
ঢাকায় ফের প্রশ্নের মুখে আইনশৃঙ্খলা। শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পল্টন থানা এলাকার বিজয়নগরে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলিবিদ্ধ হলেন শেখ হাসিনার কট্টর বিরোধী হিসেবে পরিচিত শরিফ উসমান হাদি। তিনি ‘ইনকিলাব মঞ্চ’-এর মুখপাত্র এবং ঢাকা-৮ আসনের নির্দলীয় প্রার্থী। জুম্মার নমাজের পর রিকশায় করে হাইকোর্ট এলাকার দিকে যাচ্ছিলেন হাদি। সেই সময়ই পরিকল্পিত হামলার শিকার হন তিনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রিকশায় বসে থাকার সময় একটি মোটরবাইকে দু’জন এসে খুব কাছ থেকে হাদির মাথায় গুলি চালায়। ঘটনার পুরোটা মাত্র কয়েক সেকেন্ডে ঘটে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, দুই দুষ্কৃতীই হেলমেট পরা ছিল। হামলার সময় হাদির সঙ্গী ইনকিলাব মঞ্চের কর্মী মহম্মদ রফিও পিছনে অন্য একটি রিকশায় ছিলেন। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, শুক্রবার দুপুর ২টা ২৫ মিনিট নাগাদ এই ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাদিকে প্রথমে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকদের দাবি, গুলি ডান দিকের মাথা দিয়ে ঢুকে বাঁ দিক দিয়ে বেরিয়ে যায়। তবে মস্তিষ্কে গুলির একাধিক টুকরো আটকে রয়েছে। অবস্থার দ্রুত অবনতি হওয়ায় পরে তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি ভেন্টিলেশনে রয়েছেন। চিকিৎসকদের মতে, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। পরিস্থিতি অত্যন্ত সঙ্কটজনক। প্রয়োজনে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্তও নিতে হতে পারে।
প্রসঙ্গত, ইনকিলাব মঞ্চ সম্প্রতি অপসারিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল আওয়ামি লিগ ভাঙার দাবিতে সক্রিয় আন্দোলনে সামনের সারিতে ছিল। ২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলনের পর শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন। এর মধ্যেই বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়েছে। তার ঠিক পরেই ঢাকা-৮ আসনের প্রার্থীর উপর এই হামলা নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
ঘটনার নিন্দা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিএনপি, জামাত-এ-ইসলামি সহ একাধিক বিরোধী দল অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে। পুলিশ মনে করছে, এটি পেশাদার হামলা। গোটা দিনের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে হামলাকারীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।