শুভমিতা একজন স্বতন্ত্র সঙ্গীতশিল্পী, যার পরিবারে রয়েছে নানাবিধ অশান্তি। এদিকে তাঁর জীবনের একমাত্র লক্ষ্য একজন প্রতিষ্ঠিত গায়িকা হওয়া। এরই মাঝে দাঁতের চিকিৎসক মৈনাকের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক তৈরি হয়। শুভমিতা এবং মৈনাক নানা প্রত্যাখ্যান, মতবিরোধের মধ্য দিয়ে যাওয়ার পর, শেষমেশ তাঁদের জীবনের আকাঙ্ক্ষাগুলি উপলব্ধি করতে ও তা অর্জন করতে পারে। ধীরে ধীরে এক শুভ সূচনা হয়...
এভাবেই গল্প এগোয় অভিজিৎ চৌধুরীর পরিচালনায় তৈরি নতুন ওয়েব সিরিজ 'শুভারম্ভ' (Subharambha)। মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন জেসমিন রায়, সত্যম ভট্টাচার্য ও দিব্যাশা দাস। স্টোরিবোর্ড প্রোডাকশন হাইজ (StoriBoat Production House) ও হইচই (Hoichoi) - যৌথ প্রযোজনায় তৈরি এই সিরিজ ইতিমধ্যে স্ট্রিমিং হচ্ছে। আজতক বাংলার সঙ্গে আড্ডা দিলেন শুভমিতা ওরফে জেসমিন (Jasmine Roy)।
প্রশ্ন: ওটিটি প্ল্যাটফর্মে প্রথম কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন?
জেসমিন: প্রথম ওয়েব সিরিজে কাজ করলেও যেহেতু এসভিএফ-র সঙ্গে আগে অনেকগুলো কাজ করেছি, তাই টিমের বেশীরভাগ লোকই চেনা-পরিচিত ছিল। স্টোরিবোর্ড প্রোডাকশনের কিছু মানুষের সঙ্গে প্রথম কাজ করলাম। কিন্তু সব মিলিয়ে খুব ভালই অভিজ্ঞতা হয়েছে।
প্রশ্ন: টেলিভিশন না ওয়েব সিরিজ কোনটা বেশি পছন্দের এখন?
জেসমিন: আমার কলকাতায় আসা অভিনয়ের সূত্রে। আমি অভিনয় করতেই ভালবাসি। সেটা ক্যামিও বা লিড যাই রোল হোক না কেন। ছোট পর্দা, বড় পর্দা বা ওয়েব সিরিজ যেটাতেই আমি ভাল অফার পাবো, সেটাই করবো।
প্রশ্ন: সিরিজে আপনার চরিত্র শুভমিতা একজন গায়িকা। গানই ওঁর ধ্যান-জ্ঞান... আর জেসমিনের?
জেসমিন: আমার জীবনে গান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমি গান ভীষণ ভালোবাসি। যেহেতু আমার মা খুব ভাল গান করেন, তাই ছোট থেকে সারাদিনই গান চলতো বাড়িতে। তাই একটা গানের পরিবেশেই বড় হয়েছি।
প্রশ্ন: তাহলে কী আপনিও গান করেন রিয়েল লাইফে?
জেসমিন: না না... আমি একদম বার্থরুম সিঙ্গার (জোড়ে হেসে)! তবে সারাক্ষণ গান শুনি।
প্রশ্ন: শুভমিতার মতো জেসমিনের কেরিয়ারের শুরুতেও কী এতটা স্ট্রাগল ছিল?
জেসমিন: স্ট্রাগল তো এখনও করতে হচ্ছে। তবে এতদিনের স্ট্রাগলের ফল কিছুটা পেয়েছি ওয়েব সিরিজটা করে, এটাই শান্তি। ভাটপাড়া থেকে এখানে এসে অভিনয় করতে পারবো তো আগে ভাবিনি। কলকাতা থেকে ট্রেনে প্রায় ২.৩০ মিনিটের জার্নি। এরপর অডিশন দিয়ে সিলেক্ট হয়ে যাই। তারপর থেকে ছোট-বড় যাই হোক না কেন, কাজের খুব একটা গ্যাপ আমার হয়নি।
প্রশ্ন: সিরিজের মতো রিয়েল লাইফেও কি আপনি বয়ফ্রেন্ডকে ডমিনেট করেন?
জেসমিন: আমার মনে হয় মেয়েরা একটু ডমিনেটিং হয় বোধ হয়। তবে আমি বরাবরই ঠিককে ঠিক, ভুলকে ভুল বলি। সে সম্পর্কে আমার যেই হোক না কেন, আমি মুখের ওপর বলে দি। একটু স্ট্রেট ফরওয়ার্ড বলতে পারেন।
প্রশ্ন: 'শুভারম্ভ'-র জন্য বিশেষ কোনও হোম ওয়ার্ক করতে হয়েছিল?
জেসমিন: শুভমিতা এবং জেসমিন দুজনে একেবারে আলাদা। ওখানে যে পরিস্থিতি দেখানো হয়েছে, আমার জীবনে তা একেবারে উল্টো। পরিবারের সকলে খুব সাপোর্ট করেছে আমায় বরাবর। তবে একটা ঘটনা শেয়ার করতে পারি। যেহেতু চরিত্রটা একেবারে আমার বিপরীতধর্মী, তাই চরিত্রে ঢুকতে গিয়ে আমি আমার বাড়ির লোকেদের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। শ্যুটিং শুরু হওয়ার একদিন আগে আমি বাড়িতে জানিয়েছিলাম যে আমার সঙ্গে কেউ যোগাযোগ রেখো না। যেদিন শ্যুটিং শেষ হয়, বাড়ি ফেরার সময়ে গাড়িতে উঠে, আটদিন পরে আমি মায়ের সঙ্গে কথা বলি!
প্রশ্ন: সেটের কোন মজার ঘটনা মনে পরে?
জেসমিন: একটা ইমোশনাল সিন ছিল যেটায় মা অসুস্থ। কাট হওয়ার পরও আমি ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে প্রায় ১৫ মিনিট ধরে কেঁদেছি। তখন আমাদের পরিচালক অভিজিৎ দা, সত্যম, দিব্যাশা এসে আমায় থামায়...