শিশুদের পোাকামাকড় সম্পর্কে সচেতন করতে ও সে সম্পর্কে আগ্রহী করতে অভিনব উদ্যোগ নিল শিলিগুড়ির ব্রাইট অ্যাকাডেমি স্কুল। পালন করলো পতঙ্গ দিবস। স্কুলের নিজস্ব ভাবনা শিশুদের মনে আগ্রহ তৈরি করতে সক্ষম হলো।
পোকামাকড় হলো অমেরুদণ্ডী প্রাণী। যার দেহ, মাথা, বক্ষ এবং পেটে বিভক্ত। তিন জোড়া পা এবং দুই জোড়া ডানা থাকে এদের। যা জানতে পেরে আবিষ্কারের আনন্দে মেতে উঠলো শিশুরা। শুক্রবার স্কুলের তরফ থেকে তাই ক্য়ালেন্ডারের বাইরে নিজস্ব পোকামাকড় দিবস উদযাপন করে।
বাচ্চারা লাল ও নীল রঙে হাত ডুবিয়ে একটি প্রজাপতি রং করে। শিক্ষার্থীরা লেডিবাগ বা গুবরে পোকা, আরশোলা, প্রজাপতি, পিঁপড়ে, মাকড়সা ইত্যাদি পোকার বিভিন্ন পোশাক পড়ে। যা গোটা কম্পিউটার মনিটরের স্ক্রিনকেও রঙিন করে তোলে।
পোকামাকড়ের সাজ সেই সঙ্গে গান অনুষ্ঠানটিকে একঘেঁয়েমি থেকে মুক্তি দেয়। গানের সঙ্গে পতঙ্গের সাজে শিশুরা নাচে অংশ নেয়। যা শিশুদের অনুষ্ঠানের সঙ্গে একাত্ম হতে সাহায্য করে।
বাচ্চাদের এরপর নিজেরা যে পতঙ্গ সোজেছিল, তার সম্পর্কে কিছু বর্ণনা দিতে হয়। অন্য বিভিন্ন পোকামাকড়ের নাম শণাক্ত করতে হয়। অনেকেই সঠিক উত্তর দিয়েছেন। যাঁরা পারেনি, তাঁরাও পতঙ্গ সম্পর্কে ওয়াকিবলহাল হয়েছে। শিশুরা সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি উপভোগ করেছিল।
শিলিগুড়ি শাখার পাশাপাশি স্কুলের অন্যান্য শাখায়ও পোকামাকড় দিবস উদযাপিত হয়। একইভাবে ছাত্রছাত্রীরা মনের আনন্দে জীব বিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্য়াপ্টার সহজেই করায়ত্ত করতে সক্ষম হয়।
স্কুলের জলপাইগুড়ি শাখায় সাদা পর্দার ব্যাকড্রপ তৈরি করা হয়। যেখানে বেশ কয়েকটি জীবন্ত আকারের পোকামাকড় একটি ব্যানারের সাথে "ক্রাইপি ক্রলি" দিয়ে আটকানো হয়েছিল। যাতে খেলার সঙ্গে বাস্তবের পোাকামাকড়ের সম্যক ধারণা হয়।
এগুলি ছাড়াও, শিক্ষার্থীদের আরও ভাল ধারণা দেওয়ার জন্য কোথাও সামনে একটি টবে গাছ স্থাপন করা হয়েছিল। যার উপরে একটি শুঁয়োপোকা এবং মৌমাছি ছিল। একইভাবে খালপাড়া শাখায় কার্টুনের চিত্র, পোকামাকড় এবং গাছ দ্বারা সাজানো হয়েছিল।
স্কুলের তরফে কর্ণধার সন্দীপ ঘোষাল জানিয়েছেন, প্রতি বছরই নানা অ্যাক্টিভিটির মধ্য দিয়ে শিক্ষাদানের চেষ্টা করা হয়। তার মধ্য়ে এবার শিশুদের পতঙ্গ সম্পর্কে ধারণা দিতে এই ধরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। যা ফলপ্রসূ হওয়ায় আমরা খুশি। পাশাপাশি শিশুরাও এটি উপভোগ করেছে।
লাল, নীল, হলু, সবুজ, বেগুনি, গোলাপী বিভিন্ন রঙের পতঙ্গে সেজে শিশুরা যখন নাচে গানে অংশ নেয় তা একটা বিশেষ দেখার মতো দ্রষ্টব্যে পরিণত হয়। এরকম অনুষ্ঠান আরও বেশি করে স্কুলের কাছে দাবি করেছেন অভিভাবকরা। পাশাপাশি অন্যান্য় স্কুলেও এমন উদ্যোগ বেশি করতে হবে বলে দাবিও ওঠে।
পতঙ্গ দিবস একটি অভিনব ভাবনা। তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই এই অনুষ্ঠান সফল হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে সকলেই গৃহবন্দি। কবে স্কুল খুলবে কেউ জানে না। ফলে শিক্ষা তো বটেই তার সঙ্গে এমন অ্যাক্টিভিটি শিশুমনকে সতেজ রাখার জন্য প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরাও।