শেখ হাসিনার আমলের অন্যতম বিতর্কিত ‘গোপন বন্দিশালা’ ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন করলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সরকারের অন্যান্য উচ্চপদস্থ উপদেষ্টারা।
কাদের সঙ্গে নিয়ে পরিদর্শন করলেন ইউনূস?
জানা গেছে, এই পরিদর্শনে ইউনূসের সঙ্গে ছিলেন—আইন, বিচার ও সংসদ সংক্রান্ত উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, গৃহ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁঞা। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এই পরিদর্শনের ছবি প্রকাশ করা হয়েছে।
‘আয়নাঘর’ কী এবং কেন বিতর্কিত?
‘আয়নাঘর’ শেখ হাসিনার আমলের একটি গোপন বন্দিশালা ছিল বলে অভিযোগ। কেউ সরকার বা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেই তাঁকে এখানে নিয়ে আসা হতো। অভিযোগ, বিনা বিচারে বন্দি রেখে দিনের পর দিন নির্মম অত্যাচার চালানো হতো। এমনকি, বহু মানুষ ‘গুম’ হয়ে গিয়েছেন—এমন তথ্য উঠে এসেছে।
কীভাবে সামনে এল ‘আয়নাঘর’-এর তথ্য?
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন এবং দেশ ছাড়েন। এরপর, ৮ আগস্ট মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। ক্ষমতায় আসার পর নতুন সরকার ‘গুম’ সংক্রান্ত বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয়। গঠিত হয় একটি বিশেষ তদন্ত কমিশন।
বুধবার ইউনূসের সঙ্গে ওই তদন্ত কমিশনের সদস্য এবং সাংবাদিকরাও ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন করেন। এই গোপন বন্দিশালা সম্পর্কে বহু ভয়ংকর তথ্য প্রকাশ্যে আসছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
আওয়ামী লীগের আমলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ
মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার অভিযোগ করেছে যে, শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশে মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের বিরোধিতাকারীদের গুম, খুন, নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। ‘আয়নাঘর’ নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলবে বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সরকার এই বন্দিশালার গোপন নথিপত্র ও নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের সাক্ষ্য সংগ্রহ করছে।
পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে?
এই পরিদর্শনের পর মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার ‘গুম’ ও বেআইনি বন্দির বিষয়ে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নিতে পারে। আওয়ামী লীগের আমলে যারা এই মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাঁদের বিচারের মুখোমুখি আনার পরিকল্পনা চলছে।