'
এদিকে বাংলাদেশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগে সরব আওয়ামি লিগের কর্মীরা। তাঁদের দাবি, পুলিশ একতরফাভাবে কাজ করছে। জামাত বা বিএনপি এরকম মিছিল করলেও তাদের কাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। আওয়ামি লিগের কেউ অভিযোগ জানাতে গেলেও পুলিশ তা নিচ্ছেও না। পুলিশের লক্ষ্য আওয়ামি লিগকে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না দেওয়া।