Advertisement

Bangladesh Violence : হিন্দুদের উপর হিংসার অভিযোগের মধ্যেই ISKCON-কে নিষিদ্ধ করার চক্রান্ত বাংলাদেশে?

অভিযোগ, মৌলবাদীরা প্রকাশ্যে ইসকন নিষিদ্ধ করার এবং ইসকন অনুসারীদের হত্যার স্লোগান দিচ্ছে। ফেসবুকে তা নিয়ে অনেকে পোস্টও করছে। তবে এসবের  বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টে যে ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে তিনি শান্তির বার্তা দিচ্ছেন। এমত অবস্থায় পুরো বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে ভারত সরকার তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশকে কড়া বার্তা দেয়।

Bangladesh
Aajtak Bangla
  • দিল্লি ও ঢাকা ,
  • 27 Nov 2024,
  • अपडेटेड 11:54 PM IST
  • চিন্ময় দাসের গ্রেফতারির পর থেকে বাংলাদেশে বাড়ছে উদ্বেগ
  • সেই দেশের সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে অনেকে

বাংলাদেশে বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদ। শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর থেকেই সেখানে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার বাড়তে শুরু করে। তা নিয়ে প্রতিবাদে পথে নামে হিন্দু সংগঠনগুলো। তবে তাদের নেতা সন্ন্যাসী চিন্ময় দাসকে গ্রেফতার করে মহম্মদ ইউনুসের প্রশাসন। মঙ্গলবার চট্টগ্রাম আদালত তাঁর জামিনের আবেদন নাকচ করে দেয়। তারপর থেকে সেখানকার পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক। 

হিন্দু বা সংখ্যালঘুদের উপর এই অত্যাচার বাড়ছে শেখ হাসিনার গদিচ্যুত হওয়ার পর থেকেই, এমনটাই অভিযোগ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। তাঁদের আরও দাবি, হিন্দুদের ধর্মীয় স্থানগুলোকে বেছে বেছে টার্গেট করা হচ্ছে। বাংলাদেশে গত কয়েক মাসে হিন্দু-বিরোধী প্রচার বেড়েছে। চিন্ময় দাসের গ্রেফতারির পর বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় কুমার রায় বলেন, 'বাংলাদেশে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।' 

উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে সেই দেশের অ্যাটর্নি জেনারেল সংবিধান থেকে 'ধর্মনিরপেক্ষ' শব্দটি বাদ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এর থেকেই পরিষ্কার, বাংলাদেশে হিন্দুদের নিয়ে কী মনোভাব দেখাচ্ছে সেখানকার সরকার। এদিকে আজ শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেলকে ইসকন নিয়ে সরকারের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে বলে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়। আদালত সাফ জানিয়েছে, বাংলাদেশের রাস্তায় যে ছবি দেখা যাচ্ছে, তা যে কোনও গণতান্ত্রিক দেশের জন্য সুখের ছবি নয়। 

অভিযোগ, মৌলবাদীরা প্রকাশ্যে ইসকন নিষিদ্ধ করার এবং ইসকন অনুসারীদের হত্যার স্লোগান দিচ্ছে। ফেসবুকে তা নিয়ে অনেকে পোস্টও করছে। তবে এসবের  বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টে যে ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে তিনি শান্তির বার্তা দিচ্ছেন। এমত অবস্থায় পুরো বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে ভারত সরকার তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশকে কড়া বার্তা দেয়। বিদেশ মন্ত্রক লেখে, 'যারা হিন্দুসহ অন্য সংখ্যালঘুদের উপর হামলা করে, তারা অবাধে ঘুরছে।' 

Advertisement

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার এবং পরবর্তীতে জামিন নামঞ্জুরের ঘটনায় ভারত উদ্বেগও প্রকাশ করে। সাফ জানিয়ে দেয়, বাংলাদেশ সরকারের উচিত শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের পাশাপাশি সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। বাংলাদেশ সরকারের কর্মকাণ্ডে ভারতেও ক্ষোভ বাড়ছে। কলকাতায় বাংলাদেশকাণ্ডের  বিরুদ্ধে মিছিল বের করা হয়। অংশগ্রহণকারীদের দাবি ছিল, হিন্দুদের উপর অত্যাচার বন্ধ করতে হবে।

রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বুধবার বলেন, প্রতিবেশী দেশটির সরকার বিশিষ্ট হিন্দু নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত ভারত সরকারের উচিত বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করা। সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার বন্ধে পদক্ষেপ না নেওয়া পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি সাময়িকভাবে স্থগিত করা উচিত বলেও মত দেন তিনি। বলেন, 'চিন্ময় কৃষ্ণ দাস কোনও অন্যায় করেননি। আমরা তাঁর অবিলম্বে মুক্তি চাই। মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এটা কাম্য নয়।' এদিন বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের অফিসে স্মারকলিপিও জমা দেয়।

তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেন। তিনি বলেন, 'বিষয়টা কেন্দ্রের। জনগণ কেন্দ্রীয় সরকারকে তাদের ম্যান্ডেট দিয়েছে। দল হিসাবে, তৃণমূল কংগ্রেস কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি কেবল বলতে পারি বাংলাদেশে যা কিছু ঘটেছে তা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।' তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায়ও এই হামলার নিন্দা করেন। বলেন,  'আমি এর নিন্দা জানাই। এই ব্যাপারে সরকারের সক্রিয় হস্তক্ষেপ করা উচিত।' 

কংগ্রেস নেতা গৌরব গগৈ বলেন, তাঁর দল বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। এক  প্রশ্নের উত্তরে জানান, 'বাংলাদেশে যা ঘটছে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। কয়েকদিন আগে একজন ইসকন সন্ন্যাসীকে গ্রেফতার করা হয়। সমর্থকদের উপরও হামলা করা হয়। এখন প্রধানমন্ত্রী মোদী কোথায়?'

এদিকে বুধবার বাংলাদেশের কোর্টের শুনানিতে ইসকনের উপর নিষেধাজ্ঞা একটি রিট পিটিশন করা হয়। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের আন্তর্জাতিক সভাপতি অলোক কুমার তা নিয়ে বলেন, 'এটা দুঃখজনক যে বাংলাদেশ এখন মৌলবাদীদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।  সেখানে নাগরিকদের অধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। ধর্মীয় স্বাধীনতাকে দমন করা হচ্ছে ইসকনকে মৌলবাদী বলে অভিহিত করে।' 

বাংলাদেশের ঘটনার নিন্দা করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং। তাঁর মতে, বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর হামলার মাধ্যমে বোঝা যায়, সেই দেশের অন্তর্বর্তী সরকার কারা চালাচ্ছে। সেখানে যেভাবে হামলা চালানো হচ্ছে তা মানবতাবিরোধী। এ ব্যাপারে রাষ্ট্রসংঘের হস্তক্ষেপ করা উচিত।

 

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement