হইচই ওটিটি প্ল্যাটফর্মে দিতিপ্রিয়া-সুহোত্রর ওয়েব সিরিজ ডাকঘর দর্শকদের কাছে দারুণভাবে জনপ্রিয়তা পেলেও এই সিরিজ নিয়ে বিতর্ক এখনও বর্তমান। এই ওয়েব সিরিজের বিতর্ক নিয়ে প্রথমবার সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হন সুদীপ্তা চক্রবর্তী। আসলে এই সিরিজের পরিচালকের দায়িত্ব গত তিনবছর ধরে সামলেছেন অভিষেক সাহা। কিন্তু তিনবছর পর এই সিরিজ থেকে একপ্রকার সরে যেতে বাধ্য হন অভিষেক। অথচ এই সিরিজের অধিকাংশ দৃশ্যের শ্য়ুটিং ততদিনে করে ফেলেছিলেন অভিষেক।
এবার মুখ খুললেন অভিষেক সাহা
সুদীপ্তার পরই অরিত্র দত্ত বণিক তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায় এক ভিডিওর মাধ্যমে এই বিতর্কে নাম জড়ানো হয় সিনোমাটোগ্রাফার মৃণ্ময় নন্দীর। মৃন্ময় নিজেও এই ডাকঘর বিতর্ক নিয়ে মুখ খোলেন। তিনি জানিয়েছিলেন যে পরিচালক অভিষেক সাহার সঙ্গে তিনিও কাজ করেছিলেন। কিন্তু তাঁকেও সরিয়ে দেওয়া হয় এমনকী সিনোমাটোগ্রাফার হিসাবে তাঁর নামও ডাকঘর ওয়েব সিরিজে নেই। মৃন্ময় নন্দী পাননি তাঁর প্রাপ্য পারিশ্রমিকও। তবে এতদিন যাবৎ মুখে কুলুপ এঁটে ছিলেন পরিচালক অভিষেক। কিন্তু শুক্রবার অভিষেক সাহা তাঁর ফেসবুক পেজে এই নিয়ে মুখ খুললেন।
কী পোস্ট করলেন অভিষেক সাহা
সকলকে নমস্কার জানিয়ে কথা শুরু করেন পরিচালক। অভিষেক লেখেন, 'বন্ধু, শুভাকাঙ্খী ও মিডিয়ার সাংবাদিক দের অনুরোধে প্রথম এবং শেষ বারের জন্য কয়েকটা কথা..'ডাকঘর' নিয়ে। আমার নামে অভিযোগ -- আমি চুপ কেন? আমাকে যাঁরা চেনেন, তাঁরা জানেন, আমি কথা কমই বলি, বিশ্বাস করি আমার কাজই কথা বলবে। লেখালিখির ব্যাপারেও অনীহা আছে। তবে জীবন দেখেছি অনেক। তাই আমার কাজ দিয়ে সহজ সরল জীবনের কথাই বলি বারবার। আমার যে কোনো কাজে দর্শক তার পরিচয় পেয়েছেন বা আজও পাচ্ছেন। ঝগড়াঝাঁটি, কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি অপছন্দ করি। অত্যন্ত দুঃখজনক এবং অপমানজনক এই ঘটনা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে মুভ অন করতে চেয়েছিলাম, তাই চুপ ছিলাম। আজকের পর আবার চুপই থাকতে চাই।' এরপর পরিচালক জানান যে তাঁর বিরুদ্ধে লুকিয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছিল। এ প্রসঙ্গে পরিচালক আরও বলেন, 'অভিযোগ - আমি লুকিয়ে পড়েছি। না, দু তিনদিন কলকাতার বাইরে ছিলাম। ফোনে নেটওয়ার্ক বা ইন্টারনেট ভালো ছিল না। আপাতত শহরেই আছি, নিজের বাড়িতেই আছি। Social media-য় নিয়মিত নই। যাঁরা আমার social media follow করেন, তাঁরা জানেন। অনর্গল অনেক কথা বলতে না চাওয়ার মানে লুকিয়ে পড়া নয়। অভিযোগ - ১৪ দিন শ্যুটিং এর সুযোগ পেয়েও আমি গল্প দাঁড় করাতে পারিনি।’ কী কঠিন পরিস্থিতিতে তিনি শ্যুট করেছিলেন, সেপ্রসঙ্গ তুলে ধরেন তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা একাধিক অভিযোগ নিয়েও জবাব দেন। দীর্ঘ ফেসবুক পোস্টে পরিচালক তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ নিয়ে সরব হন।
আরও পড়ুন: Dakghor web series: মুক্তি পেল দিতিপ্রিয়া-সুহোত্রর ডাকঘর, বকেয়া টাকার দাবিতে সরব সিরিজের ডিওপি
আরও পড়ুন: Dakghor series promotion: দিতিপ্রিয়া-সুহোত্র হঠাত্ শহরজুড়ে চিঠি বিলি শুরু করলেন, কেস কী?
ডাকঘর সিরিজ থেকে সরে আসতে বাধ্য হন পরিচালক
পরিচালকের এই পোস্টে এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে ডাকঘর সিরিজটি তাঁর কাছে সন্তানসম ছিল। তিনি লেখেন যে নিজের সন্তানকে ছিনিয়ে নিলে যে কষ্টটা হয়, সেটাই তাঁর হয়েছিল। তিনি এও জানান যে আত্মসম্মানের খাতিরে তিনি চুপ করে যান এবং এই চুপ করে যাওয়াকে কি পালিয়ে যাওয়া বলে কিনা তাঁর জানা নেই। এই সিরিজের প্রযোজকের উদ্দেশ্যেও অভিষেক সাহা জানান যে তিনিও হয়ত বাধ্য হয়েছিলেন এই কাজে সায় দিতে। তবে তাঁর আশা প্রযোজক হয়ত সিনোমাটোগ্রাফার মৃন্ময় নন্দীর টাকা ফেরৎ দিয়ে দেবেন।
আরও পড়ুন: Dakghor Trailer : একটা চিঠি বদলে দিল সুহোত্র-দিতিপ্রিয়ার জীবন, সামনে এল 'ডাকঘর'-এর ট্রেলার
স্বামী অভিষেক সাহার পোস্ট শেয়ার করেন সুদীপ্তা
পরিচালক স্বামী অভিষেক সাহার পোস্ট শেয়ার করেন সুদীপ্তা চক্রবর্তী। লেখেন, ‘অবশেষে তিনি কথা বললেন।’ পরিচালক বন্ধুর পোস্টটি শেয়ার করে সিনোমাটোগ্রাফার মৃণ্ময় নন্দী লেখেন, ‘প্রেস-মিডিয়া বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছে। কিন্তু তাতে কি? ইন্ডাস্ট্রি…তোমরা কি বোঝো ইন্ডাস্ট্রির? কত মানুষকে বাঁচিয়ে রেখেছে জানো? কয়েকটা নন-সেন্স আছে, অযথা প্রশ্ন তোলে, good for nothing…পিষে মেরে ফেল অপদার্থগুলোকে।’ প্রসঙ্গত, অভিষেক সাহার পোস্ট থেকে এটা জানা যায় যে ডাকঘর সিরিজের ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ দৃশ্য পরিচালকের নির্দেশনায় মৃন্ময় নন্দীরই শ্যুট করা। অথচ তাঁদের শ্যুট করা দৃশ্য যে জঘন্য এই অপবাদও শুনতে হয়েছে।