
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে ফের তীব্র আক্রমণ করলেন শেখ হাসিনা। প্রশাসনে উপর তাঁর কোনও কন্ট্রোল নেই বলে দাবি হাসিনার। আর সেই সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশে কট্টরপন্থী আদর্শ ছড়িয়ে দিচ্ছে ইসলামিক মৌলবাদী গ্রুপ ও সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলি।
দ্য উইক ম্যাগাজিনে একটি প্রতিবেদন লিখেছেন আওয়ামি লিগের সর্বোচ্চ নেত্রী। সে লেখায় তিনি দাবি করেছেন, 'হিজব-উত-তহরির' মতো কট্টরপন্থী ইসলামিক গোষ্ঠী হিংসা ছড়াচ্ছে। সংখ্যালঘু, মহিলা এবং আদিবাসীদের উপর আক্রমণ চালাচ্ছে। ২০১৬ সালের হোলি আর্টিসন ক্যাফের হামলার মতো ছক কষা হচ্ছে।
শেখ হাসিনার কথায়, '২০১৬ সালের হোলি আর্টিসন ক্যাফের হামলার ধাঁচেই এই ধরনের কট্টরপন্থী ইসলামিক গোষ্ঠীগুলি আক্রমণের পরিকল্পনা করছে। আমরা দিনরাত পরিশ্রম করে বাংলাদেশ থেকে এদের নির্মূল করেছিলাম।'
২০২৪ সালের অগাস্ট মাসে সরকার পতনের পর থেকে ভারতেই থাকছেন শেখ হাসিনা। তাঁর কথায়, 'জনগণের সমর্থন ছাড়া প্রশাসনের মাথায় বসে রয়েছেন, এতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে না।' প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, 'বাংলাদেশ এখন খুন, ধর্ষণ, রাহাজানি, চুরি-ডাকাতির দেশে পরিণত হয়েছে। দোষীরা নির্ভয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে সেখানে। ইউনূস প্রশাসনের প্রথম সপ্তাহেই হিন্দু, বৌদ্ধ, ক্রিস্টান এবং আদিবাসীদের উপর হামলা হচ্ছে। এখনও আমরা বাংলাদেশের ভিন ধর্মের প্রার্থনাস্থল ভেঙে ফেলার অভিযোগ শুনছি।'
আওয়ামি লিগ নিষিদ্ধ করার জন্যও ইউনূসের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন শেখ হাসিনা। একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে অসাংবিধানিক চার্টার তৈরি করেছে বলেও অভিযোগ জানিয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। তিনি লিখেছেন, একটা সময়ে বাংলাদেশ ধর্মীয় সম্প্রীতির জন্য প্রশংসিত হত। এখনও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর সে দেশে দিনরাত হামলা হয়। মহিলারা সেখানে নিরাপদ নয়। তাঁদের দলের কর্মীরাও সুরক্ষিত নয়। হাসিনার বক্তব্য, 'যে অসাংবিধানিক চার্টার তৈরি করা হয়েছে, সেখানে বাংলাদেশের মানুষের স্বর প্রতিফলিত হয় না। একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার একটি রাজনৈতিক হাতিয়ার সেটি। আমরা যখন ক্ষমতায় এসেছিলাম দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভঙ্গুর ছিল। মানুষের মধ্যে কোনও আশা ছিল না। পরিকাঠামোতেও অনেক পিছিয়ে ছিলাম আমরা। তারপর দেশে স্বর্ণযুগ আসে। কিন্তু সেই স্বর্ণযুগের পর এখন দেশের প্রশাসনের সর্বোচ্চ পদে এমন একজন রয়েছেন যাঁর সঙ্গে জনগণের কোনও সমর্থন নেই। ৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ৩০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছে গিয়েছিল বাংলাদেশের GDP। বিশ্বের ৩৫টি সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক দেশের তালিকায় ছিলাম আমরা। এখন সেই বাংলাদেশের অর্ধেক মানুষ দারিদ্রসীমার নীচে।' তবে সকলকে ভোটদান করতে উৎসাহ দিয়েছেন শেখ হাসিনা।